গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত এক আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। হামলাকারীদের বাধা দিতে গিয়ে আহত হন গোবিন্দগঞ্জ থানার দুই সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই)। হামলাকারীরা তাঁদের একটি দোকানে আটকে রেখে ফেসবুক লাইভও করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে দুই এএসআইকে উদ্ধার এবং ছিনিয়ে নেওয়া আসামিসহ আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম রয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বেই আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

রোববার রাত ৯টার দিকে উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের কোমরপুর চৌরাস্তায় আসামি ছিনতাইচেষ্টার এ ঘটনা ঘটে। রাতেই গোবিন্দগঞ্জ থানার এসআই অনিমেষ চন্দ্র সরকার আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, একটি মামলার পরোয়ানাভুক্ত আসামি দরবস্ত ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের শামিম ইসলামকে গ্রেপ্তারে রোববার রাতে অভিযানে যায় পুলিশ। নেতৃত্বে ছিলেন গোবিন্দগঞ্জ থানার দুই এএসআই মাহাবুবুল আলম ও রুবেল হোসেন। তাঁরা শামিমকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথে কোমরপুর চৌরাস্তায় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নজরুলের নেতৃত্বে একদল লোক হামলা চালিয়ে হাতকড়াসহ শামিমকে ছিনিয়ে নেয়। বাধা দিতে গিয়ে আহত হন এএসআই মাহাবুব ও রুবেল। এক পর্যায়ে হামলাকারীরা আহত দুই এএসআইকে একটি দোকানে আটকে রেখে ফেসবুকে লাইভ করে। সেখানে তারা দাবি করে, পুলিশ অন্যায়ভাবে শামিমকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে তাকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।

খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বুলবুল ইসলামের নেতৃত্বে রাত ১০টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই এএসআইকে উদ্ধার করে। এ সময় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নজরুলসহ দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিনিয়ে নেওয়া আসামি শামিম, শফিকুল ইসলাম, মো. মোস্তফা, মো. মুহিত ও রেজাউল করিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্থানীয়রা জানান, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে জুয়া, মাদকের কারবারসহ জিনের বাদশা সেজে প্রতারণার অভিযোগ আছে। এ ছাড়া এলাকায় তারা নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত।

পরিদর্শক (তদন্ত) বুলবুল ইসলাম বলেন, ‘সংঘবদ্ধ দলটি হাতকড়াসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি ছিনতাই করেছিল। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলার মামলা করা হয়েছে। মামলার অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’

এদিকে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নজরুলকে গ্রেপ্তার ও মামলার বিষয়টি স্বীকার করেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ প্রধান। তিনি জানান, নজরুলের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।