নেদারল্যান্ডসের রাজধানীর আমস্টারডাম থেকে ডাকযোগে ঢাকায় আসা একটি সন্দেহজনক পার্সেল নিয়ে শুরু হয় নাটকীয়তা। দীর্ঘ সময় প্রাপক পার্সেল গ্রহণ করতে না যাওয়ায় সন্দেহ বাড়তে থাকে ডাক বিভাগের। পরে তারা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে (ডিএনসি) বিষয়টি জানায়। শুরু হয় গোয়েন্দা নজরদারি। এক পর্যায়ে মাদকের চালান গ্রহণ করতে আসা আজরফ আহমেদ ওজিকে এলএসডিসহ গ্রেপ্তার করে ডিএনসি। এ ঘটনা সপ্তাহ খানেক আগের। পরে আজরফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ফারদিন খানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় অভিযান চালানো হয় শেরাবাংলা নগরে শিক্ষামন্ত্রীর এপিএস মফিজুর রহমানের বাসায়। সেখান থেকে তাঁর শ্যালক ইব্রাহিম কিবরিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিএনসির সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ রিফাত হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ডাক বিভাগের গুলশান শাখা থেকে মাদকের চালান নিতে যাওয়া আজরফকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, এই চালানের মালিক ফারদিন। তখন কৌশলে তাঁকেও ডেকে এনে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের দেওয়া তথ্যে ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিএনসি সূত্র জানায়, মাদক উদ্ধারের ঘটনায় মঙ্গলবার ইব্রাহিমের বন্ধু ফারদিনকে আসামি করে পল্টন থানায় মামলা হয়েছে। ওই মামলায় ফারদিন এখন কারাগারে। অন্যদিকে ইব্রাহিম ও আজরফের কাছ থেকে গাঁজা পাওয়া গেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁদের এক দিন করে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তাঁরা তিনজনই এলএসডিতে আসক্ত। তাঁদের মধ্যে ফারদিন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। আর আজরফ কণ্ঠশিল্পী। তাঁর বাবা দেশের একজন নামি ব্যান্ডশিল্পী বলে জানা গেছে। এই দু’জনের মাধ্যমে এলএসডির কারবার চালিয়ে আসছিলেন ইব্রাহিম। তিনি শেরবাংলা নগরে ভগ্নিপতি মফিজুরের সরকারি বাসায় থাকতেন।

এদিকে এলএসডি ও গাঁজা উদ্ধার নিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার মুখে কুলুপ এঁটে ছিলেন ডিএনসির কর্মকর্তারা। একজন কর্মকর্তা সংক্ষেপে বিষয়টি জানালেও বিস্তারিত বলতে রাজি হননি। পরে বারবার কল করে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। অন্য কর্মকর্তাদেরও ফোনে পাওয়া যায়নি।

তবে দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, মন্ত্রীর পিএসের শ্যালক ইব্রাহীম ও শিল্পী আজরফকে ছাড়িয়ে নিতে প্রভাবশালী মহল থেকে জোর তদবির ছিল। এ কারণে তাঁদের গাঁজাসহ গ্রেপ্তার দেখিয়ে একদিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।