ইতালির সবচেয়ে পুরোনো ক্লাব জেনোয়া, যাদের ডাকনাম দ্য ওল্ড ফুল। ১২৯ বছরের পথচলায় যেখানে সবচেয়ে বেশি ৫৬ জন ভিনদেশি খেলোয়াড় আর্জেন্টিনার। তাদের সেরা গোলদাতাদের কাতারেও রয়েছে আকাশি-সাদার জয়জয়কার। আক্রমণভাগ মাতিয়ে রেকর্ডবুকে নাম লিখে গেছেন দিয়েগো মিলিতো-পালাসিওরা। এর পর তো সাত বছর একাধারে ইতালির ক্লাব ফুটবল শাসন করেন দিয়েগো ম্যারাডোনা। ন্যাপোলিতে যাওয়ার পর দেশটির ফুটবলপ্রেমীদের মনের মণিকোঠায় অল্প দিনে স্থান করে নেন এই মহানায়ক।

গেল এক দশকে ইতালিকে রীতিমতো সেকেন্ড হোম বানিয়ে ফেলেন আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা। ডি মারিয়া, ইকার্দি, দিবালা আর লাওতারোদের জয়ধ্বনি এখনও শুনছে ফুটবলবিশ্ব। এই তো এবার উয়েফার সেরা তিন প্রতিযোগিতা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ইউরোপা লিগ ও কনফারেন্স লিগের ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করা তিনটি ক্লাবই ইতালির। যাদের দলেও কিনা আর্জেন্টাইনদের নৈপুণ্য চলে নিয়মিত।

ইতালি থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে যাওয়া ইন্টারের নায়ক লাওতারো মার্টিনেজ। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে চলমান মৌসুমে তিনিই ক্লাবটির সেরা গোলদাতা। কেবল এই মৌসুম নয়। ইন্টারের ইতিহাস বলছে, ভিনদেশি কোটায় আজ পর্যন্ত ৫০ জন আর্জেন্টাইন খেলোয়াড় তাদের জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছেন।

শুধু তাই নয়, গত এক যুগে যত খেলোয়াড় তাদের হয়ে দ্যুতি ছড়িয়েছেন, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গোলও এক আর্জেন্টাইনের। নাম তাঁর ইকার্দি। ক্লাবটির হয়ে মোট ১৩৩ গোল করেছেন তিনি। রেকর্ডের পাতায় রয়েছে আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের নাম। বেশি বয়সী হিসেবে সাবেক আর্জেন্টাইন জেনেত্তি ইন্টারের হয়ে গোল করেছিলেন, যা এখনও কেউ টপকাতে পারেনি।

এর পর ইউরোপা লিগের ফাইনালে ওঠা রোমায়ও আর্জেন্টাইন দাপট কম নয়। দলটির গোলমুখের প্রাণভোমরা এখন পাওলো দিবালা। এ মৌসুমে তাদের হয়ে সবচেয়ে বেশি ১৫ গোল করেছেন তিনি। ক্লাবটিতে আজ পর্যন্ত ৩৮ জন আর্জেন্টাইন খেলোয়াড়ের পা পড়েছে। যাঁদের সম্মিলিত গোল সংখ্যা ৫৩৮টি।

কনফারেন্স লিগে শিরোপার জন্য লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেওয়া ফিওরেন্তিনায় রয়েছে আর্জেন্টাইন ঝলক। যেখানে আক্রমণভাগের দায়িত্বে আছেন গঞ্জালেস। আর ক্লাবটির সর্বকালের সেরা গোলদাতা তো আর্জেন্টিনার গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতা। যিনি কিনা ফিওরেন্তিনার হয়ে করেন ২০৩ গোল।

এদিকে উয়েফার এই তিনটি প্রতিযোগিতার ফাইনালে ওঠা ছয় ক্লাবের হয়ে বেশ কয়েকজন আর্জেন্টাইন খেলোয়াড় শিরোপার জন্য লড়বেন। যেখানে কোনো কোনো দলে একাধিক আর্জেন্টাইন আবার একে অপরের প্রতিপক্ষও। যেমন ইন্টারের লাওতারো মুখোমুখি হবেন সিটির আলভারেজের। আবার সেভিয়ার অ্যাকুনা-মন্টিয়েলরা নামবেন রোমার দিবালার বিপক্ষে। আর ফিওরেন্তিনার গঞ্জালেস ৯০ মিনিটের জন্য ভুলে যাবেন ওয়েস্টহামের স্বদেশি সতীর্থ লানজিনিকে।