
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান জামিন পেয়েছেন। দেশটির সন্ত্রাসবিরোধী আদালত (এটিসি) মঙ্গলবার আট মামলায় আগামী ৮ জুন পর্যন্ত তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছেন।
আলোচিত আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতে পাকিস্তানের দুর্নীতি দমন সংস্থা ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরোর (ন্যাব) সদরদপ্তরে হাজির হয়েছিলেন ইমরান। সেখানে তিনি প্রায় চার ঘণ্টা ছিলেন। ইমরানের স্ত্রী বুশরা বিবিও জবাবদিহি ব্যুরো থেকে আরেকটি মামলায় ৩১ মে পর্যন্ত জামিন পেয়েছেন। ইমরানের জামিনের মধ্য দিয়ে সেনাবাহিনী পিছু হটল কিনা তা নিয়ে জল্পনা কল্পনা তৈরি হয়েছে। একদিন আগেই ইমরান বলেছিলেন তাকে গ্রেপ্তারের সম্ভাবনা ৮০ শতাংশ।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। পিটিআইপ্রধান এবং তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবি দুপুরের কিছু পরে এনএবি অফিসে আসেন। তাঁদের আসার আগে ন্যাব সদরদপ্তরের বাইরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। ইমরান যখন এনএবি অফিসে ছিলেন, তখন তাঁর স্ত্রী বুলেটপ্রুফ গাড়িতে বাইরে অপেক্ষা করছিলেন বলে জানিয়েছে ডন নিউজ টিভি।
পাকিস্তানের অগ্নিগর্ভ রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ইমরান খান এবং দেশটির সেনাবাহিনী বর্তমানে মুখোমুখি অবস্থানে আছেন। ইমরান সম্প্রতি পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। অথচ মাত্র পাঁচ বছর আগেও সেনাবাহিনীর সঙ্গে ইমরানের ছিল মধুর সম্পর্ক। যে সেনাবাহিনীর সমর্থনে নির্বাচনে জিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন বলে শোনা যায়, তিনি কেন সেই সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এরকম সরব হয়ে উঠলেন– সে নিয়েও চলছে আলোচনা।
ইমরান যে সামরিক বাহিনীর ওপর এ-রকম ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন, সামরিক বাহিনীকে টার্গেট করে কথাবার্তা বলছেন, এর কারণ আছে। তাঁর সরকারের যে পতন ঘটেছিল, সেজন্যে তিনি সেনাবাহিনীকেই দোষী বলে বর্ণনা করে থাকেন, বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন পাকিস্তানি সাংবাদিক এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট উর্দুর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক হারুন রশিদ।
রশিদ বলেন, যেদিন থেকে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গে ইমরান খানের সম্পর্ক ভেঙে গেল এবং সামরিক বাহিনী ইমরান খানের সরকারের ওপর থেকে সমর্থন তুলে নিল, তখনই আসলে ইমরান খানের সরকার পড়ে গেল, তিনি পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে গেলেন। অনেকের বিশ্বাস ইমরান খানের সরকারের পতনের কারণ এটিই। এমনকি তিনি আশঙ্কা করছেন যে তাঁর জনপ্রিয়তার কারণে সামরিক বাহিনী তাঁকে হত্যার চেষ্টা করছে। এরই মধ্যে সেনাবাহিনী দুইবার তাঁর প্রাণনাশের চেষ্টা করেছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন।
ইমরান খানকে ৯ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। দেশটির জাতীয় জবাবদিহি ব্যুরো আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আধাসামরিক বাহিনী রেঞ্জারসের সহায়তায় তাঁকে গ্রেপ্তার করেছিল। এই গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানজুড়ে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। খবর ডন ও বিবিসির।
মন্তব্য করুন