বেইজিং ও মস্কোর সম্পর্ক অভূতপূর্ব উচ্চ স্তরে আছে বলে মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্তিন। বুধবার বেইজিংয়ে চীনের সঙ্গে অনেকগুলো সমঝোতা স্মারক ও দ্বিপক্ষীয় চুক্তি সই করার আগে তিনি এই মন্তব্য করেন। চুক্তিতে দেশ দুটির পারস্পরিক বাণিজ্যিক বিনিয়োগে সহযোগিতা, চীনে রাশিয়ার কৃষিজ পণ্য রপ্তানি এবং অন্যান্য জায়গায় সহযোগিতা বাড়ার কথা বলা হয়েছে।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেনে আক্রমণ শুরুর পর প্রথমবারের মতো বেইজিং সফরে যাওয়া উচ্চপদস্থ রুশ কর্মকর্তা মিশুস্তিন। দুই দিনের সফরে তিনি চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এর পর সাক্ষাৎ করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ জানায়, মিশুস্তিন চীনের প্রেসিডেন্টকে বলেছেন, পশ্চিমাদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো ফিরিয়ে আনতে একসঙ্গে কাজ করবে মস্কো ও বেইজিং। জিনপিং বলেছেন, চীন ও রাশিয়া দৃঢ়ভাবে একে অপরকে সমর্থন করবে।

এদিকে ইউক্রেন সীমান্তবর্তী রাশিয়ার বেলগ্রেদ অঞ্চলে গত সোমবার হামলার ঘটনায় নিজেদের দূরে রাখছে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেনে রাশিয়া হামলা শুরু করার পর থেকে সীমান্ত অতিক্রম করে রাশিয়ায় হামলা চালানোর এটা অন্যতম বড় ঘটনা। হামলাকারীদের ফেলে যাওয়া অথবা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বেশকিছু পশ্চিমা যানের ছবি প্রকাশ করেছে রাশিয়া, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে নির্মিত হামভি সাঁজোয়া যানও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, রাশিয়ার ভেতরে হামলা চালানোর ব্যাপারে তারা কোনো উৎসাহ দেয়নি বা সহায়তাও করেনি।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সেখানে কীভাবে যুদ্ধ চালানো হবে, এটা একান্তই ইউক্রেনের ব্যাপার। বেলগ্রেদ সীমান্তের কাছাকাছি গ্রামগুলোতে গোলাবর্ষণ শুরুর পর বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বুধবার আরআইএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৭০ জনের বেশি জঙ্গি, চারটি সাঁজোয়া যান ও পাঁচটি পিকআপ ধ্বংস করা হয়েছে। মস্কোর দাবি, নিহতরা ইউক্রেন থেকে এসেছিল। তবে ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বক্তব্য নাকচ করেছে ইউক্রেন।

তাদের দাবি, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদামির পুতিনের বিরোধী দুটি আধা-সামরিক বাহিনী এই হামলার পেছনে রয়েছে। বেলগ্রেদ হামলার কঠোর জবাব দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেছেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু। অন্যদিকে কিয়েভকে বছরজুড়ে সমর্থন করতে প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। লন্ডনে একটি প্রতিরক্ষা সম্মেলনে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।

ইউক্রেনের বাখমুত মস্কোর নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার পর শহরটি পরিদর্শন করেছেন রুশ সমর্থিত স্বঘোষিত ডনেস্ক প্রজাতন্ত্রের (ডিপিআর) প্রধান ডেনিস পুশিলিন। মঙ্গলবার শহর ঘুরে দেখার সময় তিনি বলেন, এটি এখন থেকে ‘আর্টেমভস্ক’ নামে পরিচিতি পাবে। সোভিয়েত সময়ে বাখমুতের এই নাম ছিল। এদিকে রাষ্ট্রদ্রোহের সন্দেহে রাশিয়ার শীর্ষ এক বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক এবং দুই হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চীনের কাছে গোপন তথ্য প্রকাশের কারণে বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে তাদের। খবর বিবিসি, এএফপি ও রয়টার্সের।