নওগাঁ সদর উপজেলার চণ্ডীপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহকারী সুলতানা জেসমিনকে (৪০) র্যাব আটকের পর মৃত্যুর ঘটনায় দু’জন প্রত্যক্ষদর্শীসহ তাঁর ছেলে, ভাই, মামা ও বাড়িওয়ালার সঙ্গে কথা বলেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ গঠিত তদন্ত দল।

সোমবার বিকেলে নওগাঁ সার্কিট হাউসে তদন্ত দলের সদস্যরা তাঁদের বক্তব্য শোনেন। তদন্ত দলের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন নওগাঁর জ্যেষ্ঠ জেলা ও দায়রা জজ আবু শামীম আজাদ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ ইমতিয়াজুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল করিম, সিভিল সার্জন ডা. আবু হেনা মো. রায়হানুজ্জামান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান।

তদন্ত দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সাংবাদিকদের জেসমিনের মামা নাজমুল হক বলেন, ‘জেসমিনকে আটক, এর পর হাসপাতাল থেকে দাফন পর্যন্ত যা ঘটেছে, সব বলেছি। এ ছাড়া জেসমিনের বাসা থেকে জেসমিন ও মামলার বাদী এনামুলের মধ্যকার টাকা লেনদেনের যেসব কাগজপত্র আমরা পেয়েছি, তা উপস্থাপন করেছি। আশা করছি, তাঁরা নিরপেক্ষ তদন্ত করবেন। আমরা ন্যায়বিচার পাব।’

এ সময় জেসমিনের ভাই সুলতান মাহমুদ বলেন, ‘সুস্থ বোন র্যা ব আটকের পর অসুস্থ হন এবং তাঁদের হেফাজতে মারা যান। আশা করি, প্রকৃত দোষীরা চিহ্নিত হবে।’

গত ২২ মার্চ সকালে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় থেকে সুলতানা জেসমিনকে আটক করে র্যা ব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের একটি দল। ২৪ মার্চ সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। জেসমিনের পরিবারের অভিযোগ, র্যা ব হেফাজতে নির্যাতন করে তাঁকে মেরে ফেলা হয়েছে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো সোচ্চার হওয়ার পাশাপাশি হাইকোর্টও বিষয়টি জানতে চেয়েছিলেন। পরে হাইকোর্টের এক আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ মে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) মাহমুদুল হোসাইন খানকে প্রধান করে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। যদিও র্যাবের ভাষ্য, প্রতারণার অভিযোগে জেসমিনকে আটক করলে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাৎক্ষণিক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।