ব্যাপক কর্মসংস্থান, উদ্যোক্তা সৃষ্টি, সিটি করপোরেশনের আয়তন সাড়ে তিন গুণ বাড়ানোসহ চমক জাগানো নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন রাজশাহী সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি ১০টি ইশতেহারে ১০৫টি উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ইশতেহারে তিনি মেয়রের ক্ষমতার বাইরেও নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের অঙ্গীকার করেছেন। লিটন নিজেও তা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, শুধু মেয়র হিসেবে নয়, আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে উত্তর জনপদের জন্য তিনি এসব উন্নয়ন কাজ করতে চান।

শনিবার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ মিলনায়তনে ঘোষিত এ ইশতেহারে তিনি অর্থনৈতিক-সামাজিক-মানবিক শান্তিময় ও সমৃদ্ধ মহানগরী গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ ছাড়া নগরীকে বরেন্দ্র অঞ্চলের আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে বিশেষত্ব অর্জন, সিটি করপোরেশনের আয়তন ৯৬ বর্গকিলোমিটার থেকে সাড়ে ৩০০ বর্গকিলোমিটার পর্যন্ত সম্প্রসারণ, পদ্মার চরে রিভার সিটি নির্মাণ করার কথা বলেছেন।

তিনি দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির জন্য রাজশাহীতে পূর্ণাঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, ‘ও’ লেভেল, ‘এ’ লেভেল পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপন করা, গার্লস ক্যাডেট কলেজ স্থাপন ও পূর্ণাঙ্গ কারিগরি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করার কথা বলেছেন।

নগরবাসীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে এবং স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে বেশকিছু প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে ইশতেহারে। এর মধ্যে রয়েছে– পুরোনো সব সরকারি হাসপাতাল চালু করা এবং যুগোপযোগী করে তোলা, ওয়ার্ডভিত্তিক নগর স্বাস্থ্যসেবা গড়ে তোলা, নাগরিকদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে অনলাইনের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া। রাজশাহী হার্ট ফাউন্ডেশনকে পূর্ণাঙ্গ হৃদরোগ হাসপাতালে উন্নীতকরণ, পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সার হাসপাতাল স্থাপন, আধুনিক ও বিশেষায়িত চিকিৎসার জন্য বেসরকারি উদ্যোগে স্পেশালাইজড হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন তিনি।

লিটন বলেছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ-রাজশাহী-নাটোর বনপাড়া-সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল পর্যন্ত সড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ, রাজশাহী থেকে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত ট্রেন চালুর উদ্যোগ নেওয়া, রাজশাহী-আব্দুলপুর রেলপথ ডুয়েল গেজে উন্নীত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। রাজশাহী-খুলনা-মোংলা-পোর্ট সংযোগ গড়ে তুলতে আন্তঃমহানগর যাত্রী ও মালবাহী ট্রেন চালু করা হবে, যাতে বহির্দেশীয় বাণিজ্যে আমদানি-রপ্তানি সহজীকরণ সম্ভব হয়।

ইশতেহারে রাষ্ট্রীয় সহায়তায় আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসংবলিত প্রবীণ নিবাস স্থাপন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিশু-কিশোরদের বিনোদন ও মানসিক স্বাস্থ্য গঠনের লক্ষ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাউন্সেলিং সেল গঠন করার অঙ্গীকার রয়েছে।

পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নৌকার প্রার্থী লিটন বলেন, এখানে অনেক বিষয় আছে, যা সিটি করপোরেশনের মেয়রের আওতায় পড়ে না। আমি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জানিয়ে উত্তরাঞ্চলের জন্য এসব করতে চাই। আশা করি, প্রধানমন্ত্রী আমাকে নিরাশ করবেন না। এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হবে। এর আগেও অনেক কাজ এনেছি, যেগুলো সিটি করপোরেশনের কাজের মধ্যে পড়ে না।

এ ব্যাপারে সুশাসনের জন্য নাগরিক রাজশাহী জেলার সভাপতি আহমেদ সফিউদ্দিন বলেন, এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে। বাস্তবায়ন করা গেলে রাজশাহীবাসী উপকৃত হবেন।