- আন্তর্জাতিক
- সেরা চা পাতা চয়নকারী উপলক্ষ্মী ত্রিপুরা
সেরা চা পাতা চয়নকারী উপলক্ষ্মী ত্রিপুরা

চা শ্রমিক উপলক্ষ্মী ত্রিপুরা
বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিকদের দিনে চা পাতা তোলার নির্ধারিত পরিমাণ ১২ থেকে ১৫ কেজি। এর বেশি তুললে আলাদা টাকা পান তাঁরা। অনেকে এভাবে বাড়তি উপার্জন করেন। তবে চা শ্রমিক উপলক্ষ্মী ত্রিপুরা যে কীর্তি গড়েছেন, তা অবিশ্বাস্য বলা চলে। গত বছর ২৮ হাজার ৩৪৪ কেজি চা পাতা তুলে জিতে নিয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। দিনে গড়ে তুলেছেন সাড়ে ৭৭ কেজি চা পাতা।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার নেপচুন চা বাগানের স্থায়ী শ্রমিক উপলক্ষ্মী । শ্রেষ্ঠ চা পাতা চয়নকারী ক্যাটাগরিতে জাতীয় চা পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। গতকাল রোববার মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে তৃতীয় জাতীয় চা দিবসের অনুষ্ঠানে এ পুরস্কার
নেন। চা বাগানের ভেতরে নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করা হয়েছে।
প্রথমবারের মতো দেশের চা বাগানগুলোর মালিক, শ্রমিক ও চা শিল্পে অবদান রাখায় আট ক্যাটাগরিতে দেওয়া হলো ‘জাতীয় চা পুরস্কার’। রোববার বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও চা বোর্ডের যৌথ উদ্যোগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যুগান্তকারী উদ্যোগের ধারাবাহিকতা ও বর্তমান সরকারের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে চা শিল্প টেকসই উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। উৎপাদনকারী ও বিপণনকারীদের পাশাপাশি বড় ভূমিকা রাখছেন শ্রমিকরা। এ শিল্পে শ্রমবান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও মালিকরা কাজ করছেন।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী জানান, ২০২১ সালে দেশের ১৬৭টি চা বাগান এবং ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান থেকে রেকর্ড ৯৬ দশমিক ৫১ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ১০২ মিলিয়ন কেজি।
মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. আশরাফুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহী, বাংলাদেশীয় চা সংসদের সভাপতি কামরান টি রহমান, টি ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি শাহ মঈনুদ্দিন হাসান ও এফবিসিসিআইর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে চা শিল্পে অবদান রাখায় আট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কারের ট্রফি ও সনদ তুলে দেন। ক্যাটাগরিগুলো হলো– একরপ্রতি সর্বোচ্চ উৎপাদনকারী বাগান, সর্বোচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন উৎপাদনকারী, শ্রেষ্ঠ রপ্তানিকারক, শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্রায়তন উৎপাদনকারী, শ্রমিক কল্যাণের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ বাগান, বৈচিত্র্যময় পণ্য বাজারজাতকরণের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান, দৃষ্টিনন্দন ও মানসম্পন্ন মোড়কের শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান এবং শ্রেষ্ঠ চা পাতা চয়নকারী শ্রমিক। এর আগে মন্ত্রী চা মেলার বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন। সবশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
উল্লেখ্য, জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের ৪ জুন থেকে ২৩ অক্টোবর ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত চা বোর্ডের প্রথম বাঙালি চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁর অসামান্য অবদান ও চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর যোগদানের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ২০২০ সালের ২০ জুলাই মন্ত্রিসভার বৈঠকে ৪ জুনকে ‘জাতীয় চা দিবস’ ঘোষণা করা হয়।
মন্তব্য করুন