- আন্তর্জাতিক
- আর্থিক হিসাবে বড় ঘাটতি
আর্থিক হিসাবে বড় ঘাটতি

ডলার সংকটে আমদানি নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন উদ্যোগ চলমান আছে। এর প্রভাবে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমছে। উন্নতি হয়েছে চলতি হিসাবের ঘাটতি পরিস্থিতিতেও। তবে আর্থিক হিসাবে বড় ঘাটতি দেখা দিয়েছে। মূলত আগে নেওয়া ঋণ পরিশোধের তুলনায় নতুন ঋণ কম আসছে। এতে সামগ্রিক লেনেদেনের ভারসাম্যে বড় ঘাটতি তৈরি হয়েছে।
গত অর্থবছর বিক্রি করে আরও ৭ দশমিক ৬২ বিলিয়ন ডলার। এভাবে বিক্রির ফলে রিজার্ভ কমে সাত বছর পর সম্প্রতি ৩০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে এসেছে। গতকাল রিজার্ভ ছিল ২৯ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। গত বছরের একই দিন যা ৪১ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার ছিল। আর দেশের ইতিহাসে রিজার্ভ সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করে ২০২১ সালের আগস্টে। করোনা-পরবর্তী অর্থনীতিতে বড় চাহিদা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রাবাজারেও।
বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে চাপ কাটাতে নানা উপায়ে আমদানি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে। গত বছরের জুলাই থেকে বিভিন্ন পণ্য আমদানির শুল্ক বাড়িয়েছে সরকার। আবার তুলনামূলক কম প্রয়োজনীয় পণ্যের এলসি খোলার সময় ৭৫ থেকে শতভাগ পর্যন্ত নগদ মার্জিনের শর্ত দেওয়া হয়েছে। এই মার্জিনের টাকা আবার কোনো ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া যাবে না। এ ছাড়া বড় এলসি খোলার ২৪ ঘণ্টা আগে তথ্য নিয়ে এর সঠিকতা যাচাই করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে ডলার সংস্থান করা ছাড়া ব্যাংকগুলোকে এলসি না খুলতে বলে দেওয়া হয়েছে।
এসব উদ্যোগের ফলে আমদানি কমছে। অবশ্য নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থার কারণে বড় আমদানিকারকদের তুলনায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি আমদানিকারকরা বেশি প্রভাবিত হচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত এপ্রিল পর্যন্ত চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে বিভিন্ন পণ্য আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ৮৭৮ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ১৪ দশমিক ৪০ শতাংশ কম। রপ্তানি ৫ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ বেড়ে ৪ হাজার ৩০৫ কোটি ডলার হয়েছে। অন্যদিকে, ২ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৭৭২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে এসেছে। এতে চলতি হিসাবের ঘাটতি কমে ৩৭৭ কোটি ডলারে নেমেছে।
আগের অর্থবছরের একই সময়ে যেখানে ঘাটতি ছিল ১ হাজার ৫৪৯ কোটি ডলার। তবে বিভিন্ন সময়ে নেওয়া বিদেশি ঋণ যে হারে পরিশোধ করতে হচ্ছে, নতুনভাবে আসছে তার চেয়ে কম। নিট বিদেশি বিনিয়োগও কমেছে। এতে আর্থিক হিসাবে বড় ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সাধারণভাবে আর্থিক হিসাব সব সময় ইতিবাচক থাকে। তবে এবার ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২১৬ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে যেখানে উদ্বৃত্ত ছিল ১ হাজার ১৯৫ কোটি ডলার। আর্থিক হিসাবে উদ্বৃত্ত থেকে ঘাটতি পরিস্থিতি সামগ্রিক বৈদেশিক মুদ্রা খাতকে চাপে রেখেছে। সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যে ঘাটতি হয়েছে ৮৮০ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে যেখানে ঘাটতি ছিল ৫৩০ কোটি ডলার।
মন্তব্য করুন