চাঁদের বুকে ‘চিরঘুমে’ চন্দ্রযান, কী বলল ইসরো?

ঘুমিয়ে পড়ার আগে রোভার প্রজ্ঞানের তোলা ত্রিমাত্রিক ছবি। ছবি: ইসরো
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৩ | ০৪:৫৫ | আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৩ | ০৪:৫৯
চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ‘ঘুমিয়ে পড়া’ ভারতীয় চন্দ্রযানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সাড়া পাচ্ছে না দেশটির মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। চন্দ্রযানের ল্যান্ডার বিক্রম ও রোভার প্রজ্ঞানের ‘জেগে ওঠার’ আশা ক্রমশ কমে যাচ্ছে। কারণ, গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে চাঁদে সূর্যাস্ত শুরু হয়েছে। আবারও প্রবল ঠান্ডা পড়বে। তাপমাত্রা নেমে যেতে পারে মাইনাস ৩০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত।
গত ২২ সেপ্টেম্বর বিক্রম ও রোভারকে ‘জাগিয়ে’ তোলার চেষ্টা করেছিল ইসরো। তবে কোনো সাড়া পায়নি ইসরো। তারপরও চন্দ্রপৃষ্ঠে ‘ঘুমিয়ে’ থাকা ল্যান্ডার ও রোভারের সঙ্গে সংযোগের চেষ্টা চালানো হতে থাকে। তবে আশার বার্তা আসেনি।
ইসরো বলছে, চন্দ্রযানের ‘ঘুম’ না ভাঙলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। গত সপ্তাহে ইসরোর প্রধান এস সোমনাথ বলেন, ‘রোভার যদি ঘুম থেকে না ওঠে তাহলেও সমস্যা নেই। কারণ, যা যা কাজ করবে বলে পরিকল্পনা করা হয়েছিল, (তা ঘুমিয়ে পড়ার আগেই) করে ফেলেছে রোভার।’
গত ৪ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টার দিকে চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে ‘স্লিপ মুডে’ যায় ল্যান্ডার বিক্রম। বিক্রমের আগে ঘুম পাড়ানো হয়েছিল রোভার প্রজ্ঞানকেও। চাঁদে রাত ফুরিয়ে দিনের আলো ফুটলে ২২ সেপ্টেম্বর প্রজ্ঞান ও বিক্রমকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করা হতে পারে ইসরোর বিজ্ঞানীরা তখন জানিয়েছিলেন।
গত ২৩ আগস্ট চাঁদের মাটিতে অবতরণ করে চন্দ্রযানের ল্যান্ডার বিক্রম। অবতরণের কিছু পরে তার পেটের ভিতর থেকে বেরিয়ে আসে রোভার প্রজ্ঞান। সেটি ধীরে ধীরে চাঁদের মাটিতে ঘুরেছে। সেখান থেকে তথ্য ও নমুনা সংগ্রহ করে বিক্রমের মাধ্যমে তা আবার পৃথিবীতে পাঠিয়েছে।
ইসরো জানিয়েছে, চাঁদে তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ীই সব হয়েছে। প্রযুক্তিগত কোনো সমস্যা হয়নি। বিক্রম ও প্রজ্ঞানের যে সমস্ত যন্ত্রপাতি রয়েছে, যেগুলোর সাহায্যে চাঁদে তারা পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছে ও সংগ্রহ করেছে তথ্য, সেই সব যন্ত্র চলেছে সৌরশক্তিতে। ফলে চাঁদে যতক্ষণ সূর্যের আলো ততক্ষণই কার্যক্ষম ছিল তারা।
চাঁদের একেকটি দিন পৃথিবীর হিসাবে ১৪ দিনের সমান আর একেকটি রাত ১৪ রাতের সমান। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে নেমে আসা রাত অতিশীতল। এ সময় সূর্যরশ্মির একটি কণাও প্রবেশ করে না চাঁদের দক্ষিণমেরুতে। তাই ঠান্ডায় চন্দ্রযানের যন্ত্রপাতি বিকল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল আগে থেকেই।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, বিবিসি ও এনডিটিভি