ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করতে চান জিনপিং
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৪ | ১৪:৪৫ | আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৪ | ১৪:৫৫
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ ও সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে শেষ বৈঠকে এ কথা জানিয়েছেন তিনি। শনিবার পেরুতে বার্ষিক এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশনের (এপেক) শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে তারা দু’জন বৈঠক করেন। বৈঠকে বাইডেনের চার বছরের শাসনকালে সম্পর্কের ‘উত্থান-পতন’ স্বীকার করেছেন দুই নেতা। তবে দু’জনই বাণিজ্য এবং তাইওয়ানের মতো ইস্যুতে উত্তেজনা কমানোর বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প দুই মাসের মধ্যে দায়িত্বে ফিরলে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সম্পর্ক আরও নাজুক হয়ে উঠতে পারে। ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে চীনকে একটি ‘কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। মহামারি কোভিডের সময় যখন সাবেক এই প্রেসিডেন্ট কোভিডকে ‘চীনা ভাইরাস’ হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেন তখন সম্পর্ক আরও অবনতি হয়। খবর-বিবিসি
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে সদ্য নির্বাচিত ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর প্রশাসনে কাকে কাকে নিয়োগ দিচ্ছেন, তা নিয়ে চলছে ব্যাপক জল্পনা। ট্রাম্প নিজেও বলেছেন, প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদে কেন্দ্রীয় সরকারে দায়িত্ব বণ্টনের ক্ষেত্রে বড় ধরনের রদবদল থাকবে। তবে দেখা যাচ্ছে, চীনের সমালোচকরাই ট্রাম্প সরকারের বড় সব পদে বসতে চলেছেন।
দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট ও দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের তথ্য বলছে, ফ্লোরিডার কট্টরপন্থী সিনেটর এবং চীনের সমালোচক মাইকেল ওয়াল্টজকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। গত জুলাইয়ে অনুষ্ঠিত রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনে ট্রাম্পের প্রশংসা করে বক্তব্য দেন সেনাবাহিনীর বিশেষায়িত দলের সদস্য ওয়াল্টজ। গত সপ্তাহে কংগ্রেস নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো পুনর্নির্বাচিত হন ওয়াল্টজ। এর আগে বিভিন্ন সময় ওয়াল্টজ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনা কার্যকলাপের সমালোচনা করেছেন এবং এই অঞ্চলে সম্ভাব্য সংঘাতের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে প্রস্তুত থাকার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেছেন।
রয়টার্স জানায়, মার্কিন সিনেটর মার্কো রুবিওকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বেছে নিয়েছেন ট্রাম্প। রুবিও হবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম পররাষ্ট্রমন্ত্রী, যিনি লাতিনো বংশোদ্ভূত। বিগত বছরগুলোতে তিনি চীন, ইরান, কিউবাসহ যুক্তরাষ্ট্রের ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতি সম্মান রেখেই শক্তিশালী মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির পক্ষে কথা বলেছেন।
এর আগে ২০২১ সালের জুনে করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার প্রেক্ষাপটে চীনের কাছে ক্ষতিপূরণ চাইতে যুক্তরাষ্ট্রসহ সব দেশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। নর্থ ক্যারোলাইনায় রিপাবলিকান পার্টির সম্মেলনে তিনি ওই আহ্বান জানান। ট্রাম্প বলেন, আমেরিকা ও অন্যান্য দেশগুলোর জন্য এখন সময় এসেছে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ ও জবাবদিহিতা দাবি করার। আমাদের আওয়াজ তুলতে হবে। ক্ষতিপূরণ তাদের দিতে হবে; দিতেই হবে।
সম্মেলনে ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত, এখনই চীনা পণ্যের ওপর ১০০ ভাগ শুল্ক আরোপ করা। এটা করলে চীন তাদের সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি বন্ধ করতে পারে এবং এর ফলে অনেক বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে আসতে পারে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, করোনাভাইরাস না ছড়ানোর আগে পর্যন্ত তার সঙ্গে চীনা প্রেসিডেন্টের বেশ চমৎকার সম্পর্ক ছিল। ট্রাম্প বলেন, চীন বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে পাত্তাই দেয় না।
ট্রাম্প বলেন, সব দেশ মিলে করোনায় তাদের ক্ষতির জন্য চীনের কাছ থেকে কম পক্ষে ১০ ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করতে হবে। এ অর্থ যদিও ক্ষতির তুলনায় খুবই কম। এ ছাড়াও যেসব দেশ চীনের কাছে আর্থিকভাবে ঋণী, সম্মিলিতভাবে তাদের ঋণ পরিশোধের পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে।
এর আগে তিনি করোনার উৎস নিয়ে তদন্ত বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে বাইডেন প্রশাসনকে ‘ভীতু’ ও ‘দুর্নীতিবাজ’ বলে সমালোচনা করেন। তিনি ফের তার সে পুরনো অভিযোগ তুলে বলেন, বাইডেন ও তার পরিবার চীনের কমিউনিস্ট পার্টির কাছ থেকে কয়েক মিলিয়ন ডলার নিয়েছিল।
- বিষয় :
- ডোনাল্ড ট্রাম্প
- চীন
- শি জিনপিং