ঢাকা মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

বিএসএফ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের সুযোগ দিচ্ছে: মমতা

বিএসএফ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের সুযোগ দিচ্ছে: মমতা

পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সচিবালয় নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে বক্তব্য দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সমকাল

শুভজিৎ পুততুন্ড, কলকাতা

প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫ | ২০:৪৭ | আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৫ | ২১:০২

কেন্দ্রীয় সরকারের ব্লু-প্রিন্ট মেনে পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে বাংলাদেশিদের অনুপ্রবেশ করতে সহযোগিতা করছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। 

আজ বৃহস্পতিবার পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সচিবালয় নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠক এমন বিস্ফোরক মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ সময় মমতা অনুপ্রবেশ নিয়ে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ও বিএসএফকে কড়া বার্তা দেন। 

বাংলাদেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের খারাপ সম্পর্ক নেই দাবি করে মমতা বলেন, ‘বিএসএফের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে পশ্চিমবঙ্গে অনুপ্রবেশকারীদের ঢোকানো হচ্ছে।’

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএসএফ অনুপ্রবেশকারীদের ঢোকাচ্ছে। আমাদের কাছে খবর আছে, ইসলামপুর, সিতাই, চোপড়া এবং আরও অনেক জায়গা দিয়ে লোক ঢোকাচ্ছে বিএসএফ। তারা মেয়েদের ওপর অত্যাচার করছে।’ 

জেলা আধিকারিকরা কেন এ নিয়ে প্রতিবাদ করছেন না, তা নিয়ে বৈঠকে প্রশ্ন তোলেন মমতা। কোন কোন এলাকা দিয়ে লোক ঢোকানো হয়েছে, তা নিয়ে ডিজি রাজীব কুমারের কাছে প্রতিবেদনও চান মমতা।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা আরও বলেন, ‘সীমান্ত আমাদের হাতে নয়, বিএসএফের হাতে। বাইরে থেকে কারা আসছে, সেই হিসাব আমাদের হাতে নেই, কেন্দ্রের হাতে। বিমানে চেপে যারা আসেন, আগে সেই তালিকা দেওয়া হতো, এখন দেওয়া হয় না। ফলে কারা আসছে, কারা ঢুকছে, জানতে পারি না। ট্রেন, বাস, সব চলছে। কেউ যদি মনে করেন, বাংলায় অনুপ্রবেশকারীদের ঢুকিয়ে তৃণমূলকে বদনাম করব, এটা তৃণমূল করছে না। তৃণমূলের অধিকার নেই, সাধ্যও নেই। এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে বিএসএফ, ভাল করে শুনে রাখুন। কেউ কেউ বিএসএফের দায় তৃণমূলের ঘাড়ে চাপাচ্ছেন। তাঁদের বলব, সংযত হোন, সংবেদনশীল হোন, ন্যায়-অন্যায় দেখুন।’

মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘তৃণমূল সীমান্ত পাহারা দেয় না, পুলিশও দেয় না। বিএসএফ পাহারা দেয়। পুলিশের কাছে কিন্তু তথ্য এসে পৌঁছায়, জেলা শাসকের কাছেও তথ্য থাকে। অর্থাৎ পুলিশ, জেলা শাসকরা দায়িত্ব পালন করেননি। রাজীব কুমারের কাছ থেকে এবং স্থানীয় সূত্র থেকে কিছু তথ্য পেয়েছি আমরা। আমার রিপোর্ট চাই। কড়া চিঠি লিখব আমি। আমরা চাই, ওখানেও শান্তি থাক, এখানেও থাক। আমাদের দুই বাংলার মধ্যে কোনো খারাপ সম্পর্ক নেই। একভাষায় কথা বলি, চিকিৎসার কারণে, মানবিকতার কারণে কেউ আসতেই পারেন। কিন্তু আমাদের জানাতে হবে। এখানে গুন্ডা পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সীমান্ত পেরিয়ে এসে খুন করে চলে যাচ্ছে। এমন লোক পাঠানো হচ্ছে। বিএসএফের অনেক ভেতরের কাজ। কেন্দ্রীয় সরকারের ব্লুপ্রিন্ট আছে এর মধ্যে। নইলে এটা হতে পারত না।’ 

তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রকে বার বার বলেছি, আপনারা যা করবেন, আমাদের সেটাই পথ। কিন্তু যদি দেখি, আমার রাজ্যকে ডিস্টার্ব করতে জঙ্গি হামলায় কেউ মদদ দিচ্ছে, তাহলে তো প্রতিবাদ করতেই হবে। আমাদের প্রতিবাদপত্র যাবে।’

বাংলাদেশে সাম্প্রতিক পরিবর্তনের ঢেউ আছড়ে পড়েছে প্রতিবেশী পশ্চিমবাংলার রাজনীতিতেও। বেআইনি অনুপ্রবেশ, পাসপোর্ট জালিয়াতি ও জঙ্গি সদস্য ধরা পড়ার মতো একাধিক মামলা সামনে এসেছে। এমন ঘটনায় লাগাতার রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেই চলেছিল বিরোধী বাম, বিজেপি। এবার পাল্টা সীমান্তে অনুপ্রবেশের দায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বলে এবার পাল্টা জবাব দিলেন মমতা। সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তুললেন রাজ্যের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ।

আরও পড়ুন

×