ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫

করোনা চিকিৎসায় প্রাচীন পদ্ধতিকে গুরুত্ব দিচ্ছে চীন

করোনা চিকিৎসায় প্রাচীন পদ্ধতিকে গুরুত্ব দিচ্ছে চীন

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২০ | ০১:৫২ | আপডেট: ২৯ জুন ২০২০ | ০১:৫৯

গোটা বিশ্বে যখন করোনার টিকা আবিষ্কারে প্রতিযোগিতা চলছে তখন করোনা চিকিৎসার উপায় হিসেবে ট্রাডিশনাল চাইনীজ মেডিসিন (টিসিএম) বা প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতিকে গুরুত্ব দিচ্ছে চীন ।

চীনের গণমাধ্যমে দেশটির সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, চীনে কোভিড-১৯ আক্রান্ত শতকরা ৯২ শতাংশের চিকিৎসাদের ক্ষেত্রে ট্রাডিশনাল চাইনীজ মেডিসিন পদ্ধতি কোনো না কোনভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।

টিসিএম হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি। ভেষজ উপাদান থেকে শুরু করে আকু পাংচার সব ধরনের চিকিৎসাই এর অন্তর্ভুক্ত।

প্রজন্মের পর প্রজন্মে ধরে টিসিএম পদ্ধতি চীনে জনপ্রিয়। যদিও অনলাইনে মাঝে মধ্যেই এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা নিয়ে তর্ক বিতর্ক দেখা যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীন দেশ ও দেশের বাইরে টিসিএম চিকিৎসা পদ্ধতি সম্প্রসারণের চেষ্টা করছ। তবে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা এর কার্যকারিতা নিয়ে সংশয়ে আছেন।

চীনের ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের করোনা ভাইরাস নির্দেশিকাতে টিসিএম নিয়ে একটি বিশেষ অধ্যায় রয়েছে। সেখানে ২০০ ৩ সালে সার্সয়ের মতো মাহামারিতে এই চিকিৎসা পদ্ধতির ভূমিকার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

করোনা মোকাবেলায় ওই নির্দেশিকায় ৬ ধরনের ঐতিহ্যবাহী নিরাময় ব্যবস্থার কথা হয়েছে। সেখানে ১৩ ধরনের ভেষজ উপাদান গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।  এর পক্ষে যুক্তি দিয়ে তারা বলেছেন, এসব ব্যবহারে কোন ক্ষতি নেই। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিরাপদ ভেবে এসব ভেষজ ব্যবহারের আগে বৈজ্ঞানিক গবেষণা হওয়া দরকার।

যুক্তরাজ্যের ওষুধ বিশেষজ্ঞ ও অবসরপ্রাপ্ত গবেষক এডজার্ড আর্নস্টকে সম্প্রতি নেচার জার্নালে জানিয়েছেন, টিসিএমের গ্রহণযোগ্য প্রমাণিত হয়নি। করোনা মোকাবলা তাই এর ব্যবহার বিপজ্জনকও বটে।

বিশেষজ্ঞরা যাই বলুক না কেন, চীনে টিসিএমের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে, আন্তর্জাতিভাবেও এর চাহিদা বাড়ছে।

চীনের প্রেসেডিন্টে শি দেশটির প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতির গভীর অনুরাগী হিসাবে পরিচিত । তিনি এই চিকিৎসা পদ্ধতিকে ‘চীনা সভ্যতার সম্পদ’ হিসাবে অভিহিত করেছেন।

তবে, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক কাউন্সিলের স্বাস্থ্য বিষয়ক সিনিয়র ফেলো ইয়ানজং হুয়াংয়ের মতে, সুরক্ষা এবং কার্যকারিতা সম্পর্কিত সমস্যা থাকায় বেশিরভাগ চীনা জনগণ এখনও টিসিএমের চেয়ে আধুনিক ওষুধ পছন্দ করেন।

সমালোচকরা বলছেন, চীন বিদেশে প্রচারের উপায় হিসাবে টিসিএম পদ্ধতির কথা বলছে। এবশ্য এমন অভিযোগ চীন অস্বীকার করেছে।

এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনা মোকোবেলায় প্রাচীন পদ্ধতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সকর্ত থাকতে বলায় টিসিএম পদ্ধতি ব্যবহার আরো বিতর্কিত হয়েছে।

এছাড়া মানের অভাব এবং কোনও ক্লিনিকাল ট্রায়াল না হওয়ায় টিসিএম পদ্ধতি ব্যাপকভাবে গ্রহণে বাধা সৃষ্টি করছে বলে মনে করছেন সমালোচকরা। সূত্র : বিবিসি

আরও পড়ুন

×