ঢাকা সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্প

সিরিয়ার ওপর থেকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উঠল

সিরিয়ার ওপর থেকে  মার্কিন নিষেধাজ্ঞা উঠল

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক 

প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫ | ২২:২৩

মধ্যপ্রাচ্য সফররত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সৌদি আরবে সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সেখানে তিনি দীর্ঘদিনের শত্রু ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য তাঁকে আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে সিরিয়ার ইসলামপন্থি সরকারের ওপর থেকে সব ধরনের মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘোষণা দেন। সাক্ষাতে শারাকে ‘আকর্ষণীয়’ ও ‘দৃঢ় তরুণ’ বলে বর্ণনা করেন ট্রাম্প।

বুধবার রয়টার্সের প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। এতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র ও উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর মধ্যে একটি শীর্ষ সম্মেলনের আগে ট্রাম্প সিরিয়ার আহমেদ আল-শারার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। শারা একসময় আল কায়দার প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন। এটি ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ বলে অভিহিত করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু জানায়, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান ভার্চুয়ালি ট্রাম্প ও সৌদি যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে বৈঠকে যোগ দেন। 

ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন বিষয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি এক্স পোস্টে জানান, ট্রাম্প শারাকে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মরক্কোর পথ অনুসরণের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। এ তিন দেশ ২০২০ সালে মার্কিন মধ্যস্থতায় আব্রাহাম চুক্তিতে সই করে এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে।

যুক্তরাষ্ট্র আশা করেছিল, সৌদি আরব আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দেবে। কিন্তু গাজা যুদ্ধ শুরুর পর এ নিয়ে আলোচনা থেমে যায়। তখন সৌদি আরব জোর দিয়ে বলে, স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র ছাড়া কোনো স্বাভাবিকীকরণ সম্ভব নয়। 

এর আগে মঙ্গলবার ট্রাম্প জানান, সৌদি আরব বলেছে, তারা তাদের পছন্দের সময়ে চুক্তিতে যোগ দেবে। আল কায়দার সঙ্গে সিরিয়ার নেতাদের আগের সম্পর্ক নিয়ে মার্কিন প্রশাসনে উদ্বেগ থাকা সত্ত্বেও ট্রাম্প মঙ্গলবার বলেন, তিনি একটি বড় নীতিগত পরিবর্তনের মাধ্যমে সিরিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবেন। তিনি জানান, ওয়াশিংটন শারার সঙ্গে তাঁর বৈঠকের মাধ্যমে সিরিয়ার সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে।

শারার প্রশাসনের ওপর ইসরায়েলের গভীর সন্দেহ থাকা সত্ত্বেও এ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলো। ২০১৬ সালে শারা আল কায়দার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করলেও ইসরায়েলের কর্মকর্তারা তাঁকে একজন ‘জিহাদি’ হিসেবে বর্ণনা করেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এ সিদ্ধান্ত প্রেসিডেন্ট শারাকে বড় ধরনের উৎসাহ জোগাবে। গত ডিসেম্বরে তিনি সাবেক স্বৈরশাসক বাশার আল-আসাদকে উৎখাতের পর পুরো সিরিয়াকে দামেস্কের নিয়ন্ত্রণে আনতে লড়াই করে যাচ্ছেন। 

বিশ্বব্যাপী আর্থিক ব্যবস্থা থেকে সিরিয়াকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞাগুলো অপসারণের ফলে মানবিক সংস্থাগুলোর বৃহত্তর সম্পৃক্ততার পথ পরিষ্কার হবে। সেই সঙ্গে গৃহযুদ্ধ থেকে দেশটি পুনর্গঠনের সঙ্গে সঙ্গে বিদেশি বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সহজ হবে। সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল-সৌদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রিয়াদ সিরিয়ার অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারকে সমর্থন করবে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর সিরিয়ায় বিনিয়োগের অনেক সুযোগ রয়েছে।

কাতারে ট্রাম্প

চার দিনের সফরের দ্বিতীয় দিন বুধবার ট্রাম্প কাতারের রাজধানী দোহায় পৌঁছান। সেখানে বিলাসবহুল লুসাইল প্রাসাদে তিনি কাতারের আমির তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেন। 

বিবিসি জানায়, বৈঠকে কাতারের আমির ট্রাম্পকে ‘শান্তিদূত’ বলে বর্ণনা করেন। সেই সঙ্গে ২০২২ সালে ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজনের কথাও বলেন। তখন ট্রাম্প বলেন, ‘আপনি দারুণ কাজ করেছেন।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা শান্তির জন্য কাজ করব। এটা কেবল এখানে নয়, অন্যান্য অঞ্চলেও।’ 


 

আরও পড়ুন

×