ঢাকা বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪

সিন্ধু সভ্যতায় খাবার ছিল মাংসপ্রধান, পছন্দের শীর্ষে গরু

সিন্ধু সভ্যতায় খাবার ছিল মাংসপ্রধান, পছন্দের শীর্ষে গরু

সিন্ধু সভ্যতার প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন প্রাচীন মহেঞ্জোদারো শহর -ফাইল ছবি

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২০ | ০৯:২৩ | আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২০ | ২১:২০

উত্তর-পশ্চিম ভারতের সিন্ধু সভ্যতার মানুষজনের মাংস-সমৃদ্ধ খাবার ছিল প্রধান। এসবের মধ্যে ছিল গরু, শূকর, মহিষ ও ভেড়ার মাংস। প্রত্নতাত্ত্বিক বিজ্ঞান জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

'উত্তর-পশ্চিম ভারতের সিন্ধু সভ্যতার মৃৎশিল্পে লিপিডের অবশিষ্টাংশ' শিরোনামের ওই গবেষণায় বলা হয়, ওই অঞ্চলে গবাদিপশুর বিপুল পরিমান হাড় পাওয়া গেছে, যা সিন্ধু জনগোষ্ঠীর মধ্যে 'গরুর মাংস খাওয়ার সাংস্কৃতিক অগ্রাধিকার' প্রস্তাব করে।

উত্তর-পশ্চিম ভারতের সিন্ধু সভ্যতার (বর্তমান হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশ) জনবসতিগুলোর লোকেরা মাটির পাত্রে কী ধরণের খাদ্যসামগ্রী খেতেন তা খতিয়ে দেখার জন্য লিপিড অবশিষ্টাংশ বিশ্লেষণের মাধ্যমে গবেষণায় প্রাচীন দক্ষিণ এশিয়ার খাদ্য নিদর্শনগুলোর প্রতি দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। এটি অক্ষয় সূর্যনারায়ণের নেতৃত্বে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি পিএইচডি থিসিসের অংশ।

কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সূর্যনারায়ণ বলেন, 'সিন্ধু মৃৎশিল্পে লিপিডের অবশিষ্টাংশ সম্পর্কে আমাদের গবেষণা পাত্রগুলোতে পশুজাত খাবারের প্রাধান্য পাওয়া যায়। যেমন: শূকরের মতো উদ্ভিদভোজী প্রাণীর মাংস, গবাদি পশু-  মহিষ, ভেড়া বা ছাগলের মতো প্রাণীর পাশাপাশি দুগ্ধজাতীয় পণ্য।

চর্বি ও তেল সনাক্তকরণের মাধ্যমে গবেষণায় লিপিডের অবশিষ্টাংশ অধ্যয়ন করা হয়েছে, যা অতীতে তাদের ব্যবহারের সময় প্রাচীন সিরামিক পাত্রে শোষিত হয়েছিল। এটি দুধ, মাংস ও এ জাতীয় খাবারের সম্ভাব্য মিশ্রণ ব্যবহারের প্রমাণ সরবরাহ করে।

গবেষণায় দেখা গেছে, সিন্ধু সভ্যতার বিভিন্ন স্থান থেকে পাওয়া দেহাবশেষের গড়ে প্রায় ৮০ শতাংশ প্রাণী প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। এর মধ্যে গবাদি পশু বা মহিষ সর্বাধিক পরিমাণে পাওয়া যায়, এর মধ্যে পশুর হাড়ের মধ্যে গবাদিপশু অর্থাৎ গরু, মহিষ ছিল গড়ে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশের বেশি। এছাড়া বাকি প্রাণীর অবশেষের মধ্যে ১০ শতাংশ পাওয়া গেছে ভেড়া ও ছাগলের।

গবেষণায় বলা হয়, গবাদিপশুর হাড়ের সংখ্যার পরিমাণ সিন্ধু জনপদে গো-মাংস খাওয়ার সাংস্কৃতিক অগ্রাধিকার নির্দেশ করে। তবে হরিণ, পাখি এবং নদী/সামুদ্রিক প্রাণীর প্রজাতিগুলোর অস্তিত্ব খুব কম অনুপাতে পাওয়া গিয়েছে।

সূর্যনারায়ণ বলেন, 'লিপিডের অবশিষ্টাংশ বিশ্লেষণে আমরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে নিশ্চিত করতে পারি যে, ওই সময়ে গরু, ছাগল, ভেড়া ও শুয়োরের মাংস খাওয়ার প্রচলন ব্যাপকভাবে ছিল- বিশেষত গরুর মাংস।'

সিন্ধু বিশ্বের প্রথম বৃহত্তম সভ্যতার একটি ছিল। এটি প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে বর্তমান পাকিস্তান এবং উত্তর ভারতের একটি অঞ্চলে শুরু হয়েছিল। সিন্ধু উপত্যকায় ১৪০০টিরও বেশি শহর ও নগর ছিল। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ছিল হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারো। এ শহরগুলোতে প্রায় ৮০ হাজার লোক বাস করত।

whatsapp follow image

আরও পড়ুন

×