তুরস্কে চীনের দূতাবাসের সামনে উইঘুর নারীদের বিক্ষোভ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২১ | ০৯:২৯
জিনজিয়াং প্রদেশের বন্দিশিবির বন্ধের দাবিতে তুরস্কে অবস্থিত চীনের দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ করেছেন উইঘুর নারীরা। সংখ্যালঘু এ মুসলিম সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন, গণহত্যা বন্ধের দাবিতে সোমবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসে বিক্ষোভ করেন তারা।
অন্যদিকে, উইঘুরদের ওপর চালানো গণহত্যার অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে বেইজিং। স্থানীয় সময় গত রোববার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই সংবাদ সম্মেলনে বলেন, এসব অভিযোগ 'অযৌক্তিক ও বানোয়াট'। এটা সুদূরপ্রসারী উদ্দেশ্য হাসিলে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমাদের তৈরি গুজব ও সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ। খবর বিবিসি ও এএফপির
সোমবার তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে চীনা দূতাবাসের বাইরে হাজারো উইঘুর নারী বিক্ষোভ করেন। এ সময় বিক্ষোভকারী 'গণহত্যা বন্ধ করুন' ও 'বন্দিশিবির বন্ধ করুন' স্লোগান দেন তারা। বিক্ষোভের সময় 'ধর্ষণ মানবতাবিরোধী অপরাধ'সহ বিভিন্ন প্রতিবাদী প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করা হয়। এ সময় তাদের নিজস্ব সবুজ রঙের পতাকাও ওড়ানো হয়।
তুরস্কে বসবাসরত উইঘুররা সাধারণত তুর্কি ভাষায় কথা বলতে পারেন। তাদের সঙ্গে আঙ্কারার সংস্কৃতিগতও মিল রয়েছে। বর্তমানে তাদের আশঙ্কা হচ্ছে, তুরস্ক যেহেতু চীনের বিনিয়োগের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল এবং দুই দেশের মধ্যে বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে। এ কারণে তাদের চীনে প্রত্যাবাসন করা হতে পারে। তবে আঙ্কারা সরকার সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়েছে।
সম্প্রতি উইঘুর ইস্যুতে বিতর্কের মুখে পড়ে চীন। একের পর এক দেশ জিনজিয়াংয়ে উইঘুরদের ওপর চীনা সরকারের আচরণকে 'গণহত্যা' বলে আখ্যা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার পর এই ঘটনাকে 'গণহত্যা' বলে স্বীকৃতি দিয়েছে নেদারল্যান্ডসও। বেইজিংয়ের তথাকথিত 'কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে' নিপীড়নের একাধিক প্রমাণ আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে গত সপ্তাহে প্রকাশিত বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, উইঘুর মুসলিমদের নির্যাতন করছে চীন সরকার। তাদের দিয়ে জোর করে শ্রমিকের কাজ দিয়ে স্থানান্তর করানো হচ্ছে। উইঘুররা প্রক্রিয়াগত ধর্ষণের শিকার বলেও অভিযোগ তোলা হয়।
জাতিসংঘ বলছে, জিনজিয়াংয়ে বিভিন্ন বন্দিশিবিরে প্রায় ১০ লাখ উইঘুর মুসলিমকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। এর বাইরে উইঘুর নারীদের বন্ধ্যা করা এবং শিশুদের পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হচ্ছে। যদিও চীন সে অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে শুরু থেকে বলে আসছে, সেখানে তাদের কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
রোববার চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, জিনজিয়াংয়ে কী ঘটছে সে সম্পর্কে মিথ্যাকে বিশ্বাস করতে পছন্দ করছেন পশ্চিমা রাজনীতিকরা। তারা অঞ্চলটি পরিদর্শনে এলে স্বাগত জানাবে চীন।
তিনি আরও বলেন, 'জিনজিয়াংয়ে তথাকথিত গণহত্যা হাস্যকরভাবে অযৌক্তিক।'
এদিন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্কের উন্নতির জন্য ওয়াং ই বেইজিংয়ের বিরুদ্ধে আরোপিত 'অযৌক্তিক' বাধা প্রত্যাহারের জন্য ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানান।