বাল্যবিয়ের পর এবার আরেক কাণ্ড ঘটিয়েছেন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকার। গত ১ নভেম্বর ওই ইউনিয়নের দোলন এলাকার এক কিশোরীকে বিয়ে করেন তিনি। ৪৫ বছরের চেয়ারম্যানের সঙ্গে ৯ম শ্রেণির ছাত্রীর বাল্যবিয়ের খবরটি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। এ সমালোচনা ঢাকতে গিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব এবার জালিয়াতির মাধ্যমে তার সদ্যবিবাহিত স্ত্রীর বয়স প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার সনদে বাড়িয়ে দেখিয়ে তার পক্ষের লোকজন দিয়ে বিয়েটি বাল্যবিয়ে ছিল না বলে প্রচার করছেন।

অনুসন্ধানে ওই কিশোরীর সমাপনী পরীক্ষা ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) সনদ যাচাই করে জালিয়াতির বিষয়টি উঠে আসে। দুই সনদে ওই কিশোরীর জন্ম তারিখ ২০০৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর উল্লেখ রয়েছে। সে হিসাবে তার বর্তমান বয়স ১৭ বছর ১ মাস ১২ দিন। চেয়ারম্যানের এমন অভিনব প্রতারণার বিষয়টি ফাঁস হলে নতুন করে সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।

এ বিষয়ে বুড়াবুড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আবু তালেব সরকার মোবাইল ফোনে জানান, বিয়ের মজলিসে মেয়ের পরিবার প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার ওই সনদটি দেখিয়েছে। তাৎক্ষণিক এর সত্যতা যাচাই করার সুযোগ না থাকায় বিয়ে সম্পন্ন করা হয়েছে। তবে এ সনদ তারা কোথায় পেয়েছে, তা আমি জানি না।

ভুয়া সনদের ব্যাপারে জোবাইদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৎকালীন সহকারী শিক্ষক মেহেরুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষক ভালো জানেন। আমি কিছু জানি না।

তৎকালীন প্রধান শিক্ষক প্রবীর কুমার রায়ের সঙ্গে ভুয়া সনদের ব্যাপারে কথা হলে তিনি বলেন, কীভাবে এমনটা হলো, বুঝতে পারছি না। তদন্ত করলে সত্যতা বেরিয়ে আসবে।

কুড়িগ্রাম জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্রাহাম লিংকন বলেন, এটা ফৌজদারি অপরাধ। যেহেতু ঘটনার সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সুযোগ ছিল না, তবে তার বিরুদ্ধে নিয়মিত আইনে মামলা দায়েরের সুযোগ রয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, এটি ওই ইউপি চেয়ারম্যানের তৃতীয় বিয়ে। নতুন স্ত্রী ছাড়াও তার এক স্ত্রী ও কলেজপড়ূয়া মেয়ে রয়েছে। আরেক স্ত্রীর সঙ্গে তার সংসার টেকেনি।