ঢাকা বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩

পদাবলি

পদাবলি

পদাবলি

সমকাল ডেস্ক

প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৩ | ১৬:৫৮ | আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৩ | ২২:৫৮

ছবির ঘরবাড়ি

মারুফুল ইসলাম 
পানির ডানে-বাঁয়ে রাতারগুল
খানিক দূরে সাদাপাথর ডাকে
রৌদ্র হাসে বালির বিছানায়
শ্যামল বনে ছায়া থমকে থাকে

লালাখালের ওপরে নীল রাত
বেলা বাড়ছে বেলা কাটছে তোর
চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে দেখি
সারি নদীর সবুজ জলে ভোর

আজ কি তোকে নেবে ঝরনাধারা
ভাঁজ কি মেলবে মণিপুরি শাড়ি
ইচ্ছেপাখি জালালি কবুতর
সুরমাসেতু ছবির ঘরবাড়ি

 

 

আমি ও আমার শরীর 

টোকন ঠাকুর  
এক হাত দিয়ে আরেক হাত চুলকোতে চুলকোতে আমি এটাই ভাবতিছি যে, এ আমি কার হাত চুলকোচ্ছি? এ আমি কার পা বয়ে বেড়াচ্ছি? কার শরীরকে নিজের শরীর ভেবে খুব যত্ন-আত্তি করতিছি? এ শরীর আমার কী হয়? এই শরীরের তো একটা বয়েস হচ্ছে, কিন্তু আমার তো বয়স হচ্ছে না। আমার বয়স হচ্ছে না মানে কথাটা এরকম যে, স্কুল-বাচ্চাদের পাশে দাঁড়ালে আমার তো তাদেরই বয়েসিই লাগে। বাড়িতে বাপ-মা’র সঙ্গে কথা বলতে বলতে আমার তো মনে হয়, আমিও আমার বাপ-মা’র বয়েসি হয়ে যাচ্ছি। বাড়ির পাশেই নদ, কুমার; আমি কুমারের কি জন্ম সহোদর নই? বান্দরবানের পাহাড়ের সামনে দাঁড়িয়েও আমি টের পাইছি, আমার কত বয়স? 
পাহাড় দাঁড়িয়ে থাকবে। নদ বয়ে যাবে। আমার বাপ-মা মরে যাবে। আমার স্কুল বন্ধুরা মরতে থাকবে, আমিও মরে যাব। আমার শরীর মরে যাবে। শরীরকে সবাই কবরে নামবে। আমি তো মরবই না, আমি একটা শরীরের ভেতর থেকে জাস্ট পালিয়ে যাব। কাজেই এই শরীর ততটা আমার নয়, আমি নিজে যতটা আমার। শরীর কি আমার পক্ষ, নাকি প্রতিপক্ষ– এই ভেবে ওষুধ খাইতে কি আমি অবহেলা করি না? করি। 
কাজেই এই ঠোঁটও আমার নয়, যাকে তুমি চুমু খেয়েছিলে। কার না কার শরীর আমি বয়ে বেড়াচ্ছি। একটি শোল মাছ দেখে মনে হচ্ছিল, আমিই হয়তো সেই মাছটি। মাছটি খুব যত্ন করে বঁটিতে কেটে তুমি রান্না করেছিলে। আমাকে খেয়ে ফেলতে পারো এভাবে! 
আমাকে খেতে পারবে না। আমাকে ছুঁতে পারবে না। আমি তো আমার নিজের শরীরের বাইরেই থেকে যাচ্ছি।

 

অস্ত্রের বুক নেই 

তাসনুভা অরিন  
যখন তুমি ছুরি দিয়ে আপেল কাটো কেউ তোমাকে কসাই বলে না
অথচ অজান্তে ফল কাটতে কাটতে তুমি খুনি হয়ে ওঠ 
খুনি থেকে একজন দুর্ধর্ষ রাষ্ট্রনায়ক হতে চেয়ে
যুগকে মাংস কাটার মতো করে কাটতে থাকো 
অথচ ছুরি তৈরি হয়েছিল যাদের দাঁত নেই
তাদের আপেল কেটে খাওয়ার জন্য।  

রাষ্ট্র তার অস্ত্রের সমান বিখ্যাত 
আর রাষ্ট্রবিজ্ঞান কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্রের ধূসর পৃষ্ঠা। 
যেমন, অশোকের তলোয়ার আশকের মতো বিখ্যাত হয়ে আছে 
কে কাকে রক্তাক্ত করেছিল কলিং যুদ্ধে?  
অথবা হেমিংওয়ের নিঃসঙ্গতা সংক্রামিত হয়েছিল তার পিস্তলে 
হয়তো পিস্তলটি আত্মহত্যা করেছিল হেমিংওয়ে হয়ে। 
  
আহত হৃৎপিণ্ড হাতে অস্ত্রের দিকে ছুটে যেতে যেতে দেখছি
অস্ত্রের বুক নেই
তথাপি প্রচণ্ড স্পন্দন আছে, কেঁপে ওঠা আছে। 

আরও পড়ুন