আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি
আমি আমার পূর্বপুরুষের কথা বলছি...
কবি আবু জাফর ওবায়দুলল্গাহ- পঞ্চাশের দশকের অন্যতম কবিদের মধ্যে একজন। পুরো নাম আবু জাফর মুহাম্মদ ওবায়দুলল্গাহ খান। তাঁর দুটি দীর্ঘ কবিতা 'আমি কিংবদন্তির কথা বলছি' এবং 'বৃষ্টি ও সাহসী পুরুষের জন্য প্রার্থনা' আধুনিক বাংলা সাহিত্যের ভান্ডারে অভূতপূর্ব সংযোজন।
সারাজীবন উচ্চপদস্থ আমলার দায়িত্ব পালন করেছেন। এমনকি ১৯৮০-র দশকে তিনি বাংলাদেশ সরকারের কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেছিলেন।
বরিশালের বাবুগঞ্জের বাহেরচর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কবি আবু জাফর ওবায়দুলল্গাহ। পিতা আব্দুল জব্বার খান পাকিস্তানের আইন পরিষদের স্পিকার ছিলেন। ময়মনসিংহ জিলা স্কুল থেকে ১৯৪৮ সালে মাধ্যমিক, ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগ থেকে এমএ পাস করেন।
কাব্যের আঙ্গিক গঠন এবং শব্দ যোজনার বিশিষ্ট কৌশল তাঁর স্বাতন্ত্র্য চিহ্নিত করে। তিনি লোকজ ঐতিহ্যের ব্যবহার করে ছড়ার আঙ্গিকে কবিতা লিখেছেন। প্রকৃতির রূপ ও রঙের বিচিত্র ছবিগুলো তাঁর কবিতাকে মাধুর্যমণ্ডিত করেছে।
আবু জাফর ওবায়দুলল্গাহ তাঁর কাব্যরীতিতে মূলত দুটি প্রবণতাকে অনুসরণ করেছেন- একটি তাঁর প্রথম জীবনের প্রিয় গীতিমুখ্য কাব্যরীতি আর অন্যটি মহাকাব্যিক। পঞ্চাশের দশকে রচিত তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'সাত নরী হার' এবং পরবর্তীকালের 'কখনো রং কখনো সুর' ও 'কমলের চোখ'- এ ধরনের গীতিমুখ্য সুললিত কবিতার সংকলন। তবে আশির দশক থেকে আবু জাফর ওবায়দুলল্গাহ মহাকাব্যিক কাব্যরীতিতে অভ্যস্ত হয়ে ওঠেন। এ পর্যায়ে তাঁর কবিতার বিষয় হিসেবে উঠে আসা মা-মাটি ও সংগ্রামী মানুষের চিত্র পরিচিত দেশ-কালের সীমানা অতিক্রম করে স্পর্শ করে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল। এ মহাকাব্যিক কাব্যভঙ্গিতেই ১৯৮১ সালে তিনি রচনা করেন তাঁর সর্বাধিক জননন্দিত কাব্যগ্রন্থ 'আমি কিংবদন্তীর কথা বলছি'। এ ছাড়া 'সহিষুষ্ণ প্রতীক্ষা', 'বৃষ্টি ও সাহসী পুরুষের জন্য প্রার্থনা' কাব্যগ্রন্থ দুটিতেও মহাকাব্যিক ব্যঞ্জনা লক্ষ্য করা যায়।
কাব্য রচনার ক্ষেত্রেবিশেষ অবদানের জন্য তিনি ১৯৭৯ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং ১৯৮৫ সালে একুশে পদক লাভ করেন। তিনি 'পদাবলি' নামে কবিদের একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন।
২০০১ সালের ১৯ মার্চ ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন কিংবদন্তির এই কবি- যিনি বলতেন,
'সশস্ত্র সুন্দরের অনিবার্য অভ্যুত্থান কবিতা
সুপুরুষ ভালবাসার সুকণ্ঠ সংগীত কবিতা
জিহ্‌বায় উচ্চারিত প্রতিটি মুক্ত শব্দ কবিতা
রক্তজবার মতো প্রতিরোধের উচ্চারণ কবিতা।'
প্রশ্ন

১। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের সব সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার্থীর মধ্যে কবি আবু জাফর ওবায়দুলল্গাহ কততম হয়েছিলেন?

২। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে তার গবেষণার বিষয় কী ছিলো?

৩। হাসান হাফিজুর রহমানের একুশের প্রথম সংকলনে (১৯৫৩) আবু জাফর ওবায়দুলল্গাহর কোন কবিতাটি স্থান পেয়েছিলো?
নিয়ম
পাঠক কুইজে অংশ নিতে আপনার উত্তর পাঠিয়ে দিন ১ জুন মঙ্গলবারের মধ্যে কালের খেয়ার ঠিকানায়। পরবর্তী কুইজে প্রথম তিন বিজয়ীর নাম প্রকাশ করা হবে। বিজয়ীর ঠিকানায় পৌঁছে যাবে পুরস্কার।
কুইজ ১০-এর উত্তর
১. বিজয়া
২) পূরবী কাব্যগ্রন্থ
৩) প্রায় দুই মাস [৫২ দিন]

কুইজ-১০ এর জয়ী
সাবরিনা তাহসিন
৩৭, আকুয়া জুবিলী কোয়ার্টার, ময়মনসিংহ।

নিলয় বিশ্বাস সূর্য, ফুলবাড়ীয়া বাজার, ময়মনসিংহ।
গোলাম মাওলা, জয়দেবপুর,গাজীপুর।

বিষয় : 'আমি কিংবদন্তী

মন্তব্য করুন