'বেলা অবেলা কালবেলা' কবি জীবনানন্দ দাশের একটি অনন্য কাব্যগ্রন্থ। মৃত্যু-পরবর্তী সময়ে আবিস্কৃত লেখাগুলো থেকে এ বইয়ের পাণ্ডুলিপি উদ্ধার করা হয়। আর কবির মৃত্যুর সাত বছর পর তা 'বেলা অবেলা কালবেলা' নামে ১৯৬১ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়। কবির জীবদ্দশায় প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ- 'ঝরা পালক', 'ধূসর পাণ্ডুলিপি', 'বনলতা সেন', 'সাতটি তারার তিমির' থেকে এ কাব্যগ্রন্থের কবিতাগুলোতে জীবনানন্দ দাশের কাব্যবৈশিষ্ট্যের অনেকটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। বাংলা ভাষার শুদ্ধতম ও নির্জনতম কবি জীবনানন্দ দাশ জীবদ্দশায় তার অনেক লেখাই প্রকাশ করেননি, এমনকি কাউকে প্রকাশও করতে দেননি।
জীবনানন্দ দাশ বাংলা কাব্যে আধুনিকতার পথিকৃৎদের মধ্যে অগ্রগণ্য। মৃত্যুর পর থেকে শুরু করে বিংশ শতাব্দীর শেষ ধাপে তিনি জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেন। তার জীবন কেটেছে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে। বিংশ শতাব্দীর শেষার্ধকাল অনপনেয়ভাবে বাংলা কবিতায় তার প্রভাব মুদ্রিত হয়েছে। রবীন্দ্র-পরবর্তীকালে বাংলা ভাষার প্রধান কবি হিসেবে তিনি সর্বসাধারণ্যে স্বীকৃত।
কবির মৃত্যু-পরবর্তী সময়ে প্রকাশিত অন্য কাব্যগ্রন্থটি হলো 'রূপসী বাংলা'; যা ১৯৫৭ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। রূপসী বাংলার সম্পূর্ণ প্রস্তুত পাণ্ডুলিপি তোরঙ্গে মজুদ থাকলেও তা প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি জীবনানন্দ দাশ। তবে তিনি এ কাব্যগ্রন্থের নাম দিয়েছিলেন বাংলার ত্রস্ত নীলিমা, যা তার মৃত্যুর পর আবিস্কৃত এবং রূপসী বাংলা প্রচ্ছদনামে প্রকাশিত হয়।
জীবনানন্দ দাশের সাহিত্য জীবনের শুরুতেই তার দ্বিতীয় কাব্য সংকলন ধূসর পাণ্ডুলিপিতে তার স্বকীয় কাব্যকৌশল পরিস্ম্ফুট হয়ে ওঠে। বাংলা সাহিত্যের ভুবনে তার বৈশিষ্ট্যগুলো আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠে। শেষের দিককার কবিতায় অর্থনির্মলতার অভাব ছিল। সাতটি তারার তিমির প্রকাশিত হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে দুর্বোধ্যতার অভিযোগ ওঠে। নিজ কবিতার অবমূল্যায়ন নিয়ে জীবনানন্দ খুব ভাবিত ছিলেন। তিনি নিজেই স্বীয় রচনার অর্থায়ন করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছিলেন, যদিও শেষাবধি তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে কবি নিজেই নিজ রচনার কড়া সমালোচক ছিলেন। তাই সাড়ে আটশ কবিতার বেশি কবিতা লিখলেও তিনি জীবদ্দশায় মাত্র ২৬২টি কবিতা পত্রপত্রিকায় ও কাব্যসংকলনে প্রকাশ করতে দিয়েছিলেন। জীবিতাবস্থায় অপ্রকাশিত সেই কবিতাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য এই 'বেলা অবেলা কালবেলা' কাব্যগ্রন্থে স্থান পাওয়া কবিতাগুলো।
সূর্য নক্ষত্র নারী, সময়সেতুপথে, তোমাকে, মাঘসংক্রান্তির রাতে, শকুন, আমাকে একটি কথা দাও, অনেক নদীর জল, সামান্য মানুষ, অবরোধ, পৃথিবীর রৌদ্রে, জয়জয়ন্তী সূর্য, প্রয়াণপটভূমি, হেমন্ত রাতে, উত্তর সাময়িকী, বিস্ময়, গভীর এরিয়েলে, ইতিহাসযান, মৃত্যু স্বপ্ন সংকল্প, পৃথিবী সূর্যকে ঘিরে, সময়ের তীরে, যতদিন পৃথিবীতে, মহাত্মা গান্ধী, মহাগোধূলি, মানুষ যা চেয়েছিল, হে হৃদয়- জীবনানন্দের পূর্বাপর কবিতাগুলো থেকে অপেক্ষাকৃত সমকালনির্ভর এমন ৪৬টি কবিতা নিয়েই অমর কাব্যগ্রন্থ 'বেলা অবেলা কালবেলা'।
প্রশ্ন
১। জীবনানন্দ দাশের ডাক নাম কী ছিল?
২। মৃত্যুর আগে কী ছিল কবির শেষ উক্তি?
৩। 'সুতীর্থ' জীবনানন্দ দাশের কোন ধরনের লেখা?
কুইজ ৩৬-এর উত্তর
১। শ্রেষ্ঠ কাহিনিকার
২। ১৯৬৫
৩। 'দুই তীর ও অন্যান্য গল্প'

কুইজ ৩৬-এর জয়ী

আরাফাত হোসেন জীবন
ডিপার্টমেন্ট অব সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ডুয়েট
লাইলা আঞ্জুমান
রোকেয়া হল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ইসলাম তরিক
আদমদীঘি, বগুড়া

নিয়ম
পাঠক, কুইজে অংশ নিতে আপনার উত্তর পাঠিয়ে দিন ১৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবারের মধ্যে কালের খেয়ার ঠিকানায়। পরবর্তী কুইজে প্রথম তিন বিজয়ীর নাম প্রকাশ করা হবে। বিজয়ীর ঠিকানায় পৌঁছে যাবে পুরস্কার।