পর্ব :৪
হামুদুর রহমান কমিশন আরও বলছে, ২১ নভেম্বর ভারতীয়দের সঙ্গে ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টে যখন সংঘর্ষ শুরু হলো, নিয়াজির বোঝা উচিত ছিল যে, এটা যুদ্ধের দিকে আগাচ্ছে। কারণ ভারতের সামনে অন্য যে পথগুলো ছিল, সেগুলো শেষ। ভারতের পক্ষে তখন একদিকে পাকিস্তানের একটা অঞ্চল দখল করে পরে পূর্ব পাকিস্তানকে কেড়ে নিয়ে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করা কঠিন ছিল। আর মুক্তিবাহিনীর সদস্যদেরও এককভাবে পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখ সমর করে জিতে যাবার সক্ষমতা ছিল না। সুতরাং, ভারতের দিক থেকে এই সুযোগগুলো যেহেতু নেই, তখন বাংলাদেশকে মুক্ত বা পূর্ব পাকিস্তানকে দখল করা ছাড়া তাদের আর তো কোনো পথ ছিল না। কিন্তু নিয়াজি এটা কেন বুঝতে পারল না! এবং সেটা বুঝে ঢাকা রক্ষা করল না কেন, যখন দেখা যাচ্ছে যে, তার এই দুর্গনীতি ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে? অর্থাৎ নিয়াজির ওপর এই দোষগুলো দেওয়া হচ্ছে এবং বলা হচ্ছে তার পরিকল্পনা ভুল ছিল। একই সঙ্গে তারা বলছে যে, ঢাকার দিকে যখন ভারতীয় বাহিনী আসতে লাগল, চাঁদপুর বা অন্যান্য জায়গা হয়ে- যুদ্ধ না করেই একের পর এক দুর্গের পতন হয়েছে। তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। এবং একটা জায়গাতেই যুদ্ধ হয়েছে। সেটা হচ্ছে হিলিতে। হিলিতেও ১০ দিনের মতো যুদ্ধের পরে তারা চলে আসার সিদ্ধান্ত নিল। ভারতীয়দের সঙ্গে এ ছাড়া আর কোনো জায়গার যুদ্ধের উল্লেখ নেই। এমন কোনো বড়সড় যুদ্ধ হয়নি। ছোটখাটো কিছু যুদ্ধের পরেই পাকিস্তানিরা চলে এসেছে বা আত্মসমর্পণ করেছে। টাঙ্গাইলের কথা বলা হচ্ছে- সেখানে যে সৈন্যরা ছিল তারা ভারতীয় প্যারাট্রুপারদের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে এবং সেখানে তাদের অনেকেই মারা পড়ে। যশোর চলে গেছে, কুমিল্লা চলে গেছে। ঝিনাইদহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুষ্টিয়া, লাকসাম এভাবে প্রথম সপ্তার মধ্যেই প্রায় সবগুলোর পতন হয়ে গেছে। এরপর আর কোনো পথ ছিল না তাদের। অন্যদিক থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনী মুক্তিযোদ্ধা এবং স্থানীয় জনগণের সাহায্যে বাইপাস করে ঢাকার দিকে চলে আসতে থাকে। এই বাইপাস শব্দটা রিপোর্টে ব্যবহার করেছে পাকিস্তানিরা। ভারতীয়দের একটা পরিকল্পনা ছিল যে, তারা যুদ্ধ না করে এই বাইপাস দিয়ে ভেতরে ঢুকে যাবে। মুক্তিবাহিনীর সহায়তায় খুলনা, ফরিদপুর, দাউদকান্দি, চাঁদপুর এইসব জায়গা দিয়ে সবচেয়ে সহজ পথে ভারতীয় সব সৈন্য ঢাকার দিকে চলে আসে। তাছাড়া পাকিস্তানিদের ঢাকার দিকে ফেরত আসার পথও অনেক জায়গায় মুক্তিযোদ্ধারা রুদ্ধ করে দিয়েছিল। কোথাও ব্রিজ, কোথাও ফেরি, রাস্তা ধ্বংস করে দিয়ে পাকিস্তানিদের ফেরত আসাকে আটকে দিয়েছিল মুক্তিবাহিনী, কোনো কোনো জায়গায় সাধারণ মানুষেরা। এটা পাকিস্তানিদের জন্য একটা বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।


রিপোর্টে এরপর বলা হচ্ছে যে, এত সবকিছুর পরেও নিয়াজি যেটা করতে পারত তা হলো অন্তত দুই সপ্তাহ ঢাকাকে রক্ষা করতে পারত। এই দুই সপ্তার হিসাবটা তারা কীভাবে করছে? তারা হিসাব করছে যে, প্রথম সপ্তাটা ভারতীয় বাহিনীর প্রস্তুতিতে চলে যেত, আর পরের সপ্তায় যুদ্ধটা পরিচালিত হতে পারত। রিপোর্টে তারা বলছে, কিন্তু নিয়াজি সেই পথে যাননি। নিয়াজির সহযোদ্ধারাও সেই পথে যায়নি। ইতিহাস নিয়াজিকে স্মরণে রাখত, যদি নিয়াজি শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করে শহীদ হতো। কিন্তু তা না করে সে আত্মসমর্পণ করেছে।
বলা হচ্ছে, নভেম্বরে যখন যৌথবাহিনী বা ভারতীয়রা আক্রমণ শুরু করে দিল- তখনই পশ্চিম পাকিস্তানের উচিত ছিল ভারতের সাথে যুদ্ধে নেমে পড়া। তাহলে চাপটা তৈরি হতো। সেটা ছিল কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিষয়। কিন্তু ইয়াহিয়া খান তা করতে দুই সপ্তা দেরি করে ফেলেছে। সেটা করেনি বলেই মুক্তিবাহিনীর সাথে মিলে ভারতীয় বাহিনীর পূর্ব পাকিস্তান দখল করাটা এত সহজ হয়েছিল।
পরাজয়ের কারণ হিসেবে এই ঘটনাটাকেই তারা চিহ্নিত করছে এবং যেটা পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও জনগণের জন্য সবচেয়ে কালো দিন।
রিপোর্টে বলা হচ্ছে যে, রাজনীতির মাধ্যমে সমস্যার সমধান করা যেত। কিন্তু ইয়াহিয়া এবং নিয়াজি কারোরই এতে কোনো আগ্রহ ছিল না। তারা বরং মালেকের মতো একটা সমর্থনহীন মানুষকে গভর্নর এবং মন্ত্রী বানাল। যদিও গভর্নর মালেক ব্যক্তিগতভাবে সম্মানিত মানুষই ছিলেন, কিন্তু জনগণের মধ্যে এর কোনো সমর্থন বা প্রভাব তৈরি হয়নি। দ্বিতীয়ত, রিপোর্টে তারা বলছে, মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যখন পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে স্বাভাবিক ছিল তখন আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলাপের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি, যেখানে শেখ মুজিবুর রহমান তখন আমাদের হাতে। অতএব চাপ প্রয়োগ করাটা সহজ হতো।
রিপোর্টটা পড়লে বোঝা যায়- সেখানে নিয়াজিকে নানাভাবে দোষ দেওয়া হচ্ছে আর নিয়াজি আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলছে যে, আমি এটা করিনি, আমি ওটা করিনি। কিন্তু কমিশন বারবার বলছে, আমরা তোমাকে বিশ্বাস করি না।
এই রিপোর্টটা ছিল রাষ্ট্রীয়। পাকিস্তানের জনগণের কোনো অংশ এটি তৈরি করেনি। অর্থাৎ পাকিস্তান রাষ্ট্র এই পরাজয় ও বাংলাদেশের ওপর তাদের অনৈতিক কার্যকলাপকে নানাভাবে সামলাবার চেষ্টা করছে। নিজের সেনাবাহিনীকে বোঝানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু দেখা গেল ভুট্টো নিজেই একদিন সেনাবাহিনীর হাতে খুন হয়ে গেল।
পরাজয়ের পর তৈরি করা হামুদুর রহমান কমিশনের এই রিপোর্টের মাধ্যমেও আমরা বুঝতে পারি যে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ১৯৭১ সালে এবং বিশেষ করে পূর্ব পাকিস্তানে কতটা অদক্ষ ছিল। কতটা অপরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করে তারা ছিল, তাদের নিজেদের মধ্যেই কোনো সমন্বয় বা নিয়ন্ত্রণ ছিল না। সারেন্ডার করার সময়টা সম্পর্কে বলা হচ্ছে, হেডকোয়ার্টার থেকে নিয়াজিকে তখন বলা হয়েছে- তুমি যা ভালো বোঝ কর। অর্থাৎ সারেন্ডার করার সিদ্ধান্ত দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু এটা কীভাবে রক্ষা করা সম্ভব, সেই বিষয়টা পাকিস্তানিদের মাথায় আসেনি। বস্তুতপক্ষে পাকিস্তান যে একটা রাষ্ট্র ছিল না- একাত্তর সালের যুদ্ধটাও তার প্রমাণ করে।


রিপোর্ট থেকে বোঝা যায়, বাঙালিদের ওপর নির্যাতনের বিষয়গুলো স্বীকার করেছিল পাকিস্তান আর্মি। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, তারা এই নির্যাতনের কারণ হিসেবে নানারকম বানোয়াট অজুহাত তৈরি করার চেষ্টা করছে। আবার নিয়াজি বলছে, ধর্ষণ হয়েছিল- কিন্তু অভিযুক্তদের আমি শাস্তি দিয়েছি। যেখানে নিয়াজির বিরুদ্ধেই কমিশন বলছে যে, সে নিজেই একজন নারীলোলুপ মানুষ। তার অধীনে যারা ছিল তারাও একই রকম। এবং তার কোনো পরিকল্পনা ছিল না কীভাবে পূর্ব পাকিস্তানকে রক্ষা করা যায়। জেনারেল রহিম খানের কথা বলা হচ্ছে যে, এই কাপুরুষ ইতিপূর্বে প্রমোশনের জন্য তার দলিলপত্র গোপন করেছিল এবং ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে সে সারাক্ষণই নাকি মুক্তিবাহিনী আমাকে মেরে ফেলবে- মেরে ফেলবে বলে কান্নাকাটি করত। আরও অনেকের সম্পর্কে এমন নানারকম সমালোচনার মাধ্যমে এখানে দোষটা মূলত ইয়াহিয়া খানকে দেওয়া হচ্ছে। সে নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে নানারকম ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে; ভারতের সাথে কীভাবে যুদ্ধ করতে হয় সেই নীতিকে সে অনুসরণ করেনি ইত্যাদি।
বস্তুতপক্ষে রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান কতটা দুর্বল ছিল একাত্তরে তাদের পরিস্থিতি থেকে তা চূড়ান্তভাবে পরিস্কার হয়ে যায়। দ্বিতীয়ত, নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য তথাকথিত নিজের দেশের জনগণের ওপরই যখন তারা নির্যাতন, গণহত্যা চালাচ্ছে- তখন বোঝা যায় যে কোনো নিরিখেই এই পাকিস্তান একক রাষ্ট্র ছিল তা প্রমাণ করা যায় না। এবং সবশেষে সত্যটাই বাস্তবায়িত হলো।
পাকিস্তনের জনগণের জন্য এই পরাজয় ছিল একটা বিশাল ধাক্কা। ৯ মাস ধরে পাকিস্তানি গণমাধ্যম একের পর এক বলে গেছে যে, তারা কতটা ভালো অবস্থানে আছে- বলেছে মুক্তিবাহিনী কতটা খারাপ। মুক্তিযোদ্ধাদের বলেছে দুস্কৃতকারী। কিন্তু হঠাৎ করে যখন পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ করে বসল, তখন সেই গণমাধ্যম নিয়াজিকে নানাভাবে দোষারোপ করতে লাগল। তারা তখন বলেছে নিয়াজি কেন আত্মসমর্পণে রাজি হলো! সে কেন মরে গেল না? দ্বিতীয়ত, নিয়াজি যে বিমানবন্দরে গিয়ে ভারতীয় কমান্ডারকে গার্ড অব অনার দিয়েছে; এই অপমানজনক কাজটা সে কী করে করতে পারল? এবং তৃতীয়ত বলা হয়েছে, মুক্তিবাহিনী অধ্যুষিত সেই পাবলিক সারেন্ডারে সে কী করে থাকতে রাজি হলো? কিন্তু এসব রিপোর্ট যারা লিখেছে, তাদের হয়তো মাথায়ই নেই যে তখন নিয়াজির কোনো ক্ষমতা ছিল না। কী হবে না হবে, সেই সিদ্ধান্ত তখন নিয়াজি দিচ্ছে না, সিদ্ধান্তগুলো হচ্ছে অন্য জায়গায়।
পাকিস্তানের জনগণের ওপর ধাক্কাটা এই কারণে যে, হঠাৎ করে তারা শোনে পাকিস্তান ভেঙে গেছে, পূর্ব পাকিস্তান আর নেই। এটা তাদের জন্য একটা মানসিক যন্ত্রণার বিষয় হয়ে দাঁড়ায় এবং ৫০ বছর পরেও সেই যন্ত্রণা তারা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। মুক্তিবাহিনীর কাছে পরাজয়ের যন্ত্রণাটা যত না, তার চাইতেও বড় যন্ত্রণা ভারতের কাছে পরাজিত হওয়া। ভারতের কাছেও এখানে মূল বিষয় পাকিস্তান।


পাকিস্তান নামক অরাষ্ট্রের পতন ছিল অনিবার্
বরাবরের মতো বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসকে যদি অকস্মাৎবাদ অনুযায়ী বিশ্নেষণ করা হয়- তাহলে বলা হবে যে, ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পরে যদি ক্ষমতা হস্তান্তর হতো, তাহলে এই সংকট হতো না। কিন্তু বাস্তবে হতো কি হতো না- সেটা তো আমরা হলফ করে বলতে পারি না।
বলা হবে, নিয়াজি যদি যুদ্ধের এই উপযুক্ত পরিকল্পনাগুলো করত, তাহলে পাকিস্তান সফল হতো। জাতিসংঘে আলোচনার মাধ্যমে একটা যুদ্ধবিরতি বা সিজফায়ারের সিদ্ধান্ত হয়ে যেত। এবং পরিস্থিতিটা পাকিস্তানের পক্ষে চলে যেত।
কিন্তু এই সবকিছুই ধারণা- এগুলো হতে পারত, অথবা হতে পারত না। নিশ্চিত করে আমরা কোনোটাই বলতে পারি না। ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় যদি আমরা দেখি- ১৯৪৭ সালে যখন পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র গঠিত হলো, সেটি গঠিত হলো একটি অরাষ্ট্র হিসেবে। অরাষ্ট্র তো জন্ম থেকেই একের পর এক সংকটের সম্মুখীন হয়। সেটি তো টিকতে পারে না। তাই পাকিস্তান নামক এই অরাষ্ট্রেরও মৃত্যু অবধারিত ছিল। আর এই অবধারিত বিষয়টা বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে বারবার আসে। কিন্তু এই সমস্যাগুলো অস্বীকার করে এক ধরনের আদর্শবাদী বা অন্যান্য ডগম্যাটিক ভাবনাকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য রাষ্ট্রের যৌক্তিকতা দেখানো হলেও সেটা টেকে না। শেষ পর্র্যন্ত গিয়ে সেটা ধ্বংস হয়ই। আর পাকিস্তানের মতো অবাস্তব রাষ্ট্রের জন্য তো সেটা আরও বেশি সত্য। সেটা ১৯৪৭ সালের পর থেকে পদে পদে টের পাওয়া গেছে এবং শেষ পর্যন্ত একাত্তরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে সেটা ভয়াবহভাবে ধ্বংস এবং ব্যর্থ হয়। তবে এর মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হয় না যে, অপরাপর রাষ্ট্রগুলো সব সঠিক বা যৌক্তিক- কিন্তু পাকিস্তান কোনো অবস্থাতেই একটি যৌক্তিক রাষ্ট্র ছিল না। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। পাকিস্তানিদের পক্ষে যা স্বীকার করে নেওয়া কখনোই সম্ভব না। কিন্তু আমরা যদি ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় গিয়ে পাকিস্তানকে বিশ্নেষণ না করি- আমাদের পক্ষেও বোঝা সম্ভব নয় যে, কেন এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। আমরা অনেকেই বারবার বলে থাকি যে, এটা করলে এটা হতো, নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর হলে ভালো হতো ইত্যাদি। কিন্তু আমাদের তো বুঝতে হবে যে, পশ্চিম পাকিস্তানিদের পক্ষে আমাদের ক্ষমতা দিয়ে দেওয়া কখনোই সম্ভব ছিল না। বরং তাদের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে পরাজিত হওয়াটাই ছিল অবধারিত। কারণ পশ্চিম পাকিস্তানের কাছে বাংলাদেশ ছিল একটি উপনিবেশ। যদি এক রাষ্ট্র হতো তাহলে তো আর এই ঔপনিবেশিক সম্পর্ক হতো না। বাস্তবে পাকিস্তান কোনোদিনই এক রাষ্ট্র ছিল না। এই বাস্তবতাকে আমরা অনেকেই এখনও অস্বীকার করে থাকি। যার ভেতর দিয়ে পাকিস্তানকে বিশ্নেষণের বিভিন্ন রকম ধারা আমাদের দেশে তৈরি হয়েছে। কিন্তু সত্যিটা হলো কাঠামোগতভাবে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের কোনো অস্তিত্বই ছিল না একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বরের আগে। পাকিস্তানের জন্ম হয়েছে তার পরে। সেটি ভালো কি মন্দ, তা অন্য আলোচনা- কিন্তু এটি একটি রাষ্ট্র। ঠিক যেভাবে বাংলাদেশ একটি রাষ্ট্র।
[এই প্রসঙ্গ সমাপ্ত]