জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ভালোবাসলে সাম্প্রদায়িকতাকে ঘৃণা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেছেন, তোমরা বঙ্গবন্ধুকে ভালোবাসলে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, খাদ্যে ভেজাল ও জঙ্গিবাদকে ঘৃণা করবে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ফরিদপুর শেখ জামাল স্টেডিয়ামে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ৭টি বিদেশি ভাষায় উপস্থাপন এবং ভাষণ উৎসবের পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ গোটা জাতিকে স্বাধীনতার মঞ্চে উজ্জীবিত করেছিল। রক্ষাক্ত বিজয়ের ৪৮ বছর পরও তিনি আমাদের তারুণ্যের প্রতীক। এ সময় ফরিদপুরের স্মৃতিচারণ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি আজ চলে যাব। কিন্তু এ স্মৃতি কখনও ভুলব না। ১৪ মাস ফরিদপুরের কারাগারে ছিলাম। এখান থেকেই ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছিলাম।’

সভাপতির বক্তব্যে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্বব্যাপী ছড়িতে দিতেই ৭টি ভাষায় উপস্থাপনের প্রতিযোগিতা হয়েছে। শিক্ষার্থীরা প্রায় তিন মাসের প্রচেষ্টায় ভাষণ প্রস্তুত করেছে। এ সময় ৭ মার্চের ভাষণকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবি জানান তিনি।

এ সময় ফরিদপুর-২ আসনের এমপি শাহাদাব আকবর লাবু চৌধুরী, পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ, ফরিদপুর পৌর মেয়র অমিতাভ বোস, হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে অনুষ্ঠানে স্প্যানিশ ভাষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তানভিন ইসলাম, ফারসিতে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাজমুল ইসলাম, আরবিতে ফরিদপুরের বাকিগঞ্জ মাদ্রাসার সাইফুল ইসলাম, ফ্রেঞ্চ ভাষায় ঢাবির কৌশিক মালো, ইংরেজিতে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ফারহানা জামান, চীনা ভাষায় বিটিএসের শিক্ষক মারুফ আহমেদ, হিন্দিতে সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের শ্রেয়া তুলসিয়ান প্রীতি, জাপানিজে দীলিপ মণ্ডল ও বাংলা ভাষায় আফিয়া রহমান বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ উপস্থাপন করেন।

এর আগে ফরিদপুর সার্কিট হাউসে জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর সঙ্গে মতবিনিময়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলন চোরা বালিতে আটকে গেছে। ঢাকঢোল পিটিয়ে শুরু করলেও শেষ করছে প্যানপ্যানানিতে। পদযাত্রা মানববন্ধনে ঠেকেছে। যে আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা নেই, তা কোনো দিন সফল হয় না।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলনের উদ্দেশ্য দেশে অশান্তি সৃষ্টি করা। কিন্তু তাদের নৈরাজ্য প্রতিহত করতে হবে। আমরা কাউকে আক্রমণ করব না। তবে গায়ে পড়লে ছাড় দেব না।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি ফরিদপুরের নেতাকর্মীকে বলব– অস্তিত্বের স্বার্থেই জেলাকে পরগাছামুক্ত করুন। ঘরের কলহ দূর করুন। নিজেদের মধ্যে বিভেদ থাকলে মূল লক্ষ্য পূরণ হবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন খুব বেশি দূরে নেই। শুধু ইউপি নির্বাচনে জিতলে হবে না, জাতীয় নির্বাচনেও সবক’টি আসনে জয়ী হতে হবে। এ জন্য এখনই কাজ শুরু করতে হবে।’

জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শামীম হকের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য বিপুল ঘোষ, বিশিষ্ট শিল্পপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এ. কে. আজাদ, সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ, সহসভাপতি ফারুক হোসেন, শ্যামল ব্যানার্জি, ফরিদপুর পৌর মেয়র অমিতাভ বোস, উপজেলা চেয়ারম্যান এম এম মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া, আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা, জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার, পুলিশ সুপার. মো. শাহজাহান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।