মানুষের জিন ক্লোনিং নিষিদ্ধ কেন? কোষ নিজেই নিজেকে গিলে ফেলে কীভাবে? এমন কৌতূহলী ও বুদ্ধিদীপ্ত নানা প্রশ্নের মাধ্যমে অজানাকে জানতে শিক্ষার্থীরা আগ্রহী ছিল বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড (বিডিবিও)-সমকাল আঞ্চলিক পর্যায়ের উৎসবের প্রশ্নোত্তর পর্বে। জমজমাট এ আয়োজনে অতিথিরাও শিক্ষার্থীদের সব প্রশ্নর উত্তর দেন। সকালে শুরু হয়ে প্রাণবন্ত এ উৎসব চলে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত। পুরো অনুষ্ঠানজুড়েই ছিল তারুণ্যের উচ্ছ্বাস।

বিজ্ঞানচর্চায় অধিক গুরুত্ব দেওয়ার আহবানের মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক পর্যায়ের শেষ উৎসব ১ এপ্রিল কুমিল্লা জিলা স্কুলে। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের সবাই চর্চার মাধ্যমে বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনের তাগিদ দেন। প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী এ উৎসব মিলনমেলায় পরিণত হয়। এ উৎসবে অলিম্পিয়াড পরীক্ষার মাধ্যমে জাতীয় উৎসবে অংশগ্রহণের সুযোগ পেয়েছে ১৫০ জন।

বেলা ১১টায় বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম। উদ্বাধনী বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কারের কারণেই আধুনিক জগৎটা এগিয়ে চলেছে অতি দ্রুত। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় বাংলাদেশের সফলতা এসেছে। বিজ্ঞান শিক্ষায় প্রসারের বিজ্ঞানচর্চায় আরও মনোনিবেশ করার প্রয়োজন। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে অতিথিরা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণ করেন। শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ সরাসরি কেউবা লিখিতভাবে প্রশ্নের উত্তর জানতে চায়। উত্তর দেন অলিম্পিয়াড কুমিল্লা অঞ্চলের আহবায়ক মেহেরুননেছা, বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট কুমিল্লার ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ফাহমিনা ইয়াসমিন, ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ফরিদ আহমেদ প্রমুখ।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু জাফর খান। তিনি বলেন, আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রই আজ বিজ্ঞান দ্বারা প্রভাবিত। জীববিজ্ঞানকে বিজ্ঞানের গুরুত্বপূর্ণ শাখা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞানচর্চায় আমরা এগিয়ে গেলে বিশ্বের উন্নত সব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেরও পিছিয়ে থাকার সুযোগ নেই।

অতিথির বক্তব্য দেন– কুমিল্লা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর হাসনাত আনোয়ার উদ্দীন আহমেদ, কুমিল্লা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আবদুল হাফিজ, নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাশেদা আক্তার, কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ নার্গিছ আক্তার, সমকালের কুমিল্লা প্রতিনিধি মো. কামাল উদ্দিন, অলিম্পিয়াড সমন্বয়কারী অনিরুদ্ধ প্রামাণিক প্রমুখ।

প্রতিযোগিতায় কুমিল্লার ৩৫টি স্কুল ও কলেজের প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। ‘জুনিয়র’, ‘সেকেন্ডারি’ ও ‘হায়ার সেকেন্ডারি’– তিন ক্যাটাগরিতে ১৫০ জন মেডেল ও সনদপত্র পায়। তাদের মধ্যে জুনিয়র ক্যাটাগরিতে শাহেনুর আক্তার নুর, সেকেন্ডারি ক্যাটাগরিতে শাহেদ ইকবাল এবং হায়ার সেকেন্ডারিতে ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য চ্যাম্পিয়ন’ হয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ছাত্রী ফারহা তাবাসসুম অরপা। বিজয়ীদের হাতে মেডেল ও সনদপত্র দেওয়ার পাশাপাশি সম্মাননা তুলে দেন অতিথিরা।