ঢাকা মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

চোখ বদলে গেলে

চোখ বদলে গেলে

কোলাজ

এনামুল রেজা

প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫ | ২২:৪৬

খুব সামান্য কারণে রুবার সঙ্গে ঝগড়া লেগে গেল। অফিস থেকে ফেরার সময় এক বোতল ভিনেগার আনতে বলেছিল রুবা। আনোয়ার স্বভাবদোষে ভুলে গেছে। রুবা বলল, ‘ইচ্ছা কইরা আনো নাই।’
এতেই চড়ে গেল মেজাজটা, ‘ফাও কথা বলবা না তো। অফিসের এত চাপ, আর তোমার যখন-তখন খুচখাচ এইটা-সেইটা আনতে বলা কি মনে থাকে?’
‘না এইসব কেন মনে থাকবে। মন তো দিয়া রাখছ কোনো কচি মাইয়ার ইনবক্সে।’
‘নোংরা কথা কইবা না। সাবধান বইলা দিতেছি। ভাবছ তোমার কোনো খবর আমি রাখি না?’  
তুচ্ছ বিষয় নিয়ে শুরু হওয়া কাইজাটা যেন বছরের পর বছর ধরে জমে থাকা ক্ষোভ টেনে আনল দুজনের মাঝখানে। ওরা, চল্লিশোর্ধ্ব আনোয়ার আর রুবা, যাদের প্রায় মধ্যবয়সী দম্পতি বলা যাবে, একে অন্যের দিকে বিবমিষা নিয়ে চিৎকার ছুড়ে দিতে লাগল। আনোয়ারের মনে হলো: অসহ্য এই মহিলা। দিনের পর দিন শুকিয়ে পাটকাঠির সমান হয়ে উঠছে, এটা-ওটা অসুখ লেগেই আছে বছরভর, আর মুখে কোনো প্রশান্তি নাই, সারাদিন অফিস সেরে বাসায় ফিরে ওকে দেখলে ক্লান্তি আর বিরক্তি কয়েক গুণ যেন বেড়ে যায়। রুবার মনও এই ভেবে ঘৃণায় ছেয়ে গেল: যত বয়স হচ্ছে লোকটা আরও কুৎসিত হয়ে উঠছে, এমন মোটা যে আজকাল তার গা থেকে কেমন যেন চর্বির একটা দুর্গন্ধ বের হয়, যেন ও আর মানুষ নেই, একটা পশু হয়ে গেছে।
গনগনে রাগে কেঁপে ডাইনিং টেবিলের ওপরে রাখা কাচের জগটা আছাড় মেরে বাইরে বের হয়ে এলো আনোয়ার। রাত ন’টার মতো বাজে। যদিও আরও বেশি মনে হচ্ছে। মানুষজনের চলাচল কম। ক’দিন ধরে দেশজুড়ে চলছে শৈত্যপ্রবাহ। মোমিন মেমোরিয়াল রোডের এক মাথায় দাঁড়িয়ে অন্য মাথা পরিষ্কার দেখা যায় না– এমন কুয়াশা নেমেছে শহরে। সেই কুয়াশার মাঝখান থেকে অকস্মাৎ একটা-দুটা রিকশা বা ফগলাইট জ্বালানো প্রাইভেট কার বেরিয়ে এসে তাকে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। ঠান্ডা যেন প্রতি মুহূর্তে বেড়ে চলে।
খাকি রঙের মোটা শালটা গায়ে শক্ত করে পেঁচিয়ে কতক্ষণ হেঁটেছে আর কোথায় চলে এসেছে রাগের মাথায়– সে বুঝল না প্রথমে। অবশ্য এই এলাকায় ভাড়াটিয়া হিসেবে এসেছে বেশিদিন হয়নি। ঘুরে দেখার সময়ও পায়নি তেমন। একটা কানাগলির মতো জায়গায় এসে সে থামল। কাছেই চায়ের দোকানটার সামনে বসে কেতলি পরিষ্কার করছে এক লোক। এর কাছে তো তাহলে চা পাওয়া যাবে না, তবু এগিয়ে গেল।
‘দোকান বন্ধ কইরা দিলেন নাকি?’
‘না বাই। বসুম আরও কিছুক্ষণ। সিগ্রেট লাগব?’
‘লাগব। কিন্তু চা তো নাই দেখতেছি।’
‘চা আছে। হিটারে গরম পানি দিয়া দিমু, আর টিপেক।’
কাঠের বেঞ্চটায় বসে মন একটু শান্ত হলো আনোয়ারের। এমন বাজেভাবে সে রিঅ্যাক্ট না করলেও পারত। ছেলেমেয়েরা বড় হয়ে গেছে। এখনও এভাবে তারা হাজবেন্ড-ওয়াইফ ঝগড়া করে, জিনিসটা ভালো দেখায় না।
‘বাই?’
চাঅলার ডাকে সে ফিরে তাকায়, ‘কিছু কইলা?’
‘মনডা খারাপ নাকি বাই?’  
‘আর খারাপ। কাজ করতে করতে মনে হইতেছে শহীদ হইয়া গেলাম বুচ্ছ। রোজ বাসায় ফিরে যা-ই দেখি, বিরক্ত লাগে।’
‘শুধু বাসায় ফিরা? নাকি সব সময়?’
‘কী?’
‘মানে যাই দেখেন বিরক্তি যে লাগে, এইটা সারাদিন হয়? কোনো কিছুরেই সুন্দর লাগে না, ঠিক ধরছি কি?’
আনোয়ার কিছুটা থমকে যায়। একজন চাঅলার সঙ্গে ব্যক্তিগত আলাপ করতে তার রুচিতে বাধে। কিন্তু লোকটা যা বলছে ভুল না। সুন্দর যে কী জিনিস, সে আসলেই ভুলে গেছে। তার চোখ ইদানীং যা-ই দেখে, শুধু অসুন্দরই দেখে, যেন তার পৃথিবী থেকে সুন্দর বিদায় নিয়েছে।
‘কী বাই, ভুল বলছি?’
‘না রে, ভুল বলেন নাই। কিন্তু কী করার আছে? এ তো কোনো অসুখ না যে সাইরা যাবে।’
ইলেক্ট্রিক হিটারে পানি ফুটে গেছে ততক্ষণে। একটা কাপে ধোঁয়া ওঠা সেই পানি ঢেলে চিনি মেশাল লোকটা। কুচি করে রাখা আদা ছেড়ে দিল এক চিমটি। তারপর ডুবিয়ে দিল একটা টি প্যাক, ‘আপনের যা হইছে তা অসুখই, তবে সাইরা যাবে বুঝলেন?’
‘সেরে যাবে?’
‘হ।’
টিমটিমে ফ্যাকাশে আলোয় চাঅলার মুখের দিকে তাকাল আনোয়ার। লোকটার চোখ দুটো আশ্চর্য উজ্জ্বল আর স্বচ্ছ, ওর ওপাশে যেন এক চির আনন্দের জগৎ তাকে হাতছানি দিয়ে ডাকে। নিঃশব্দে চা খেয়ে সে উঠে দাঁড়ায়। বিল দিয়ে রাস্তায় নেমে দেখে কুয়াশা কিছুটা কমে এসেছে। গভীর রাতে বাসায় ফিরে চুপচাপ সে ডাইনিং টেবিলে এসে বসে। রুবা খাবার গরম করে সাজিয়ে দেয় সামনে। খাওয়ার সময়টা বিনা বাক্যব্যয়ে কাটিয়ে দেয় ওরা। রুশা আর রাফসান অনেক আগেই খেয়ে নিয়েছে। রুবা এমন ঝগড়ার পরেও না খেয়ে বসেছিল তার জন্য। আনোয়ারের খারাপ লাগে। আহা, এই মেয়েটা কত বছর ঘর করল তার সঙ্গে, সংসার আর সন্তান জন্ম দেওয়ার একটা আলাদা ভারও তো আছে। বিছানায় ফিরে অনেক দিন পর ওরা ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করে। শীতের দীর্ঘ রাতে একে অন্যের শারীরিক উষ্ণতার আরামে আনোয়ারের মনে হয়, জীবনের প্রতি কি সে অযথাই বহুকাল মুখ ফিরিয়ে রেখেছিল?
তার জীবনটা অবশ্য বদলে গেল পরদিন সকাল থেকে। ঘুম ভেঙে রুবার মুখের দিকে চেয়ে সে ভাবল, কী সুন্দর এই মুখ। এমন বয়সেও এত কোমলতা কীভাবে নিজের মুখে ধরে রেখেছে তার বউ? রুশা আর রাফসান দুজনেই ক্লাস সিক্সে উঠেছে এবার। আনোয়ার ওদের গাড়ি করে স্কুলে নামিয়ে দিয়ে ভাবল সাদা পোশাক পরা দুটি মানবসন্তান নয়, যেন দুটি তাজা কাঠগোলাপ স্কুলের ব্যাগ কাঁধে গেটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কর্মস্থলে পৌঁছেও সে অবাক হয়ে গেল। তার ইমিডিয়েট বস নাসের আব্দুল্লাহ যে এমন শান্ত সৌম্য ব্যক্তিত্ব– আগে কোনো দিন মনে হয়নি। বসের রুমে হাসিমুখে অনেকক্ষণ সে বসে থাকায় নাসের আব্দুল্লাহ অবাক হয়ে জানতে চাইল, ‘কী আনোয়ার, মনটা এত ফুরফুরে যে? ঘটনা কী, বলেন তো।’
‘এমনি স্যার, এমনি। ভাবির আলসারের সমস্যাটা তো কাইটা গেছে তাই না?’
‘হ্যাঁ আগের চেয়ে বেশ ভালো আছে। আর আপনাকে তো যেতে বলেছে আমার মিসেস। রুবাকে নিয়ে একদিন চলে আসেন না বাসায়।’


‘আসব স্যার, নিশ্চয় আসব।’
সারাদিন অফিসে যেই সামনে পড়ল হাসি বিনিময় করল আনোয়ার। কারণ সবাইকেই এমন সুখী দেখাচ্ছে যে না হেসে পারল না। সন্ধ্যায় ট্রাফিক সিগন্যালে পপকর্ন বেচতে এসে হতভম্ব হয়ে গেল এক হকার। ব্যাকসিট ভর্তি করে বিশ প্যাকেট পপকর্ন কোনো কারণ ছাড়াই সে কিনে নিল। এলাকায় প্রবেশের মুখে হুইলচেয়ার নিয়ে এক পঙ্গু ফকির বসে, বিকেলের শেষ আলোয় ছেলেটার দিকে তাকিয়ে নিজের মৃত ছোট ভাইয়ের মুখটা মনে পড়ল তার। একই গৌর বর্ণ, খাড়া নাক, গোলাকৃতির মুখ। এ কি রোজ বসে? তাহলে এই সাদৃশ্য এতদিন কেন চোখে পড়েনি? গাড়ি থেকে নেমে পপকর্নের প্যাকেটগুলো ছেলেটাকে দিলে সে বিরক্ত হয়ে বলল, ‘এডি দিয়া আমি কী করুম? পপন খাই না।’
বেঁচে থাকা নিয়ে বছরের পর বছর ধরে ক্লান্ত ও ধ্বস্ত হয়ে পড়া আনোয়ার আবিষ্কার করল যে তার নতুন করে চোখ ফুটেছে। পৃথিবীটা যে এত সুন্দর, আজ অবধি কখনও মনে হয়নি। অথচ ইদানীং মানুষ থেকে বস্তু, সবকিছুতেই কোনো না কোনো বিস্ময় ও আনন্দের উপাদান সে খুঁজে পায়। আর কে জানত, এই সামান্য দৃষ্টিভঙ্গির বদল তার অসুখী সংসারেও নিয়ে আসবে সুখের একটা তীব্র স্রোত। রুবা আগের চেয়ে সুস্থ হয়ে উঠল, গোঁ ধরে গ্রামের বাড়িতে পড়ে থাকা আব্বা-আম্মা চলে এল একদিন বিনা নোটিশে। রাফসান আর রুশাও যেন আগের চেয়ে বেশি হাস্যোজ্জ্বল। রোজ সকালে নিজের বৃদ্ধ বাপকে নিয়ে পার্কে হাঁটতে বের হয় সে। ওজনটা কমিয়ে ফেলার একটা আন্তরিক তাগিদ অনুভব করে।
এমন সুখের দিনগুলোতেই এক সন্ধ্যায় অফিস থেকে ফেরার সময় সে দৃশ্যটা দেখতে পায়। একটা অটোরিকশা আর বাসের মাঝখানে ফেঁসে গিয়ে উল্টে যায় একটা মোটরবাইক। বাইকের পেছনে বসেছিল এক মহিলা। আনোয়ার মুহূর্তের ফেরে দেখে বাসের চাকাটা চলে গেছে রাস্তায় ছিটকে পড়া মহিলার মাথার ওপর দিয়ে। রক্ত-মগজ-হাড়ের একটা দলা পাকিয়ে ওঠে জায়গাটায়। গাড়ি থেকে সে নামতে নামতে ভিড় জমে। ভিড়ের একজন হয়েই আনোয়ার দৃশ্যটার দিকে তাকিয়ে থাকে। বোরকা পরা মহিলার সারাদেহ অক্ষত, যদিও রক্তে ভেসে গেছে। মাথাটা শুধু নেই। ডেডবডি জড়িয়ে ধরে এক লোক চিৎকার করে কাঁদছে। আনোয়ারের গা শিরশির করে, তবে ভয়ে নয়। দৃশ্যটাকে তার মনে হয় একটা জান্তব শিল্পকর্ম– অনিন্দ্য অপার্থিব কোনো দৃশ্য। কিন্তু এমন লাগার যে কথা নয় এও সে বোঝে, মনের খুব গভীরে একটা নিচু কণ্ঠে কেউ বলে যায়, এ দৃশ্য সুন্দর নয়। কিন্তু আনোয়ার জ্বলজ্বলে চোখ মেলে দুর্ঘটনার স্পটে অ্যাম্বুলেন্স আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করে। রাস্তায় লেগে থাকা মাংস ও মগজের দলা, ছাপছাপ রক্ত। অসহ্য রকম এক আনন্দের বোধ আক্রান্ত করে তাকে। বাসায় ফিরে অবশ্য ঘটনাটা সে চেপে যায়। রাতে বিছানায় এতই সক্রিয় হয়ে ওঠে যে তা রুবাকে বিব্রত করে তোলে। রুবা ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়তে চাইলেও তার ক্লান্তি আসে না। এক পর্যায়ে সে বাথরুমে ঢুকে সাবানের সাহায্য নিয়ে নিজেকে শান্ত করে। রুবা বিস্মিত কণ্ঠে বলে, ‘এটা কী করলা?’ আনোয়ার হাসিমুখে জবাব দেয়, ‘রাগ করলেও তোমারে এমন চান্দের মতো উজ্জ্বল দেখায়, আগে খেয়াল করি নাই।’ তড়িদাহত হয়েছে এ রকম ভঙ্গিতে রুবার হাঁ হয়ে যাওয়া মুখের দিকে চেয়েও আনোয়ারের ভালো লাগে।
এভাবে কিছুদিন কেটে যাওয়ার পরেই সে আসলে বুঝতে পারে যে তার পৃথিবীতে অসুন্দর বলে আর কিছু অবশিষ্ট নেই। এমনকি এক ভোরে পার্কে হাঁটতে গিয়ে আনোয়ার একটা হত্যাকাণ্ডের সাক্ষী হয়ে যায়। তার উল্টোদিক থেকেই আসছিল সমবয়সী লোকটা। পরনে ট্র্যাকসুট। লোকটার দিকে কোত্থেকে প্রায় ছুটে এল এক হুডি পরা মানবাকৃতি, ট্র্যাকসুটঅলার মাথায় একটা পিস্তল তাক করে ট্রিগার টেনে দিল। তারপর খুব ধীরপায়ে হেঁটে চলে গেল যেদিক থেকে এসেছিল, যেন-বা কিছুই হয়নি। এমন ঘটনা আনোয়ার সিনেমায় দেখে এসেছে। বাস্তবে একটা জ্যান্ত লোক গুলি খেয়ে মাটিতে পড়ে গেলে সে বুঝল, এই দৃশ্য সিনেমার চেয়েও থ্রিলিং। ট্র্যাকসুট পরা লোকটা নিশ্চয় হারামি ধরনের কেউ। হতে পারে হুডিঅলার জীবনকে নানাভাবে তছনছ করে আসছিল। সেজন্যই আজ প্রতিশোধ নিল হুডি। তার সামনে মাথায় গুলি খেয়ে রক্তাক্ত পড়ে থাকা লোকটির চেয়ে খুনি হুডির প্রতি একটা সহমর্মিতা নিয়ে আনোয়ার আবার দৌড়াতে শুরু করল।  
কিন্তু পার্ক থেকে বাসায় ফিরে সে দেখতে পেল রুবা কোথাও যাওয়ার জন্য রেডি হয়েছে। দুইটা বড় লাগেজ ড্রয়িংরুমে রাখা। রুশা আর রাফসান বসে আছে সোফায়।
‘তোমরা যাবা নাকি কোথাও? কী হইছে?’
‘আমরা উত্তরশাহী যাব আনোয়ার। আব্বা-আম্মা আছে, আশা করি তোমার অসুবিধা হবে না।’
রুবা কথাগুলো বলে চিবিয়ে চিবিয়ে। কিন্তু আনোয়ারের মনে হয়, তাই তো, কতদিন নিজের বাড়িতে যায় না রুবা। পুরোনো আমলের গ্রামের মেয়েদের মতো রুবা যেন নাইওরে যাচ্ছে। গম্ভীর হয়ে থাকা ছেলেমেয়েদের মুখ দেখেও তার মন থেকে সুন্দরের আচ্ছন্নতা যায় না। রুবা বাচ্চাদের সঙ্গে করে চলে যায়।
রাত্রি গভীর হলে উত্তেজনায় আনোয়ার ছটফট করে। এই চার দেয়াল, সিলিংয়ের নকশা, জানালার পর্দা এত অসহ্য সুন্দর। রুবার চলে যাওয়া সুন্দর। রক্তাক্ত পড়ে থাকা মৃতদেহ সুন্দর। কিন্তু এখনও তার জীবনে কোনো স্থিরতা নেই কেন? অনেক দিন আগের এক রাতের মতো আনোয়ার আবার রাস্তায় নামে। শীত তখন কমে এসেছে মায়ানগরের বুকে। বহু সময় ধরে হাঁটার পর কানাগলির মাথায় সেই চায়ের দোকানটা খুঁজে পায় সে।
তাকে দেখে চাঅলা বলে, ‘আইছেন বাই? কী অবস্থা বলেন।’
‘চা হবে?’
‘হইবো, বহেন।’
আনোয়ার ফ্যাকাশে আলোর নিচে লোকটার চোখের দিকে তাকায়। এমন ঘোলা চোখ কেবল অন্ধদের হতে পারে, কিন্তু লোকটা অন্ধ নয় সে জানে। তার মনে পড়ে শেষবার যখন দেখেছিল, ঐ চোখ দুটো আরেক রকম ছিল। এখন বদলে গেছে।

আরও পড়ুন

×