ঢাকা রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

খেজুর রসের ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে

খেজুর রসের ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে

রতন কুমার তুরী

প্রকাশ: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ | ০৬:৩৩

গ্রামে একসময় দেখা যেত সারি সারি খেজুর গাছ, বর্তমানে সেখানে তেমনটি দেখা যায় না। ফলে সেসব জায়গার মানুষকে শীত মৌসুমে অনেক দূর থেকে খেজুরের রস এনে খেতে হয়। এখন যা খেজুরগাছ আছে, বেশির ভাগ উপকূলীয় অঞ্চলে। 
গাছিরা খেজুরগাছের চাঁছা ডগায় বাঁশের তৈরি বিশেষ নল লাগিয়ে সংগ্রহ করেন রস। মাটির হাঁড়িতে ফোঁটায় ফোঁটায় খেজুরের রস জমা হয়। তবে আজকাল প্লাস্টিকের বোতলেও রস আহরণ করা হয়। এই রস বাজারে বিক্রি হয়। তা থেকে হয় নানা ধরনের পিঠা। শীত মৌসুমে চলে খেজুরের রস, গুড়, পিঠাপুলি আর পায়েস খাওয়ার পালা। নতুন গুড়ের মিষ্টি গন্ধে আমোদিত হয়ে ওঠে গ্রামবাংলা। বর্তমানে সারাদেশে খেজুরগাছ কমে যাওয়ায় পিঠাপুলি বানাতে দেশের মানুষকে উত্তরবঙ্গের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়।
দূর অতীতে গ্রামে যেখানেই পুকুর ছিল, তার পাড়ে কমপক্ষে চার-পাঁচটা খেজুরগাছ থাকত। বাড়ির পেছনে এবং স্বল্প পরিমাণ অনাবাদি জমিতেও খেজুরগাছের দেখা মিলত। মূলত তখন মানুষ অর্থনৈতিক প্রয়োজনে নয়, অনেকটা ঐতিহ্য ধরে রাখতেই খেজুরগাছ লাগাত। এসব গাছ থেকে শীত মৌসুমে রস সংগ্রহ করে বিভিন্ন ধরনের পিঠাপুলি বানিয়ে পরিবারের সবাই খেত এবং আত্মীয়স্বজনকেও দিত। এখন খেজুরগাছ কমে গেছে। খেজুরগাছের জায়গা দখল করে নিয়েছে অন্যান্য গাছ। খেজুরগাছ কেটে সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে বসতভিটা। ফলে খেজুরগাছ ক্রমে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে হারিয়ে যেতে বসেছে আমাদের ঐতিহ্যের খাবার খেজুরের রস। সময় এসেছে বাংলার ঐতিহ্যবাহী খাবার খেজুরের রসকে টিকিয়ে রাখতে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে খেজুরগাছ লাগিয়ে তা রক্ষণাবেক্ষণ করার। 

nকলেজ শিক্ষক, প্রাবন্ধিক

আরও পড়ুন

×