ঢাকা শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ঐতিহ্য

২০০ বছরের খেলারাম দাতার কোঠা

২০০ বছরের খেলারাম দাতার কোঠা

নবাবগঞ্জের কলাকোপায় অবস্থিত ২০০ বছরের পুরোনো এই স্থাপনা

শওকত আলী রতন

প্রকাশ: ২৯ জুন ২০২৪ | ০০:২৯ | আপডেট: ২৯ জুন ২০২৪ | ১৬:০৭

প্রাচীন স্থাপত্যের নিদর্শন ছড়িয়ে রয়েছে দেশজুড়ে। এমনই এক কালের সাক্ষী খেলারাম দাতার কোঠা। ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার ইছামতি নদীর কোলঘেঁষে কলাকোপায় প্রায় ২০০ বছর আগে গড়ে তোলা হয় শৈল্পিক কারুকার্যে নির্মিত এ ভবন। 

এই কোঠা প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য কোথাও পাওয়া যায়নি। তবে এ নিয়ে এলাকায় নানা কথা প্রচলিত আছে। কেউ বলেন, খেলারাম ছিলেন জমিদার। কারও মতে, তিনি ভয়ানক দস্যু ছিলেন। তবে খেলারামের দানের হাত ছিল বড়। তিনি ধনীদের কাছ থেকে ডাকাতি করে টাকা-পয়সা, মালপত্র গরিবদের বিলিয়ে দিতেন। কথিত আছে, খেলারাম দাতার বাড়ি থেকে ইছামতীর পাড় পর্যন্ত সুড়ঙ্গ পথ ছিল। নদীপথে ধনসম্পদ এনে এ সুড়ঙ্গ পথেই বাড়ি নিয়ে আসতেন তিনি। প্রচলিত তথ্যমতে, ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দের মাঝামাঝি সময়ে বর্তমান ময়মনসিংহ জেলার তৎকালীন জমিদার খেলারাম তাঁর বংশীয় লোকজনের সঙ্গে দেখা করতে কলাকোপায় আসতেন। আসা-যাওয়ার মধ্যে এ স্থানটি তাঁর পছন্দ হয়ে যায়। পরে অস্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য একটি দ্বিতল পাকা ভবন নির্মাণ করেন।

খেলারামের দ্বিতল এ বাড়িটির দৈর্ঘ্য-প্রস্থ প্রায় সমান। ভবনের নিচ তলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ২০টির মতো সুরম্য কক্ষ রয়েছে। দোতলায় মোট ৯টি গম্বুজ রয়েছে। মাঝখানের গম্বুজটি আকারে অনেক বড়। প্রতিটি গম্বুজের ভেতরের অংশে চীনা মাটির কারুকার্যে তৈরি করা হয়। ভবনটির মাটির নিচে একটি গোপন কক্ষ রয়েছে বলে জানা যায়। দীর্ঘদিন অযত্নে অবহেলায় পড়ে থাকায় দেয়ালজুড়ে ফাটল ও ওপরের আস্তরণ খসে পড়ে ভবনটি হুমকির মুখে পড়ে। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় গত বছর বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ খেলারামের কোঠা সংরক্ষণের দায়িত্ব নেয়। এরপর মূল নকশা ঠিক রেখে সংস্কার করা হয় ভবনটি। বর্তমানে খেলারামের কোনো আত্মীয়স্বজন বা বংশীয় লোকজন কলাকোপায় বসবাস না করার কারণে ভবনটি সম্পর্কে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া যায় না। তবুও দৃষ্টিনন্দন খেলারামের কোঠাটি দেখার জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ আসেনন নবাবগঞ্জের কলাকোপায়। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকার কথা থাকলেও, অধিকাংশ সময় তা বন্ধ থাকে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক আফরোজা খান নিপা বলেন, ‘এ কোঠা দেখাশোনার জন্য অস্থায়ীভাবে একজন লোক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অচিরেই স্থায়ী লোক নিয়োগ দেওয়া হবে।’

আরও পড়ুন

×