রাশিফল ২০২৫
যেমন যাবে বাংলাদেশ
![যেমন যাবে বাংলাদেশ যেমন যাবে বাংলাদেশ](https://samakal.com/media/imgAll/2025January/untitled-11-1735927341.jpg)
অলংকরণ :: বোরহান আজাদ
জ্যোতিষ সাগর ড. আব্দুল হাদী
প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারি ২০২৫ | ০০:০২ | আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৬:৫১
বিশ্বাস থাকুক কিংবা না-ই থাকুক, রাশিফলে আগ্রহ কম-বেশি সবারই আছে। ২০২৫ সালটি কেমন যাবে– এই প্রশ্ন সবার মনে। চাকরি, ব্যবসা, অর্থনীতি, প্রেম, রাজনীতি, সমাজ, বিশ্ব ও ব্যক্তিজীবনের নানান দিকের খোঁজ জানাচ্ছেন জ্যোতিষ সাগর ড. আব্দুল হাদী
-------------------------------------------------------------------------
মঙ্গলের বছর ২০২৫ খুবই ঘটনাবহুল হবে, কারণ মঙ্গল সম্বন্ধে একটি কথা আছে– মঙ্গল মৃত্যু এবং ধ্বংসের প্রতীক। আবার একে ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারলে তা সৃষ্টিতে বা উন্নতিতে সাহায্য করে। কোনটি আমরা চাইব, তার ওপর নির্ভর করে ধ্বংস বা অগ্রগতি। বাংলাদেশের ভ্রূণের জন্ম ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ অর্থাৎ ২৫ মার্চ রাত ১২:০১ মিনিটে, আর ভূমিষ্ঠকাল ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৪:৩১ মিনিটে, যখন তৎকালীন পাকিস্তানি সৈন্যদের পূর্ব পাকিস্তান অংশের অধিনায়ক নিয়াজি সই করেন আত্মসমর্পণপত্রে। পাশ্চাত্য জ্যোতিষ মতে, বাংলাদেশ ধনু রাশি। তখন রবি ছিল ২৩ ডিগ্রি–৪৮´ ধনুতে আর সময়টি অর্থাৎ লগ্ন ছিল ১০ ডিগ্রি–৩১´ মিথুনে। জন্মকালে ধনুরাশিতে রবি, বৃহস্পতি, বুধ, চন্দ্র ও নেপচুন ছিল। বাংলাদেশের জন্মকালের গ্রহের অবস্থানের জন্য বাংলাদেশ বিপদমুক্ত থাকবে অনেক দিক থেকেই। হঠাৎ অগ্রগতির সম্ভাবনা আছে। এ বছরটি বাংলাদেশের জন্য পৃথিবীর কাছে মাইলফলক হয়ে থাকবে। বুধ ও চন্দ্র বৈরী অবস্থায় আছে বলে দেশের শাসনভার যাদের হাতে, তাদের খুব বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কারও সঙ্গেই বৈরিতা নয় বরং বন্ধুত্ব– এই নীতি উন্নতির দিকে নিয়ে যাবে।
২০২৫ বছরটি যুদ্ধের বছর সারা বিশ্বের জন্য, যা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা করেছে ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে। এই যুদ্ধ ২৭ বছর চলবে, যা অ্যাস্ট্রোলজার নস্ট্রাডেমাস বলে গেছেন তাঁর বিখ্যাত ১০০ ভবিষ্যদ্বাণীর মধ্যে। তিনি কবিতার ছন্দে বর্ণনা করেছেন এই ভয়ংকর ভবিষ্যদ্বাণীটি; যার বাংলা করলে দাঁড়ায় অনেকটা এই রকম– ‘পশ্চিমের দুই দুজন রাজা বন্ধু হবে, বিশ্বটাকে করতে যাবে শাসন, তখন কিন্তু পূর্বাঞ্চলের রক্তপিপাসু রাজা দিতে চাইবে দুই নেতাকে ভীতিকর এক সাজা। লাগবে লড়াই বিশ্বজুড়ে। এমন লড়াই লাগবে, আকাশপথে যুদ্ধ হবে নবশতাব্দী কাঁদবে।’
এ থেকে নস্ট্রাডেমাস ইঙ্গিত করেছেন ইউএসএ ও ইউকে বন্ধুত্বের কথা, যার ফলে পূর্বাঞ্চলের ওপর অর্থনৈতিক চাপ সৃষ্টি হবে। এই চাপের ফলেই পূর্বের অনেক দেশেই অভাব ও দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে যাবে। এখানে পূর্বাঞ্চলের রাজাকে বোঝানো হয়েছে চীন ও রাশিয়াকে। আকাশপথে যুদ্ধ বলতে বোঝানো হয়েছে নিউক্লিয়ার ওয়ার, যেখানে পদাতিক সৈন্যের প্রয়োজন অনেক কম হবে কিন্তু ধ্বংস হবে অনেক বেশি। এ ভবিষ্যদ্বাণীতে আরও বলা হয়েছে, এটি ঘটবে নবশতাব্দীর শুরু থেকেই। এই যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্বতো বটেই বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই ২০২৫ সাল যুদ্ধের বছর বলে আমাদের খুবই সতর্ক থাকতে হবে, অন্যথায় দেশের অর্থনীতিতে চাপ বাড়বে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে এ বছর আমূল পরিবর্তন হবে। নতুন দলের আবির্ভাব হবে, যা রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে। তাই আমরা বলতে পারি আগের সরকারের মতো কেউ একচেটিয়াভাবে সরকার গঠন করতে পারবে না। সব দল থেকেই প্রতিনিধিত্ব দেখব আমরা। দেশের উন্নতিতে বৃহস্পতি সুযোগ সৃষ্টি করবে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় দেশের আর্মি, পুলিশ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সক্রিয় অংশগ্রহণ করবে। ফলে অরাজক পরিস্থিতি থেকে দেশ বেরিয়ে আসতে পারবে।
অর্থনৈতিক উন্নতিতে সরকার অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। বিশ্বের সব দেশ বন্ধু হবে বৈরী নয়– এই নীতিতে সরকার পরিচালিত হবে। নির্বাচনের সময় নির্ধারিত হবে এই বছরের মে মাসের মধ্যে। ফলে এই বছরের নভেম্বর থেকে ২০২৬-এর মার্চ মাসের মধ্যে সুষ্ঠুভাবে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে। বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অগ্রগতি হবে। দেশের আর্থিক সমস্যা কমে আসবে। নতুন বিনিয়োগ শুরু করতে এগিয়ে আসবে বিশ্বব্যাংকসহ অন্যান্য দাতা সংস্থা।
বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এ বছর কৃষি বিভাগের নানা উদ্যোগের ফলে নতুন জাতের ধান, সবজি ও ফলের সম্ভার দেখব। গম উৎপাদনেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। পাট জাতীয় ফসলের ব্যাপক উন্নতি হবে। বন্ধ হয়ে যাওয়া পাটকলগুলো নতুনভাবে চালু হবে, যা অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করবে।
রাহু, কেতু ও ইউরেনাস এ বছর জুনের পর থেকে বৈরী হবে। ফলে ঘূর্ণিঝড়, খরা ও সামগ্রিক নিম্নচাপ ব্যাপক ক্ষতি করতে পারে। বিশেষ করে, অক্টোবর থেকে জানুয়ারি ২০২৬ পর্যন্ত। দেশের জনগণের জানমাল রক্ষায় সরকার সক্রিয় থাকবে। কলকারখানায় উন্নতি হবে। গবাদিপশু, ডিম উৎপাদন, মাংস উৎপাদন ও সংরক্ষণে নতুন নতুন উদ্যোক্তা আসবে, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের হাতে। এ বছর মৎস্য অধিদপ্তরের ভূমিকা আমরা দেখব, যার ফলে সামুদ্রিক মাছও বিদেশে প্রচুর পরিমাণে রপ্তানি হবে। মাশরুম ও আলু উৎপাদন হবে কৃষি বিভাগের সহযোগিতায়। কোল্ড স্টোরেজের ব্যবস্থা থাকবে সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতায়; যার ফলে আলু, পেঁয়াজ ও অন্যান্য পচনশীল সবজিকে সংরক্ষণ করা সহজ হবে।
বাংলাদেশের সমুদ্রে রয়েছে প্রচুর সম্ভাবনা– তেল, গ্যাস, ইউরেনিয়ামের মতো দামি সব খনিজ; যা এ বছর থেকেই প্রচুর পরিমাণে উৎপাদন শুরু হবে। বিদেশের সহযোগিতায় খনিজসম্পদ উত্তোলন ও সংরক্ষণ করা সহজ হবে। জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে এই বছর অগ্রগতি হবে। সৌরবিদ্যুৎ প্রযুক্তিতে অগ্রগতি হবে। সমুদ্রবন্দরগুলোকে আরও সুসংহত করা হবে, ফলে বিদেশ থেকে জাহাজ আসতে পারবে। অন্যান্য পার্শ্ববর্তী দেশও বাংলাদেশের গভীর সমুদ্রবন্দরের সুযোগ নেবে তাদের বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য, যা বাংলাদেশের আর্থিক উন্নতিতে সহযোগিতা করবে। গার্মেন্টস শিল্পে অগ্রগতি হবে। নতুন নতুন দেশ থেকেও ব্যবসা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমেরিকা ও ইউরোপ থেকে আগের তুলনায় বেশি অর্ডার আসবে, ফলে অর্থনীতিতে চাঙ্গাভাব দেখা দেবে। গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন সময়মতো পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যার ফলে আর্থিক সুযোগ তাদের আসবে। ছোট ছোট শিল্পকে নতুনভাবে সাজানোর মাধ্যমে অর্থনীতিতে চাঙ্গাভাব দেখা দেবে। তাদের আর্থিক সুযোগ সৃষ্টিতে বৈদেশিক ঋণের ব্যবস্থাও করবে সরকার।
বর্তমান সরকার বিদেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করার মাধ্যমে গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্পকে চাঙ্গা করতে সচেষ্ট হবে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শিল্পকারখানার অরাজক অবস্থা থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে পারব। আমেরিকা, ইউরোপ ও বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশকে সামরিক সহযোগিতা করবে। বেকারত্ব দূর হবে অনেকাংশে। নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি হবে তরুণ মেধার মাধ্যমে। তাদের নতুন আবিষ্কার দেশ ও বিদেশে সমাদৃত হবে। ফলে বৈদেশিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগকারী এসব আবিষ্কারকে অর্থায়ন করবে, যা এই সরকার সমর্থন করবে।
ঢাকার জিনজিরাকে শিল্পাঞ্চল ঘোষণা করলে বাংলাদেশের অনেকটাই বেকারত্ব দূর হবে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মালপত্রকে তখন আর নকল হিসেবে বাজারে দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পৃষ্ঠপোষকতায় যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ এখানেই তৈরি করা যাবে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি থেকেও অধিক কয়লা উত্তোলিত হবে, যা দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করেও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব হবে। যারা বিদেশে বসবাস করেন, তাদের কাছ থেকে রেমিট্যান্স অনেক বেশি আসবে, ফলে আর্থিক উন্নতি হবে। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলার উন্নতি হবে জুন মাসের ম ধ্যে, যা এ সরকারকে দেশ ও বিদেশে সম্মানিত করবে। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থায় চাকরি সৃষ্টি হবে। এতে বেকারত্ব অনেকটাই কমে আসবে।
বাংলাদেশে হীরা ও স্বর্ণের খনি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে। সবদিক থেকেই বাংলাদেশের উন্নতির সম্ভাবনা রয়েছে। খাদ্যশস্যের ঘাটতি হবে না, বরং উদ্বৃত্ত ফসল রপ্তানি করা সম্ভব হবে। খেলাধুলায় নারী ও পুরুষ আরও চমক দেখাতে পারবে এ বছর। সারাদেশ থেকে নতুন নতুন খেলোয়াড় আমরা পাব বিভিন্ন ক্লাবের মাধ্যমে।
পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে উত্তেজনা রয়েছে, তা নিরসনেও সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করবে। সীমান্তের অস্থিরতাও কমে আসবে। রোহিঙ্গা সমস্যা দূর করতে সরকার অনেকটাই সমর্থ হবে, ফলে তাদের প্রত্যাবর্তনের সুযোগ সৃষ্টি হবে। জঙ্গল ও পাহাড়ে অবৈধ গাছ কাটা অনেকটা কমে আসবে; যা প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় সহযোগিতা করবে। সুন্দরবনের পশুপাখি রক্ষায় নতুন আইন হবে। পর্যটকদের নিরাপত্তার ব্যাপারে সরকার আরও সচেষ্ট থাকবে।
জ্যোতিষ সাগর ড. আব্দুল হাদী
০১৭১০৯০৯৮৮৭
- বিষয় :
- বাংলাদেশ