চাল কেটে ও পলিশ করার মাধ্যমে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন মিল মালিকরা। এতে একদিকে চাল পুষ্টিগুণ হারাচ্ছে। অন্যদিকে কোন জাতের ধান থেকে চাল তৈরি হচ্ছে, তা বোঝা যাচ্ছে না। ফলে মিলগুলো নিজেদের মতো ব্র্যান্ড দাঁড় করিয়ে ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। একটি অগ্রসরমান অর্থনীতিতে এমন প্রতারণা মানা যায় না। এটা আইন করে বন্ধ করা উচিত।

শনিবার পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম চালের জাত ও মান পরিবর্তনের কারসাজি নিয়ে এমন মন্তব্য করেন। দৈনিক বণিকবার্তা আয়োজিত ‘বায়োফর্টিফায়েড জিঙ্কসমৃদ্ধ ব্রি ধানের বাজার সম্প্রসারণ ও জনপ্রিয়করণ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন। সাবেক কৃষি সচিব ও কৃষি ব্যাংকের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. নাসিরুজ্জামান এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন। 

বণিকবার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন বিজনেস ইন্টেলিজেন্সের প্রধান নির্বাহী শাকিব কোরেশী। স্বাগত বক্তব্য দেন গেইন বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. রুদাবা খন্দকার।

ড. শামসুল আলম বলেন, আইন করে যেমন লবণে আয়োডিন এবং তেলে ভিটামিন থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে, তেমনি চালের ক্ষেত্রেও আইন করা দরকার। যাতে কেউ প্রতারণা করে চালের যেমন ইচ্ছা তেমন রূপ দিতে না পারে। 

তিনি বলেন, পুষ্টি ঘাটতি রোধে জিঙ্ক গুরুত্বপূর্ণ। চাল যেহেতু দেশের মানুষের প্রধান খাদ্য, সেজন্য চালের মাধ্যমে জিঙ্ক সরবরাহ সহজ।

মো. নাসিরুজ্জামান বলেন, ভুটানসহ বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ বাংলাদেশ থেকে জিঙ্কসমৃদ্ধ চাল নিতে আগ্রহী। কিন্তু দেশে এ ধরনের চালের উৎপাদন কম হওয়ায় সুযোগটি নেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এ ধরনের ধানের উৎপাদন বাড়ানো দরকার। এ বিষয়ে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। 

অনুষ্ঠানে তিনি ঘোষণা করেন, কোনো কৃষক যদি পুষ্টিসমৃদ্ধ ধানের আবাদ করতে চান, তাহলে তাকে কৃষি ব্যাংক বিনা জামানতে ঋণ দেবে।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, দেশের সব ধানের জাতেই কম-বেশি জিঙ্ক রয়েছে। তবে ব্রি ধান৭৪ এবং ব্রি ধান৮৪ জাত দুটি জনপ্রিয় করা সম্ভব হলে দেশের মানুষের জিঙ্কের ঘাটতি অনেকাংশেই পূরণ করা সম্ভব।