- জীবনশৈলী
- রোজায় কী খাবেন, কী খাবেন না
রোজায় কী খাবেন, কী খাবেন না

রমজান মাস সংযম এবং ইবাদতের মাস। এ মাসে আত্মশুদ্ধির পাশাপাশি আমাদের শারীরিক কিছু পরিবর্তন ঘটে । এক মাস রোজা রাখার কারণে আমাদের দেহ ডিটক্সিফিকেশনের মধ্য দিয়ে যায় এবং পরিশুদ্ধ হয়। কিন্তু এই রমজান মাসে কোন খাবার কতটুকু খাবেন,কী কী খাবার খাদ্যতালিকায় রাখা উচিত এই নিয়ে আমরা সবসময় চিন্তিত থাকি। আসুন জেনে নেওয়া যাক রমজানে কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত এবং কোন খাবারগুলো তুলনামূলক কম খাওয়া উচিত।
পর্যাপ্ত পানি পান : গত কয়েক বছরের মতো এ বছরও রমজান মাস খুব গরমের মধ্যে পড়েছে, তাই এই বৎসরও পানি পানের পরিমাণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যারা রোজা রাখছেন তাদের অবশ্যই ইফতার থেকে সাহরী পর্যন্ত দুই থেকে তিন লিটার পানি পান করা উচিত। অনেকে মনে করতে পারেন, এই অল্প সময়ে পানির পরিমাণ অনেক বেশি হয়ে যাচ্ছে.কিন্তু এই পানির পরিমাণ ইফতার থেকে সাহরী পর্যন্ত ভাগ করে নিলে তা খুব সহজেই পান করা সম্ভব হয়।
সাহরী : অনেকেই মনে করেন পেট ভরে খেলে হয়তো পরেরদিন ক্ষুধা কম লাগবে, ব্যাপারটা একেবারেই ঠিক নয়। বরং একবারে অতিরিক্ত খেয়ে ফেললে পরেরদিন অস্বস্তি বোধ হয়। তাই সাহরীতে উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার(যেমন শাকসবজি,সিম,বিজ) ইত্যাদি গ্রহণ করতে হবে। ফাইবার জাতীয় খাবারগুলো পেটে বেশ অনেকক্ষণ ধরে থাকে বলে রোজা রাখার সময় ক্ষুধা কম অনুভব হয়।
তাছাড়া আমিষের অভাব পূরণ করতে সাহরীতে মাছ, মাংস, ডাল এবং দই খাবারে রাখতে পারেন। যারা সাহরীতে খুব ভারী খাবার খেতে চান না তারা দুধ,কলা,চিড়া অথবা দই খেতে পারেন। এতে করে আপনি কয়েক ধরনের পুষ্টি উপাদান একসাথে পেয়ে যাবেন। সাহরীতে অনেকেরই চা কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকে, তবে সাহরীতে চা কফি না খাওয়াই ভালো কারণ চা-কফি ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ তৈরি করে। এতে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে।
ইফতার : ইফতারের শুরুটা করতে পারেন খেজুর দিয়ে, কারণ এতে থাকা প্রাকৃতিক উপাদান তৎক্ষণাৎ শক্তি যোগাতে সাহায্য করে। তাছাড়া খেজুরের রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন এবং মিনেরালস। ডাবের পানি রাখতে পারেন ইফতারে। ডাবের পানি শরীরের ইলেক্ট্রলাইট ভারসাম্য ঠিক রাখে এবং শরীরকে পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা করে।
ইফতারে একটি সুষম খাবার প্লেট সাজানোর চেষ্টা করুন। সেক্ষেত্রে প্লেটে থাকবে রমজানের মিষ্টি (খেঁজুর), ফল, ১টি ভারী খাবার, সালাদ, স্যুপ ইত্যাদি।ফল ও সবজিতে থাকা জটিল শর্করা পেট ভরপুর রাখবে। সেই সঙ্গে কোষ্টকাঠিন্য থেকেও রক্ষা করবে।
অনেকেই ইফতারে ভাজাপোড়া খেতে পছন্দ করেন। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। ইফতারে সিদ্ধ ছোলা সাথে আদা কুচি,পুদিনা পাতা কুচি, কিছুটা লেবু ,ধনেপাতা কুচি,টমেটো কুচি মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে শরীরে আঁশ, প্রোটিন এবং খনিজ লবণের চাহিদা পূরণ হবে।
ইফতারে রাখতে পারেন হালকা গরম স্যুপ। এতে করে পাকস্থলী কিছুটা আরাম পায় এবং হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়।
অনেকেই রোজার মাসে মধ্য রাতের খাবারটা খেতে চায় না. কিন্তু মধ্যরাতে খাবার না খেলে শেষ রাতে এসে অতিরিক্ত খাওয়া হয়ে যায় যা পরবর্তীতে ওজন বাড়ার মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায। তাই কেউ যদি রাতের বেলা ভারী কিছু খেতে না যায় তাহলে হালকা কিছু হলেও খেয়ে নিতে পারেন।
মন্তব্য করুন