নিমপাতা এমনই এক জাদুকরী ঔষধি যা হাজার বছর ধরে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নিমপাতা এখনও প্রাকৃতিক প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। শরীরের দুর্বল প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে নিমপাতার জুড়ি নেই। নিমপাতা রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

 এছাড়া এই পাতা থেকে আরও কয়েক ধরণের উপকার পাওয়া যায়। যেমন-

১. ত্বক ও চুলের জন্য নিমপাতা দারুণ উপকারী। নিমপাতা ব্যবহারে ব্রণের সমস্যা দূর হয়। এটি ত্বকের শুষ্কতা দূর করতে দারুণ কার্যকরী। এছাড়া ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন- ব্ল্যাকহেডস, বড় ছিদ্র , দাগ দূর করতেও নিম পাতা ব্যবহার করা যায়। নিমপাতায় থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফ্যাংগাল উপাদান চুলের খুশকি সমস্যার সমাধান দেয়। এটি চুল পড়া রোধেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

২. নিমপাতায় থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান রক্ত পরিশুদ্ধ করে। এটি শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করে লিভার ও কিডনি সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন ২ টা করে নিমের তৈরি ক্যাপসুল খেলে বিভিন্ন ধরনের টক্সিন থেকে রক্ত পরিশুদ্ধ থাকবে।

৩. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে নিমপাতা দারুণ কার্যকরী।এ কারণে যেকোন ধরণের সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে এটি ভূমিকা রাখে।নিমপাতা রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। এ কারণে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী। নিয়মিত নিমের তৈরির ক্যাপসুল খেলে ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গুসহ অন্যান্য সংক্রমণ রোগ প্রতিরোধ করা যায়।

৪. নিমে থাকা অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা কমায়। এটি দাঁতের প্রদাহ সারাতেও কার্যকরী।

৫. নিম হজমের জন্য দারুণ উপকারী। এতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরী উপাদান পাকস্থলীর নানা সংক্রমণ সারাতে ভূমিকা রাখে।


শরীরের যত্নে যেভাবে কাজ করে নিম পাতা-

১. নিম পাতা সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে ত্বকের খোসপাঁচড়া নিরাময় হয়।

২. কৃমিনাশক হিসেবে নিমের রস খুবই কার্যকর।

৩. নিম পাতা বাটা ত্বকের দাগ দূর করতে  খুব ভালো কাজ করে।

৪. মাথার ত্বকে অনেক সময়ই চুলকানি ভাব হয়, নিমপাতার রস মাথায় নিয়মিত লাগালে এই চুলকানি কমে।

৫. নিমের পাতা ও ছালের গুড়ো কিংবা নিমের ডাল দিয়ে নিয়মিত দাঁত মাজলে দাঁত মজবুত হয়। দাঁতের রোগও সারে।

৬. সকালে খালি পেটে ৫টি গোলমরিচ ও ১০টি নিম পাতা বেটে খেলে তা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।  চুলের খুশকি দূর করতে শ্যাম্পু করার সময় নিমপাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে চুল ম্যাসাজ করে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এতে খুশকি দূর হবে।

৭. নিমপাতার রস রক্ত পরিষ্কার করে ও রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়। এছাড়াও রক্তচলাচল বাড়িয়ে হৃৎপিণ্ডের গতি স্বাভাবিক রাখে।

৮. পোকা মাকড় কামড় দিলে বা হুল ফোঁটালে নিমের মূলের ছাল বা পাতা বেটে ক্ষত স্থানে লাগালে ব্যথা উপশম হবে। সূত্র : মিড ডে