- লাইফস্টাইল
- চরের জমিতে সাড়ে ৩ কেজির মিষ্টিআলু
পতিত জমিতে চাষ
চরের জমিতে সাড়ে ৩ কেজির মিষ্টিআলু
শসা ও মিষ্টি কুমড়াতেও সাফল্য

ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার জগদল এলাকায় নাগর নদীতে জেগে ওঠা চরে মিষ্টিআলু চাষ করেছিলেন স্থানীয় কৃষক আবু সালেহ। বালু জমিতে চাষ করতে দেখে প্রথমে অনেকে হাসাহাসি করেন। তবে সেই চাষেই এসেছে সাফল্য। আবু সালেহর জমিতে একেকটি মিষ্টিআলুর ওজন হয়েছে ৩ থেকে সাড়ে ৩ কেজি। প্রতিদিন শত শত মানুষ তা দেখতে আসছেন। চাষের বিষয়েও পরামর্শ নিচ্ছেন তাঁরা।
কন্দাল ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রানীশংকৈল উপজেলা অফিসের সহায়তায় চরের সাড়ে সাত বিঘা জমিতে এ মিষ্টিআলু চাষ করেছেন কৃষক সালেহ। তাঁকে দেখে এখন একাধিক কৃষক চরের বালুতে চাষ করছেন মিষ্টিকুমড়া ও শসা। সেখানেও মিলেছে সাফল্য।
সালেহর পরিবারের সদস্যরা জানান, তাঁরা যখন মিষ্টিআলুর চাষ শুরু করেন তখন মানুষ হাসাহাসি করত। বাড়ি থেকে অনেক নিষেধ করার পরেও বাড়ির কর্তা চাষ করেন। তিন থেকে সাড়ে তিন কেজি ওজনের মিষ্টিআলু দেখে এখন সবাই খুশি। আরও অনেকে উৎসাহী হচ্ছেন।
উপজেলার ধর্মগড় এলাকার জমির উদ্দীন বলেন, চরের বালুমাটিতে এত সুন্দর ফসল হবে ভাবতেও পারিনি। এত বড় মিষ্টিআলু জীবনে দেখিনি। দেখে খুব ভালো লাগছে। যত্ন করলে যে রত্ন পাওয়া যায়, সালেহ তার উজ্জ্বল উদাহরণ।
কৃষক সালেহ জানান, রানীশংকৈল উপজেলা কৃষি বিভাগের সহায়তায় ও উৎসাহের কারণে চরের জমিতে মিষ্টিআলুর চাষ করে সফল হয়েছেন। আগে মানুষ নিরুৎসাহিত করলেও এখন পরামর্শ নিতে আসছেন। মিষ্টিআলু চাষে আগে অভিজ্ঞতা থাকলে আরও সফল হতে পারতেন। তারপরও প্রথমবার এত সাফল্য পাবেন ভাবতেই পারেননি। একটাই সমস্যা, বেলে মাটি হওয়ায় পানির সেচ বেশি দিতে হয়েছে।
উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সজল সরকার বলেন, নদীর বালু চরের পতিত জমিতে মিষ্টিআলু চাষের জন্য যখন চাষিদের সঙ্গে আলোচনা করি, তখন চাষিও আগ্রহী ছিল না। তাদের অনেক কষ্টে বুঝিয়ে রাজি করি। কৃষি বিভাগ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে সহায়তা করা হয়েছে।
রানীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় দেবনাথ জানান, এই চরে মুড়াসাকি ও ওকিনামা জাতের মিষ্টিআলুর চাষ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন– কোনো পতিত জমি রাখা যাবে না। তারই ধারাবাহিকতায় নাগর নদীর চরে চাষ শুরু করা হয়েছে। আশা করি, প্রতি হেক্টরে (সাড়ে ৭ বিঘা) ৪০ থেকে ৫০ টন মিষ্টিআলু উৎপাদন হবে। এতে চাষিরা লাভবান হবেন। সেই সঙ্গে এই ফসল জাতীয় উৎপাদনে যোগ হবে। মিষ্টিআলু ছাড়াও শসা ও মিষ্টিকুমড়া চাষ করা হয়েছে। আশা করি, মিষ্টিআলু বিক্রি করে লাভবান হবেন তাঁরা।
মন্তব্য করুন