
পুরুষদের শরীরে দানা বাঁধে এমন একটি সবচেয়ে সাধারণ ক্যান্সার হলো প্রোস্টেট ক্যান্সার। ৬০ বছর বয়সের পর পুরুষদের শরীরে এই ক্যান্সারের প্রকোপ দেখা যায়। সমস্যা হলো, প্রাথমিক পর্যায় এই ক্যান্সারের কোনো লক্ষণ ধরা পড়ে না। শরীরের অন্য অংশে ছড়ানোর পর এর লক্ষণ প্রকাশ্যে আসে। এ কারণে কিছু নির্দিষ্ট সমস্যার প্রতি পুরুষদের সজাগ দৃষ্টি দিতে বলেন চিকিৎসকরা।
‘প্রোস্টেট একটি ছোট আখরোট আকারের গ্রন্থি, যা পুরুষের পেলভিক অংশে, মূত্রাশয়ের পাশে অবস্থিত। এই প্রোস্টেট নানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি সেমিনাল তরল উৎপন্ন করে, যা স্পার্মকে নারিশ করতে ও একে পরিবাহিত করতে সাহায্য করে।’
প্রাথমিক পর্যায় প্রোস্টেট ক্যান্সারকে চিহ্নিত করা যায় না। কারণ হাড় বা শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে না পড়া পর্যন্ত এর কোনো চোখে পড়ার মতো লক্ষণ দেখা পাওয়া খুব কঠিন।
প্রোস্টেট ক্যান্সারের কারণ
প্রোস্টেটের মধ্যে এই ক্যান্সার দানা বাঁধে। এটি ধীরে ধীরে বেড়ে উঠলেও দ্রুত ছড়ায়। চিকিৎসক পালের মতে, ‘এ ধরনের ক্যান্সারের কারণ এখনও জানা নেই। তবে এর জিনগত প্রবণতা সম্পর্কে জানা যায়। সাধারণত জনসংখ্যার তুলনায়, কারও পরিবারের কোনো পুরুষ সদস্য প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে সেই পরিবারের পরবর্তী প্রজন্মের পুরুষ সদস্যের এই ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ১০ গুণ বেশি। তবে সচেতনতা এবং প্রাথমিক পর্যায় রোগ নির্ণয় করলে এর মোকাবিলা করা যেতে পারে।’
এই রোগের কিছু লক্ষণ–
lমূত্রত্যাগের সময় ব্যথা হলে বা সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কষ্টপূর্ণ মূত্রত্যাগ ও বীর্যপাত এই রোগের প্রধান লক্ষণ।
lআবার রাতে বারবার মূত্রত্যাগ করলেও সাবধান হন। এটি বয়সজনিত প্রোস্টেট গ্রন্থির বেড়ে যাওয়ার কারণে হতে পারে। আবার প্রোস্টেট ক্যান্সার দায়ী হতে পারে। সিরাম পিএসএ পরিমাপের একটি রক্ত পরীক্ষা করানোর মাধ্যমেই এই দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য করা যাবে। তাই বিলম্ব না করে নিজের ইউরোলজিস্টের পরামর্শ নেবেন।
lমূত্রত্যাগ আটকানো বা থামানো অথবা শুরু করতে সমস্যা হলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
lকোনো পুরুষের যৌন জীবন যদি ইরেকটাইল ডিসফাংশানের কারণে বাধিত হয়, তা হলে এটি প্রোস্টেট ক্যান্সারের কারণে হয়ে থাকতে পারে।
lমূত্র বা বীর্যে রক্ত নিঃসৃত হওয়াও প্রোস্টেট ক্যান্সারের দিকে ইশারা করে। তবে ভয় পাবেন না। নিজের চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এই সমস্যার আসল কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হন।
lমূত্রত্যাগে অক্ষমতা, প্রস্রাব চেপে রাখতে না পারা, পেলভিক অংশে ফোলা ভাব, পা ও পায়ের পাতা অসার হয়ে যাওয়া। হাড়ে ব্যথা ও সামান্য আঘাত বা অন্য যে কোনো কারণেই হাড় সহজে ভেঙে যাওয়া এই ক্যান্সারের অন্যতম কারণ।
মন্তব্য করুন