রাজধানীর বঙ্গবাজারে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সহায়তায় এক কোটি টাকার চেক দিয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই। শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ চেক তুলে দেন সংগঠনটির সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের পক্ষে চেকটি গ্রহণ করেন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন ও বঙ্গবাজার কমপ্লেক্স দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. নাজমুল হুদা। 

এ সময় এফবিসিসিআইর সভাপতি বলেন, বঙ্গবাজারে আগুনের ভয়াবহতা এত বেশি ছিল যে, সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, কিছুই অবশিষ্ট নেই। সেই চিত্র দেখে দায়বদ্ধতা থেকেই এফবিসিসিআই এ অর্থ সহায়তা দিয়েছে। অন্যান্য বড় ব্যবসায়ী ও সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোরও ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সহায়তার হাত বাড়ানো উচিত।

ব্যবসায়ীদের কমপ্লায়েন্স মেনে ব্যবসা করা উচিত মন্তব্য করে জসিম উদ্দিন বলেন, অগ্নিকাণ্ড ঘটার পর সব দোষ শুধু ব্যবসায়ীদের না দিয়ে যেসব প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক ভবন ও কলকারখানার লাইসেন্স দিয়ে থাকে তারাসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত। রানা প্লাজা ধসের পর বায়ারদের চাপে রপ্তানিমুখী, বিশেষ করে পোশাক শিল্প-কারখানাগুলোতে কমপ্লায়েন্স অনেকটা নিশ্চিত করা হলেও অন্যান্য শিল্পে তা করা হয়নি।

বঙ্গবাজারে আগের মতো অবকাঠামো নির্মাণ না করে স্থায়ী ও আধুনিক ভবন নির্মাণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সাথে তাদের পরিবারের উপার্জন জড়িত। কিন্তু তারা এখন সব হারিয়েছে। তাদের জন্য স্থায়ী কাঠামো দরকার। পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ মার্কেটগুলোর ব্যাপারে আরও সচেতন ও প্রয়োজনীয় সংস্কার করার পরামর্শ দেন তিনি। 

অনুষ্ঠানে হেলাল উদ্দিন বলেন, অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থল থেকে মাত্র ২০ গজ দূরে ফায়ার সার্ভিসের অফিস। অথচ চার হাজার দোকানের একটিকেও রক্ষা করা গেলো না। বলা হচ্ছে, ফায়ার সার্ভিস বারবার সতর্ক করেছে। কিন্তু তাদের রুটি-রুজির বিকল্প ব্যবস্থা না করলে তারা যাবে কোথায়? বিদ্যমান মার্কেটগুলো পরিদর্শন করা হচ্ছে। কোনো ঝুঁকি দেখা গেলে, সতর্ক করার পাশাপাশি সংস্কারের নির্দেশনা দেওয়া হবে।

আক্ষেপ করে তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় কয়েকটি ব্যবসা সংগঠন ও সরকারি সংস্থা এগিয়ে আসলেও ব্যবসা করার জন্য যেসব প্রতিষ্ঠান থেকে সনদ বা অনুমতিপত্র নিতে হয় তারা কেউই সহায়তার হাত বাড়ায়নি। 

নাজমুল হুদা বলেন, আগুনে সব হারানোর পরও ফায়ার সার্ভিসের করা মামলায় ব্যবসায়ীরা নানাভাবে পুলিশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এটি বন্ধ করা উচিত। 

অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআইর সহ-সভাপতি আমিন হেলালী, হাবীব উল্লাহ ডনসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।