দেশের জনগোষ্ঠীর প্রায় এক-পঞ্চমাংশ কিশোর-কিশোরী। বয়ঃসন্ধিকালে তাদের মধ্যে স্বাস্থ্যজ্ঞান আদান-প্রদান ও নিজ থেকে সেবা চাওয়ার প্রবণতা কম থাকে। এই প্রবণতা দূর করতে রাজধানীর সিভিল এভিয়েশন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য, পুষ্টি, বাল্যবিয়ে, স্বাস্থ্যবিধি এবং মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে ধারণা ও সেবা দিয়েছে ‘ডেভেলপমেন্ট রিসার্চ নেটওয়ার্ক’ (ডিনেট)।

শনিবার দিনব্যাপী প্রতিষ্ঠানটির ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে এ কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যসেবা দিয়েছে সংস্থাটি। এ আয়োজনে আটজন চিকিৎসক, একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্টরা শিক্ষার্থীদের এসব সেবা দেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পৃষ্ঠপোষকতায় এতে কারিগরি সহায়তা দিয়েছে ইউনিসেফ বাংলাদেশ।

এ স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সিভিল এভিয়েশন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি ডা. মাহবুবুল আলম তালুকদার। এ সময় পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মো. মনজুর হোসেন, ডিনেটের নির্বাহী পরিচালক এম শাহাদাত হোসেন, যুগ্ম পরিচালক আসিফ আহমেদ তন্ময়সহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি দপ্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হেলথ ক্যাম্পে জাতীয় কিশোর-কিশোরী স্বাস্থ্য ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপ সম্পর্কে তথ্য প্রদান করা হয়। চিকিৎসকদের দিয়ে তাদের চক্ষু পরীক্ষাসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা এবং সচেতনতা সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। একজন শিক্ষাবিষয়ক মনোবিজ্ঞানী শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে নানা পরামর্শ দেন। জাতীয় কিশোর স্বাস্থ্য ওয়েবসাইটের ওরিয়েন্টেশন প্রদর্শন ও অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন সংস্থাটির প্রতিনিধিরা।

ওরিয়েন্টেশন সভায় বলা হয়, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এবং দ্রুত বর্ধনশীল কিশোর জনসংখ্যার দেশ। বাংলাদেশে মোট জনগোষ্ঠীর এক-পঞ্চমাংশ ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী; কিন্তু এই কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে কৈশোরবান্ধব স্বাস্থ্যজ্ঞান আদান-প্রদান ও সেবা চাওয়ার প্রবণতা কম। এ সংক্রান্ত কার্যক্রমও তুলনামূলক কম।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজকরা জানান, সরকার গত কয়েক বছরে কিশোর-কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকালীন স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। এ লক্ষ্যে ‘ন্যাশনাল অ্যাডোলেসেন্ট হেলথ স্ট্র্যাটেজি ২০১৭ থেকে ২০৩০’ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে সরকার। সরকারের এ প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে কিশোর-কিশোরীদের সুরক্ষায় ডিনেট এবং ইউনিসেফ বিভিন্ন শহরে হেলথ ক্যাম্প করছে।

ডিনেটের কর্মকর্তারা জানান, পর্যায়ক্রমে রাজশাহী ও খুলনায় এ ধরনের কর্মসূচির আয়োজন করা হবে। ক্যাম্পে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ইউনিলিভার বাংলাদেশের সহায়তায় দৈনন্দিন ব্যবহার্য ট্রয়লেট্রিজ পণ্য বিতরণ করা হয়।