মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসে (এমএফএস) লেনদেন ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে এ ব্যবস্থায় দৈনিক গড়ে ৩ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। আগের মাস জানুয়ারিতে দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ২৪৫ কোটি টাকা। আগের বছরের একই মাসে দৈনিক গড়ে ২ হাজার ৮০৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত ফেব্রুয়ারি মাসে এমএফএসগুলোর মাধ্যমে মোট ৯৭ হাজার ৩০৮ কোটি টাকা লেনদেন হয়। আগের মাস জানুয়ারিতে যা ১ লাখ ৫৯৩ কোটি টাকা ছিল। ফেব্রুয়ারিতে দিন সংখ্যা কম হওয়ায় মোট লেনদেন কিছুটা কম হলেও দৈনিক গড় লেনদেন আগের মাসের তুলনায় বেড়েছে। আর এ যাবৎকালের মধ্যে এক মাসে সর্বোচ্চ লেনদেন হয় গত বছরের এপ্রিলে। গত বছরের রমজান ও ঈদের ওই মাসে মোট লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ৭ হাজার ৪৬০ কোটি টাকা। দৈনিক গড়ে ৩ হাজার ৫৮২ কোটি টাকা লেনদেন হয়।

ফেব্রুয়ারি মাসের মোট লেনদেনের মধ্যে ক্যাশ ইন হয়েছে ২৯ হাজার ২২৮ কোটি টাকা। আর ক্যাশ আউট হয়েছে ২৮ হাজার ১৩৬ কোটি টাকা। ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি স্থানান্তর হয়েছে ২৭ হাজার ৫২২ কোটি টাকা। মার্চেন্ট পরিশোধ হয়েছে ৩ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা। সরকার থেকে ব্যক্তি পরিশোধ হয়েছে ২ হাজার ৩২৮ কোটি টাকা। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার বেতন বিতরণ হয়েছে। মোবাইল রিচার্জে গেছে ৮৫১ কোটি টাকা। আর ১ হাজার ৮৮৬ কোটি টাকার ইউটিলিটি বিল পরিশোধ হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, এমএফএস ব্যবহার করে লেনদেনের পাশাপাশি গ্রাহক সংখ্যাও দ্রুত বাড়ছে। গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নিবন্ধিত মোট গ্রাহক দাঁড়িয়েছে ১৯ কোটি ৬৭ লাখ ৫৯ হাজার। আগের মাস শেষে যা ১৯ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ছিল। আর আগের বছরের একই মাস শেষে ছিল ১৭ কোটি ৬২ লাখ ৭৪ হাজার। এ ছাড়া চার বছর আগে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি শেষে ছিল মাত্র ৬ কোটি ৭৯ লাখ ৪৫ হাজার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১৩টি প্রতিষ্ঠান এমএফএস সেবা দিচ্ছে। এর মধ্যে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করা বিকাশ। এ ছাড়া ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের রকেট, ইসলামী ব্যাংকের ইসলামী ব্যাংক এমক্যাশ, মার্কেন্টাইল ব্যাংকের মাইক্যাশ, ট্রাস্ট ব্যাংকের ট্যাপ, ইউসিবিএলের উপায়, ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের ফার্স্টপে শিউর ক্যাশ, ওয়ান ব্যাংকের ওকে ওয়ালেট, সাউথইস্ট ব্যাংকের টেলিক্যাশ, আল-আরাফাহ্‌ ব্যাংকের ইসলামিক ওয়ালেট, মেঘনা ব্যাংকের ট্যাপ অ্যান্ড পে।

এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্তর্বর্তীকালীন অনুমোদন নিয়ে বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের সঙ্গে আয় ভাগাভাগির ভিত্তিতে পরিচালিত হচ্ছে নগদ। সব মিলিয়ে এমএফএস প্রতিষ্ঠানগুলোর সারাদেশে মোট এজেন্ট রয়েছে ১৫ লাখ ৮১ হাজার। আগের বছরের একই সময় শেষে যা ছিল ১৪ লাখ ৪৬ হাজার। উল্লেখ্য, একজন ব্যক্তির একাধিক এমএফএস প্রতিষ্ঠানে হিসাব খোলার সুযোগ রয়েছে।