ছবি আঁকার প্রতি প্রথম নেশা ছিল মেয়েটির। পরে হলেন নাচের মনোযোগী শিক্ষার্থী। শুরু করলেন নাচের তালিম নেওয়া। কাছের মানুষেরা ভাবতেন, মেয়েটি একদিন নৃত্যশিল্পী হবেন। কেউ আবার ভাবতেন চিত্রশিল্পী হিসেবেও সুনাম কুড়াবেন। কিন্তু সবার ভবিষ্যদ্বাণী মিথ্যা প্রমাণ করে হয়ে উঠেছেন সংগীতশিল্পী। বলছি সাবরিনা পড়শীর কথা। শুধু তাই নয়, গানে গানে শ্রোতাদের মন কাড়তেও সময় লাগেনি তাঁর, যার সুবাদে স্বল্প সময়ে পেয়েছেন তারকাখ্যাতি। তাঁর প্রতিটি নতুন আয়োজনের জন্য প্রতীক্ষায় থাকেন ভক্ত-শ্রোতা। তাঁদের প্রত্যাশা পূরণে পড়শীও ভিন্ন ধাঁচের গানের আয়োজন করেন।

একটি রিয়েলিটি শো থেকে পড়শীর উঠে আসার কথা সবারই জানা। এরপর এলেন, দেখলেন, জয় করলেন। হয়েছেন সংগীতবিষয়ক রিয়েলিটি শোর বিচারকও। মডেলিং, উপস্থাপনায়ও তাঁকে পাওয়া গেছে। গত বছর ‘মারিয়া ওয়ান পিস’ নাটকে অভিনেত্রীরূপে পড়শী অনেকের মনোযোগ কেড়েছেন। সাজিন আহমেদ রচিত ও পরিচালিত এই নাটকে পড়শীর বিপরীতে ছিলেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা ঋষি কৌশিক।

চলতি বছর ‘লাভ স্টেশন’ নাটকেও মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন। গত ১৬ মার্চ ‘ভালোবাসার তিন দিন’ নাটকে দর্শক পড়শীকে আবিষ্কার করেছেন কিছুটা ভিন্নরূপে। সুলতান এন্টারটেইনমেন্টের ইউটিউব চ্যানেলে এটি প্রকাশ হয়েছে। মহিদুল মহিম পরিচালিত এ নাটকে পড়শীর বিপরীতে তৃতীয়বারের মতো অভিনয় করেছেন জোভান আহমেদ। অভিনয়ের পাশাপাশি এ নাটকে তাঁর গাওয়া গানও শ্রোতারা বেশ গ্রহণ করেছেন। তাই সব মিলিয়ে পড়শী এখন দর্শক-শ্রোতার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

অনেকেই ভাবছেন গান নয়, এখন অভিনয়ে নিয়মিত হবেন পড়শী। বিষয়টি নিজেই খোলাসা করলেন। পড়শী বলেন, ‘আমার প্রধান পরিচয়– আমি কণ্ঠশিল্পী। এর বাইরে অভিনয়, মডেলিং, উপস্থাপনা যা কিছুই করি, তা নিতান্তই শখের বশে করা।’ এর পরও এই শিল্পীর কাছে প্রশ্ন ছিল– শখের বশে হলেও অভিনয় নিয়ে অনেকের নজর কেড়েছেন, সে হিসেবে আগামীতেও অভিনয়ে নিয়মিত দেখা যাবে কিনা? উত্তরে খানিক হেসে পড়শী বলেন, ‘আমার অভিনয় দর্শকের কতটা নজর কাড়তে পেরেছে জানি না, কিছু মানুষের ভালো লাগার কথা জেনে মনে হয়েছে, কিছুটা হলেও দর্শকের মনে দাগ কাটতে পেরেছি। দর্শকের প্রশংসা আমাকে নতুন কাজের ব্যাপারে আগ্রহী করেছে। তবে সবকিছুর আগে ও পরে গানই প্রাধান্য পাবে। কারণ, সংগীতই আমার ধ্যানজ্ঞান। যাঁদের জন্য আমি আজকের পড়শী, তাঁদের ভালোবাসার প্রতিদানে আজীবন গাইতে চাই। ভক্ত-শ্রোতার জন্য উৎসর্গ করার বাসনা নিয়েই সংগীতাঙ্গনে পথচলা।’

শ্রোতাদের জন্য শুধু একক প্রকাশ নয়, স্টেজ শোতেও তুমুল ব্যস্ততা। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যেমন কাজ করতে চান, তেমনি নিরীক্ষাধর্মী আয়োজনেও অংশ নিতে চান এ শিল্পী। প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছেন এমন কিছু গান করতে, যা শ্রোতার কাছে ব্যতিক্রমী আয়োজন বলে মনে হবে। ভক্তদের ভালোবাসা নিয়ে পথচলা দীর্ঘ করতেই তাঁর এই পরিকল্পনা। গান নিয়ে অনেক কথার পরে পড়শী এক পর্যায়ে জানালেন তাঁর এক পোষা বিড়ালের কথা। অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করেছেন বিড়ালকে। এরপর ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করিয়েছেন। মেয়ে বলে ডাকেন তাকে। পড়শী জানান, তাঁর বিড়ালের নাম পুটু। শুটিং, কনসার্ট যেখানেই যান না কেন– তিনি তাঁর মেয়ে পুটুকে নিয়ে যান। বাসায় তার সঙ্গে কাটান আনন্দময় কিছু সময়।