ঢাকা সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩

মহড়াকক্ষ ঘুরে

‘নেতা যে রাতে নিহত হলেন’

‘নেতা যে রাতে নিহত হলেন’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান [১৭ মার্চ ১৯২০–১৫ আগস্ট ১৯৭৫]

মীর সামী

প্রকাশ: ০২ আগu ২০২৩ | ১৮:০০ | আপডেট: ০৩ আগu ২০২৩ | ০৭:১৮

শুরু হয়েছে শোকের মাস আগস্ট। শোককে শক্তিতে পরিণত করতেই মঞ্চে উঠছে প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনের আলোচিত গল্প ‘নেতা যে রাতে নিহত হলেন’। নাটকটির নাট্যরূপ ও নির্দেশনায় রয়েছেন রেজানুর রহমান। উদয়পুর গ্রামের সহজ-সরল ভাগচাষি রতন মাঝি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে দেখা করতে প্রথম ঢাকা আসেন। গ্রাম থেকে লঞ্চে করে ঢাকা আসতেই সন্ধ্যা। এরপর লঞ্চ থেকে নেমে লোকজনকে জিজ্ঞেস করতে করতে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির সামনে পৌঁছাতেই রাত হয়ে যায়। এত রাতে নেতাকে আর দেখতে পাবেন না বলে তিনি তাঁর বাড়ির সামনের রাস্তায় বসে থাকেন। এমন সময় সন্দেহজনক তাঁকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পুলিশের জেরায় জানা যায়, রতন মাঝি তাঁর জমিতে ফলানো কালোজিরা ধানের চিড়া নেতার জন্য নিয়ে এসেছেন। নেতা এক মুঠ মুখে দিলে তাঁর জীবন ধন্য হয়ে যাবে...। বাস্তবে তিনি আর নেতার দেখা পান না। কারণ, সেই রাতেই ঘাতকের হাতে নিহত হন বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এমনই গল্প নিয়ে ইমদাদুল হক মিলন লিখেছেন ‘নেতা যে রাতে নিহত হলেন’। নাটকের মূল চরিত্রে রতন মাঝির ভূমিকায় অভিনয় করছেন সুকর্ণ হাসান। অন্যান্য চরিত্রে আছেন– মনি কাঞ্চন, মিন্টু সর্দার, রিজভী আহমেদ, আজিম উদ্দীন, মনিরুল হক ঝলক, তরিকুল রিমন, এসপি খান শাওন, রেজিনা রুনি, মাহফুজা আফনান অপ্সরা ও রুবেল। নাটকটির মঞ্চ নির্মাণ করছেন– ফজলে রাব্বি সুকর্ণ, লাইটে অম্লান বিশ্বাস, পোশাকে এনাম তারা সাকি, আবহসংগীতে অসীম কুমার নট্ট, রূপসজ্জায় শুভাশীষ দত্ত তন্ময় এবং পোস্টার বানিয়েছেন ধ্রুব এষ। নাট্য সংগঠন এথিকের ১২তম প্রযোজনা এটি। জানা গেছে, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হবে।

 গত এক মাস ধরে চলছে রাজধানীর আনন্দ আলো ভবন এবং শিল্পকলা একাডেমিতে নাটকটির নিয়মিত মহড়া। সম্প্রতি আনন্দ আলো ভবনের মহড়ায় গিয়ে দেখা মিলল নাট্যকার, নির্দেশক ও অভিনয়শিল্পীদের।  নির্দেশক রেজানুর রহমান বলেন, “মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে উদ্বুদ্ধ তারুণ্যনির্ভর একটি নাট্য সংগঠন এথিক। ‘নেতা যে রাতে নিহত হলেন’ এথিকের ১২তম প্রযোজনা। প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার ইমদাদুল হক মিলনের এই গল্পে বঙ্গবন্ধুর প্রতি দেশের একজন সাধারণ মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের শক্তি দেখে আমরা এথিক পরিবার সিদ্ধান্ত নিই এ গল্পকেই মঞ্চে আনার। কারণ, আমরা মনে করি বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। তাঁকে যারা সপরিবারে নির্মম-নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে, তাদের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ ও ঘৃণা ছড়ানোর এখনই সময়।” অন্যদিকে কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, ‘শোকের মাসে আমার এই গল্প নিয়ে এথিক থিয়েটার কাজ করছে, এটা অন্যরকম এক ভালো লাগা। আমি এরই মধ্যে নাটকটির নাট্যরূপ ও মহড়া দেখেছি। তারা প্রত্যেকেই দারুণ কাজ করছেন। আশা করছি, প্রযোজনাটি সবার ভালো লাগবে।’ বঙ্গবন্ধুর প্রতি এক সাধারণ মানুষের ভালোবাসার গল্পটি নিয়ে সিনেমাও তো হতে পারত? জানতে চাইলে, ইমদাদুল হক মিলন বলেন, ‘হতে পারে, কারণ এই গল্পে সিনেমাটিক সব উপকরণ রয়েছে। তবে সিনেমা না হলেও কিন্তু বিটিভিতে আমার এই গল্পটি নিয়ে বাদল রহমান টেলিভিশন নাটক করেছেন।’ v

আরও পড়ুন