ছাত্রলীগের দুষ্কর্ম হইতে মুক্তি নাই!
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৮:০০
নেতাকর্মীর নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কারণে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আবারও সংবাদের বিষয়বস্তু হইয়াছে।
রবিবার সমকালের এক প্রতিবেদনে বলা হইয়াছে, শিক্ষাজীবন শেষ হইবার ছয় মাস অতিক্রান্তের পরও হলের আসন ত্যাগ না করায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) রহমতুন্নেসা হল শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি তামান্না আক্তার তন্নীকে সম্প্রতি হল প্রশাসন হল ত্যাগ করিবার নির্দেশ দেয়। কিন্তু তন্নী ওই নির্দেশ মান্য করা দূরস্থান, বরং হলের গেটে তালা ঝুলাইয়া দেন; যেন হলটি তাঁহার নিজস্ব সম্পত্তি। ফলস্বরূপ ভোগান্তিতে পড়েন হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শনিবার সমকালসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম জানায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ক্যাম্পাসে বৃহস্পতি ও শুক্রবার ছাত্রলীগের একাধিক গ্রুপ দফায় দফায় নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষে লিপ্ত হইলে ক্যাম্পাসে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।
শুধু উহাই নহে; অস্ত্র উঁচাইয়া প্রতিপক্ষকে ধাওয়া করিবার ছবি প্রকাশ করায় অস্ত্রধারী গ্রুপের কর্মীরা ক্যাম্পাসের প্রথম আলো প্রতিনিধিকে মারধর করে বলিয়া অভিযোগ উঠিয়াছে। সাংবাদিককে আহত করা যখন ডাল-ভাত হইতেছে, তখন সাধারণের না জানি কী দুরবস্থা!
পেশিশক্তিতে আসন এমনকি হল দখল, অন্তর্কোন্দলজনিত সংঘাত-সংঘর্ষে সংশ্লিষ্ট হওয়া এবং সাংবাদিক নির্যাতনের ন্যায় ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটানো ছাত্রলীগের নেতাকর্মীর জন্য নূতন ঘটনা নহে। উপরন্তু শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ বিঘ্নকারী এহেন উদ্বেগজনক পরিস্থিতি শুধু রাজশাহী বা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নহে, দেশের প্রায় সকল উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই বিরাজমান। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক, না সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ, না সংগঠনটির শীর্ষ নেতৃত্ব কাহারও সেইদিকে দৃষ্টিপাতের অবকাশ নাই।
এমনকি স্বাধীনতার পূর্বাপর সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী ছাত্রলীগ; উহার সদস্যদের এহেন বেপরোয়া কর্মকাণ্ডে স্বীয় ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হইলেও সরকারও এ ক্ষেত্রে অগ্রসর হয় নাই। নিঃসন্দেহে এই সকল কর্মকাণ্ড সংগঠনটির অপরাধপ্রবণ সদস্যদের এক প্রকার প্রণোদনা জোগাইতেছে।
আমরা বিশ্বাস করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট থাকিলে এহেন পরিস্থিতির অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। তৎসহিত সরকারকে অবশ্যই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষার অনুকূল পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে উহার প্রতিশ্রুতি পূরণে তৎপর থাকিতে হইবে।