‘উচ্চ পর্যায়ের’ তদন্তেরও এই হাল!

সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৩ | ১৮:০০
নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে ভূমি অফিসের সহকারী সুলতানা জেসমিনের প্রাণহানির ঘটনায় ‘উচ্চ পর্যায়ের কমিটি’ যে তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করিয়াছে, উহাতে উচ্চ আদালতের সন্তুষ্ট না হওয়াই স্বাভাবিক। প্রতিবেদনে যদি গ্রেপ্তার প্রক্রিয়ার ন্যায় গুরুতর দিকই অনুল্লিখিত থাকে; কমিটি তাহা হইলে কয়েক মাস ধরিয়া কী ‘তদন্ত’ করিয়াছে? মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের নেতৃত্বে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, সিভিল সার্জন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিলিয়াও যদি আদালতের ভাষায় ‘অস্পষ্ট’ তদন্ত করিয়া থাকে, আমরা কাহাদের উপর ভরসা করিব?
বস্তুত সুলতানা জেসমিনকে যে প্রক্রিয়ায় আটক ও ‘জিজ্ঞাসাবাদ’ এবং দৃশ্যত মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হইয়াছিল, উহা ছিল সংবিধান, মানবাধিকার, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা, প্রচলিত আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এই সকল ঘটনা প্রকাশ্যে ও স্থানবিশেষে সিসিটিভির নজরদারিতে ঘটিয়াছে। সেই প্রাণহানির তদন্ত করিতে বাঘা আমলাগণেরও কীসের ভয়? আমরা মনে করি, নাগরিক নিরাপত্তা ও অধিকারের প্রশ্নেই সুলতানা জেসমিনের প্রাণহানির সুষ্ঠু তদন্ত ও উপযুক্ত বিচার হওয়া আবশ্যক। আমাদের প্রত্যাশা ছিল, খোদ র্যাবের পক্ষ হইতেই দায়ী ব্যক্তিগণের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা লওয়া হইবে। কারণ, র্যাবের নিকট আটকাবস্থায় প্রাণহানির ঘটনাটি এমন সময় ঘটিয়াছিল, যখন সংস্থাটির কতিপয় সদস্যের কর্মকাণ্ড দেশে ও বিদেশে প্রশ্নের জন্ম দিয়াছিল। ব্যক্তিবিশেষের অবিমৃশ্যকারিতার জন্য সমগ্র বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হইবে কেন? এখন দেখা যাইতেছে, আমরা বোকার স্বর্গের বাসিন্দা। অভিযুক্ত ও তদন্তকারীগণই বরং চতুর।