নির্বাচনী অনিয়ম ছাড়াও সংঘাত, সংঘর্ষ ও প্রাণহানির মধ্য দিয়ে সাত ধাপে যেভাবে ১০ম ইউনিয়ন পরিষদ তথা ইউপি নির্বাচন 'সম্পন্ন' হলো, তা কোনো বিবেচনাতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। দেশের শীর্ষস্থানীয় একটি মানবাধিকার সংগঠনের হিসাব ও নিজস্ব প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সমকালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যাচ্ছে, সাত দফায় নির্বাচনী সহিংসতায় অন্তত ১৪০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আমাদের প্রশ্ন- এটা কি ভোটের, না রক্তপাতের 'উৎসব'? আমরা দেখেছি, চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে দেশের অন্যতম প্রধান বিরোধী দল বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে অংশগ্রহণ না করা সত্ত্বেও সহিংসতা থেমে ছিল না। অধিকাংশ ইউনিয়ন পরিষদে ক্ষমতাসীন দলের মধ্যেই মনোনীত ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হত্যা, অগ্নিসংযোগ, হামলা, মামলা চলেছে। 'রাজায় রাজায়' যুদ্ধে উলুখাগড়া সাধারণ নাগরিকের প্রাণও কম যায়নি। আরও উদ্বেগের বিষয়, প্রত্যেক দফায় নির্বাচনের পর নির্বাচন কমিশনের পক্ষে 'কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া ভোট শান্তিপূর্ণ' হওয়ার ভাঙা রেকর্ড বাজানো হয়েছে। আসলে যে এর মধ্য দিয়ে স্থানীয় সরকার নির্বাচন ব্যবস্থারই বারোটা বাজানো হলো!
সপ্তম দফা নির্বাচনের পরও নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, 'উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হয়েছে।' অন্তত ১৪০ জনের প্রাণহানির পর এ ধরনের বক্তব্যে এমন প্রশ্ন অসংগত হতে পারে না- উৎসবমুখর পরিবেশ মানে কি প্রাণহানির উৎসব? আমরা মনে করি, ভোটের জন্য নাগরিকদের প্রাণহানির পর এ ধরনের বক্তব্য নিহত ব্যক্তি ও তার স্বজনদের প্রতি উপহাস ছাড়া আর কিছু হতে পারে না। আমরা গভীর বিস্ময় ও বিক্ষোভের সঙ্গে দেখেছি, প্রত্যেক দফা নির্বাচনের পরই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- এ ক্ষেত্রে তাদের ব্যর্থতা নেই; কমিশনের দায় নেই। তাহলে দায় কার? বিলম্বে হলেও, বিদায় বেলায় হলেও এ প্রশ্নের উত্তর বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে দিতে হবে। নির্বাচনের প্রথম ধাপ থেকেই যেভাবে হানাহানি হয়েছে; নির্বাচন কমিশন সংগত ও শক্ত অবস্থান গ্রহণ করলে পরবর্তী ধাপগুলোতে অন্তত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকত বলে আমরা বিশ্বাস করি। বড় কথা, ইউপি নির্বাচনে এই চিত্র সার্বিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য স্বস্তিকর হতে পারে না। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে বিরোধী দল ও পর্যবেক্ষকদের মধ্যে নানা প্রশ্ন তো ছিলই; এখন স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচনও যদি এভাবে দুর্বৃত্তদের অবারিত প্রান্তরে পরিণত হয়; তাহলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ভরসার কাচের দেয়ালটিও যে আর থাকে না!
আমরা মনে করি, সাত দফার ইউপি নির্বাচনের চিত্র দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থার জন্য 'ওয়েকআপ কল'। এভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও কেন্দ্র দখল, জাল ভোট, এজেন্ট বের করে দেওয়া এবং সংঘর্ষ ও হামলার খবর গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ও জনপ্রতিনিধিত্বের জন্য দীর্ঘমেয়াদে আরও কুফল বয়ে আনবে। এই চিত্র রাজনীতির বাইরে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্যও হতাশাজনক। স্থানীয় সরকার নির্বাচনও যদি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত না হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নাগরিকরা আস্থা রাখবে কীভাবে? বস্তুত সন্ত্রাস ও সহিংসতা কীভাবে মোকাবিলা করা যায়; কীভাবে দলের মধ্যেই ক্ষমতার জন্য হানাহানি বন্ধ করা যায়- এ ব্যাপারে সরকারের নীতিনির্ধারণী মহলকেও ভাবতে হবে।
আমরা জানি, নতুন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছে। সেই লক্ষ্যে গঠিত 'সার্চ কমিটি' ইতোমধ্যে অনুসন্ধান কাজ শুরু করেছে। সাত দফার ইউপি নির্বাচন তাদের জন্যও শিক্ষণীয় হতে পারে। নির্বাচন কমিশনে যদি সৎ, যোগ্য ও মেরুদণ্ডসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া না যায়, তাহলে ভবিষ্যতের স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনগুলোতে আমাদের একই অনাকাঙ্ক্ষিত চিত্র দেখতে হবে। সবকিছুর আগে সাত দফার ইউপি নির্বাচনে প্রতিটি সংঘাত ও রক্তপাতের আইনি প্রতিকার নিশ্চিত করতেই হবে। আমরা জানি, নির্বাচনী অনিয়ম নিয়ে মামলার ফলাফল প্রাপ্তিতে থাকে দীর্ঘসূত্রতা। সহিংসতার বিচারও পাওয়া যায় বলে নজির নেই। কিন্তু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার স্থিতি এবং ভোট প্রদানে সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে এসব অঘটনের প্রতিকার করতে হবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে।
সপ্তম দফা নির্বাচনের পরও নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, 'উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হয়েছে।' অন্তত ১৪০ জনের প্রাণহানির পর এ ধরনের বক্তব্যে এমন প্রশ্ন অসংগত হতে পারে না- উৎসবমুখর পরিবেশ মানে কি প্রাণহানির উৎসব? আমরা মনে করি, ভোটের জন্য নাগরিকদের প্রাণহানির পর এ ধরনের বক্তব্য নিহত ব্যক্তি ও তার স্বজনদের প্রতি উপহাস ছাড়া আর কিছু হতে পারে না। আমরা গভীর বিস্ময় ও বিক্ষোভের সঙ্গে দেখেছি, প্রত্যেক দফা নির্বাচনের পরই নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- এ ক্ষেত্রে তাদের ব্যর্থতা নেই; কমিশনের দায় নেই। তাহলে দায় কার? বিলম্বে হলেও, বিদায় বেলায় হলেও এ প্রশ্নের উত্তর বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে দিতে হবে। নির্বাচনের প্রথম ধাপ থেকেই যেভাবে হানাহানি হয়েছে; নির্বাচন কমিশন সংগত ও শক্ত অবস্থান গ্রহণ করলে পরবর্তী ধাপগুলোতে অন্তত শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় থাকত বলে আমরা বিশ্বাস করি। বড় কথা, ইউপি নির্বাচনে এই চিত্র সার্বিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য স্বস্তিকর হতে পারে না। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে বিরোধী দল ও পর্যবেক্ষকদের মধ্যে নানা প্রশ্ন তো ছিলই; এখন স্থানীয় সরকার পরিষদ নির্বাচনও যদি এভাবে দুর্বৃত্তদের অবারিত প্রান্তরে পরিণত হয়; তাহলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ভরসার কাচের দেয়ালটিও যে আর থাকে না!
আমরা মনে করি, সাত দফার ইউপি নির্বাচনের চিত্র দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থার জন্য 'ওয়েকআপ কল'। এভাবে স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও কেন্দ্র দখল, জাল ভোট, এজেন্ট বের করে দেওয়া এবং সংঘর্ষ ও হামলার খবর গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা ও জনপ্রতিনিধিত্বের জন্য দীর্ঘমেয়াদে আরও কুফল বয়ে আনবে। এই চিত্র রাজনীতির বাইরে সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্যও হতাশাজনক। স্থানীয় সরকার নির্বাচনও যদি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত না হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর নাগরিকরা আস্থা রাখবে কীভাবে? বস্তুত সন্ত্রাস ও সহিংসতা কীভাবে মোকাবিলা করা যায়; কীভাবে দলের মধ্যেই ক্ষমতার জন্য হানাহানি বন্ধ করা যায়- এ ব্যাপারে সরকারের নীতিনির্ধারণী মহলকেও ভাবতে হবে।
আমরা জানি, নতুন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছে। সেই লক্ষ্যে গঠিত 'সার্চ কমিটি' ইতোমধ্যে অনুসন্ধান কাজ শুরু করেছে। সাত দফার ইউপি নির্বাচন তাদের জন্যও শিক্ষণীয় হতে পারে। নির্বাচন কমিশনে যদি সৎ, যোগ্য ও মেরুদণ্ডসম্পন্ন ব্যক্তিদের নিয়োগ দেওয়া না যায়, তাহলে ভবিষ্যতের স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনগুলোতে আমাদের একই অনাকাঙ্ক্ষিত চিত্র দেখতে হবে। সবকিছুর আগে সাত দফার ইউপি নির্বাচনে প্রতিটি সংঘাত ও রক্তপাতের আইনি প্রতিকার নিশ্চিত করতেই হবে। আমরা জানি, নির্বাচনী অনিয়ম নিয়ে মামলার ফলাফল প্রাপ্তিতে থাকে দীর্ঘসূত্রতা। সহিংসতার বিচারও পাওয়া যায় বলে নজির নেই। কিন্তু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার স্থিতি এবং ভোট প্রদানে সাধারণ নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে এসব অঘটনের প্রতিকার করতে হবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে।
মন্তব্য করুন