- মতামত
- নিউমার্কেটের সংঘর্ষ: সব পক্ষের দায়িত্বশীলতা কাম্য
নিউমার্কেটের সংঘর্ষ: সব পক্ষের দায়িত্বশীলতা কাম্য
রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনায় দু'জনের মৃত্যু প্রমাণ করছে- তুচ্ছ ঘটনার মাশুল কতটা ভয়াবহ হতে পারে। সোম ও মঙ্গলবারের ঘটনার পর সেখানে পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হলেও এত বড় ঘটনা কেন ঘটল, তা খুঁজে বের করা জরুরি। বৃহস্পতিবার সমকালের শীর্ষ প্রতিবেদন অনুসারে, উত্তেজনায় কারা ঘি ঢেলেছে তাদের খুঁজছে গোয়েন্দা সংস্থা। বস্তুত এ ঘটনায় খোদ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠছে, তাও তদন্ত করা প্রয়োজন।
পরিস্থিতি আঁচ করেও পুলিশের নিষ্ফ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ গুরুতর বলেই আমরা মনে করি। প্রায় সব সূত্রই নিশ্চিত করছে, সোমবার রাতে নিউমার্কেটেরই দুই দোকান কর্মচারীর মধ্যকার দ্বন্দ্বে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের জড়ানো হয়। সোমবার রাতেই যেভাবে ছাত্রদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ হয়, তার প্রভাব পরদিনও যে পড়তে পারে- তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অজানা থাকার কথা নয়। আগের রাতের সংঘর্ষ বন্ধে পুলিশ ভূমিকা রাখলেও মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তারা কেন নিষ্ফ্ক্রিয় ছিল? আমরা জানি, ওই এলাকায় নিউমার্কেট থানা যেমন রয়েছে, তেমনি নীলক্ষেত ও সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে দুটি পুলিশ বক্সও আছে। এমনকি পরিস্থিতির আলোকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যথেষ্ট সদস্য মোতায়েন করাও অসম্ভব ছিল না। তারপরও মঙ্গলবার সেখানে যেভাবে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তা দুঃখজনক। মূলত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নীরবতার সুযোগেই মঙ্গলবার হামলা-পাল্টা হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সেখানে সংঘর্ষের মাঝে পড়ে মারা যান নাহিদ হাসান। আহতদের মধ্যে যে দুই ছাত্র ও এক দোকানকর্মীর অবস্থা গুরুতর ছিল; তাদের মধ্যে দোকানকর্মী মোরসালিনের মৃত্যু হয় বৃহস্পতিবার।
নিউমার্কেট এলাকায় সংঘাতের ঘটনায় ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থী উভয়েই সংবাদ সম্মেলন করেছেন। ঢাকা নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতির বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য। তিনি সমকালকে বলেছেন, ছাত্ররা দোকানের মালপত্র লুট করেছে- এটা বিশ্বাস করি না। হেলমেট পরে রড দিয়ে কারা অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য যানবাহন ভাঙল? বলাবাহুল্য, সে প্রশ্ন আমাদেরও। ছাত্ররা সংবাদ সম্মেলনে হামলার ইন্ধনদাতা ও হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন এবং ফুটপাত দখলমুক্ত, চাঁদাবাজি বন্ধসহ যে ১০ দফা দাবি তুলেছেন; তার অধিকাংশই যৌক্তিক। অভিযোগ রয়েছে, নীলক্ষেত মোড় থেকে সায়েন্স ল্যাব পর্যন্ত বিভিন্ন বিপণিবিতান ছাড়াও ফুটপাতে যে অস্থায়ী দোকান বসে সেখানে টাকার বিনিময়ে হকারদের সুযোগ করে দেয় সাবেক ও বর্তমান ছাত্রনেতার একটা অংশ, স্থানীয় প্রভাবশালী ও পুলিশের কিছু অসাধু সদস্য। এমনকি ঢাকা কলেজের ছাত্ররা অনেক সময় ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা দাবি করে। ফুটপাত ঘিরে সেখানে যে অসাধু চক্র গড়ে উঠেছে, তা চলতে দেওয়া যায় না।
বলা বাহুল্য, নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজসহ আশপাশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর প্রায়শই বাগ্বিতণ্ডাসহ ছোটখাটো সংঘাতের ঘটনা ঘটে বলে উভয়ের মধ্যকার ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। সেখানে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঢাকা কলেজের পরিচয় দিয়ে দোকানে খেয়ে বা কাপড়চোপড় কিনে টাকা কম দেয় অনেকেই। অন্যদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ী ও হকারদের দুর্ব্যবহার এমনকি ক্রেতাদের জিম্মি ও নারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে। আমরা মনে করি, উভয় পক্ষেরই দাবির কিছুটা হলেও সত্যতা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে উভয়েরই সতর্কতা প্রয়োজন।
সাধারণ ঘটনা কীভাবে প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে; নিউমার্কেটের সংঘর্ষ তারই একটি উদাহরণ। বলার অপেক্ষা রাখে না, এ ধরনের ঘটনায় উভয় পক্ষ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তেমনি সাধারণ মানুষকেও ভোগান্তিতে পড়তে হয়। প্রতিবেশী হিসেবে ঢাকা কলেজসহ আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সদ্ভাব বজায় রাখাই প্রত্যাশিত। ছাত্র, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে ভবিষ্যতে সেখানে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হতে পারে। তবে এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতেই হবে। এ ধরনের অস্থিতিশীলতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। পাশাপাশি, এ ঘটনায় নিহত দু'জনের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
পরিস্থিতি আঁচ করেও পুলিশের নিষ্ফ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ গুরুতর বলেই আমরা মনে করি। প্রায় সব সূত্রই নিশ্চিত করছে, সোমবার রাতে নিউমার্কেটেরই দুই দোকান কর্মচারীর মধ্যকার দ্বন্দ্বে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের জড়ানো হয়। সোমবার রাতেই যেভাবে ছাত্রদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ হয়, তার প্রভাব পরদিনও যে পড়তে পারে- তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অজানা থাকার কথা নয়। আগের রাতের সংঘর্ষ বন্ধে পুলিশ ভূমিকা রাখলেও মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তারা কেন নিষ্ফ্ক্রিয় ছিল? আমরা জানি, ওই এলাকায় নিউমার্কেট থানা যেমন রয়েছে, তেমনি নীলক্ষেত ও সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে দুটি পুলিশ বক্সও আছে। এমনকি পরিস্থিতির আলোকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা হিসেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যথেষ্ট সদস্য মোতায়েন করাও অসম্ভব ছিল না। তারপরও মঙ্গলবার সেখানে যেভাবে সংঘাতময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তা দুঃখজনক। মূলত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নীরবতার সুযোগেই মঙ্গলবার হামলা-পাল্টা হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। সেখানে সংঘর্ষের মাঝে পড়ে মারা যান নাহিদ হাসান। আহতদের মধ্যে যে দুই ছাত্র ও এক দোকানকর্মীর অবস্থা গুরুতর ছিল; তাদের মধ্যে দোকানকর্মী মোরসালিনের মৃত্যু হয় বৃহস্পতিবার।
নিউমার্কেট এলাকায় সংঘাতের ঘটনায় ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থী উভয়েই সংবাদ সম্মেলন করেছেন। ঢাকা নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতির বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য। তিনি সমকালকে বলেছেন, ছাত্ররা দোকানের মালপত্র লুট করেছে- এটা বিশ্বাস করি না। হেলমেট পরে রড দিয়ে কারা অ্যাম্বুলেন্সসহ অন্যান্য যানবাহন ভাঙল? বলাবাহুল্য, সে প্রশ্ন আমাদেরও। ছাত্ররা সংবাদ সম্মেলনে হামলার ইন্ধনদাতা ও হামলাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন এবং ফুটপাত দখলমুক্ত, চাঁদাবাজি বন্ধসহ যে ১০ দফা দাবি তুলেছেন; তার অধিকাংশই যৌক্তিক। অভিযোগ রয়েছে, নীলক্ষেত মোড় থেকে সায়েন্স ল্যাব পর্যন্ত বিভিন্ন বিপণিবিতান ছাড়াও ফুটপাতে যে অস্থায়ী দোকান বসে সেখানে টাকার বিনিময়ে হকারদের সুযোগ করে দেয় সাবেক ও বর্তমান ছাত্রনেতার একটা অংশ, স্থানীয় প্রভাবশালী ও পুলিশের কিছু অসাধু সদস্য। এমনকি ঢাকা কলেজের ছাত্ররা অনেক সময় ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা দাবি করে। ফুটপাত ঘিরে সেখানে যে অসাধু চক্র গড়ে উঠেছে, তা চলতে দেওয়া যায় না।
বলা বাহুল্য, নিউমার্কেট এলাকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজসহ আশপাশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর প্রায়শই বাগ্বিতণ্ডাসহ ছোটখাটো সংঘাতের ঘটনা ঘটে বলে উভয়ের মধ্যকার ক্ষোভ দীর্ঘদিনের। সেখানে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঢাকা কলেজের পরিচয় দিয়ে দোকানে খেয়ে বা কাপড়চোপড় কিনে টাকা কম দেয় অনেকেই। অন্যদিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ী ও হকারদের দুর্ব্যবহার এমনকি ক্রেতাদের জিম্মি ও নারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে। আমরা মনে করি, উভয় পক্ষেরই দাবির কিছুটা হলেও সত্যতা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে উভয়েরই সতর্কতা প্রয়োজন।
সাধারণ ঘটনা কীভাবে প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে; নিউমার্কেটের সংঘর্ষ তারই একটি উদাহরণ। বলার অপেক্ষা রাখে না, এ ধরনের ঘটনায় উভয় পক্ষ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তেমনি সাধারণ মানুষকেও ভোগান্তিতে পড়তে হয়। প্রতিবেশী হিসেবে ঢাকা কলেজসহ আশপাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সদ্ভাব বজায় রাখাই প্রত্যাশিত। ছাত্র, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের মাধ্যমে ভবিষ্যতে সেখানে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হতে পারে। তবে এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতেই হবে। এ ধরনের অস্থিতিশীলতা কোনোভাবেই কাম্য নয়। পাশাপাশি, এ ঘটনায় নিহত দু'জনের পরিবারকে যথাযথ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করতে হবে।
বিষয় : নিউমার্কেটের সংঘর্ষ সম্পাদকীয়
মন্তব্য করুন