দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নির্যাতনের স্থানে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনে 'বঙ্গবন্ধুর বিশ্ববিদ্যালয় ভাবনা ও বর্তমান বিশ্ববিদ্যালয়' শীর্ষক সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় লেখাপড়া ও গবেষণার জায়গা, সেটি এখন নির্যাতনের জায়গায় পরিণত হয়েছে। এই জায়গাটি নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন সোনার মানুষ গড়তে। শিক্ষার মাধ্যমে অসাম্প্রদায়িক এবং মুক্ত চিন্তার মানবিক মানুষ গড়তে, যারা কর্মদক্ষ হবে। আমরা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চাই। আর এটি বাস্তবায়ন করতে হলে সবাইকে আত্মসমালোচনার মধ্যে আসতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনিয়ম, দুর্নীতি, নিয়োগ বাণিজ্য, সিট বাণিজ্য, টেন্ডার বাণিজ্য এসব নিয়ে প্রতিনিয়ত খবর আসছে পত্রপত্রিকায়। দেশের সাধারণ মানুষ যখন এসব খবর দেখে তখন ভাবে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ; সেখানে দেশের সবচেয়ে জ্ঞানী-গুণীরা থাকেন, শিক্ষা-গবেষণা নিয়ে থাকেন, সেখানে এমনটি ঘটছে। আমরা এখানে শুধুই চাকরি করতে আসি না, আমরা আসি এখানে আদর্শ গ্রহণ এবং তা প্রতিষ্ঠা করার জন্য। সেই জায়গাটি আমাদের সুনিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই বঙ্গবন্ধুর সোনার মানুষ ও সোনার বাংলা গড়ে উঠবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ সার্টিফিকেট দিয়ে কেরানি তৈরি করা না।

সেমিনারের মুখ্য আলোচক বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) বঙ্গবন্ধু চেয়ার অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যদি সারা বছর নির্বাচন করে, তবে পড়বে কখন আর গবেষণা করবে কখন? এখন যা অবস্থা হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের নির্বাচন হয়, কিন্তু শিক্ষার্থীদের কোনো নির্বাচন হয় না। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় এখন অগণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান। এটি বঙ্গবন্ধুর বিশ্ববিদ্যালয় না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, আলোচক ছিলেন প্রাক্তন উপাচার্য ও নর্থ বেঙ্গল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক আব্দুল খালেক। সভাপতিত্ব করেন প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আহ্বায়ক অধ্যাপক এম খলিলুর রহমান।