খুলনায় অবৈধভাবে গড়ে ওড়া ইটভাটায় বিনষ্ট হচ্ছে চিরচেনা প্রকৃতি ও পরিবেশ, হারিয়ে যেতে বসেছে জীববৈচিত্র্য। এছাড়া কালো ধোঁয়া, গ্যাস ও ধুলায় মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে এলাকার মানুষ। তাছাড়া সংকুচিত হচ্ছে নদী; পাল্টে যাচ্ছে এর গতিপথ। চোখের সামনে এসব ইটভাটা চালু থাকলেও অজানা কারণে নীরব রয়েছে কর্তৃপক্ষ।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জনউদ্যোগ, খুলনা কর্তৃক জেলা প্রশাসক ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালকের কাছে পেশ করা স্মারকলিপিতে এসব কথা বলা হয়। বুধবার সকালে জনউদ্যোগ, খুলনার উদ্যোগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের তালিকা বহির্ভূত অর্ধশতাধিক ইটভাটাকে নীতিমালার আওতায় আনা ও শব্দদূষণ বন্ধের দাবিতে দুটি স্মারকলিপি পেশ করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন জনউদ্যোগ, খুলনার নারী সেলের আহ্বায়ক শামীমা সুলতানা শীলু, বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ফ ম মহসিন, ওয়ার্কার্স পার্টির মহানগর সভাপতি মফিদুল ইসলাম, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার উদ্দিন দিলু, পোল্ট্রি ফিস ফিড শিল্প দোকান মালিক সমিতির মহাসচিব এস এম সোহরাব হোসেন, গ্লোবাল খুলনার আহবায়ক শাহ মামুনর রহমান তুহিন, খুলনা উন্নয়ন ফোরামের কো-চেয়ারপার্সন ডা. সৈয়দ মোসাদ্দেক হোসেন বাবলু, ছায়াবৃক্ষের প্রধান নির্বাহী মাহাবুব আলম বাদশা, নাদিম হোসেন, জনউদ্যোগ, খুলনার সদস্য সচিব সাংবাদিক মহেন্দ্রনাথ সেন, ছাত্র ইউনিয়নের মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক জয় বৈদ্য, লতা মন্ডল, আব্দুল্লাহ হোসেন প্রমুখ।

স্মারকলিপিতে বলা হয়, মাঝে মধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করতে দেখা গেলেও বন্ধ হয়নি এসব অবৈধ ভাটা। ক্ষমতা, অর্থ ও আধিপত্যের মাধ্যমে প্রভাবশালীরা নদীর তীর ও খাস জমি দখলসহ ঘনবসতি এলাকা এমনকি হাসপাতাল-স্কুলের পার্শ্ববর্তী স্থানে গড়ে তুলেছে অর্ধশতাধিক অবৈধ ইটভাটা। এছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত একশ’ বৈধ ইটভাটা থাকলেও অধিকাংশতে মানা হচ্ছে না যথাযথ নীতিমালা।

স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, খুলনায় বৈধ ইট ভাটা রয়েছে রূপসায় ৬৩টি, ডুমুরিয়ায় ২০টি, বটিয়াঘাটায় ৫টি, তেরখাদায় ৯টি ও দিঘলিয়ায় ৩টি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে দুইশ’ মিটারের মধ্যে ঘনবসতি এলাকায় গড়ে তোলার পরেও পরিবেশ অধিদপ্তরের বৈধ তালিকায় কয়েকটি ইট ভাটা থাকার অভিযোগ রয়েছে। ওই ৫টি উপজেলাসহ পাইকগাছা, ফুলতলা ও কয়রায় অবৈধভাবে অর্ধশতাধিক ইটভাটা গড়ে উঠেছে, যা পরিবেশ অধিদপ্তরের তালিকা বহির্ভূত হওয়ার পরেও স্থানীয় প্রশাসন সেগুলো বন্ধে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিচ্ছে না।

স্মারকলিপি পেশের সময় জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসির আরেফীন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন নাগরিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।