বাঙালির আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক মুক্তির আকাঙ্ক্ষা পূরণের সংগ্রামই ভাষা আন্দোলন হিসেবে রূপ নিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান।

বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শিক্ষক সমিতি কর্তৃক আয়োজিত ‘ভাষা আন্দোলন: আর্থ-সামাজিক পরিপ্রেক্ষিত ভূমিকা ও মধ্যবিত্তের ভূমিকা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার মূল প্রবন্ধ পাঠকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আতিউর রহমান বলেন, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের একটি অংশ আমাদের ভাষা আন্দোলন। আমরা ভাষা আন্দোলন বলতে শুধু বুঝি ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন। কিন্তু এর ইতিহাস থেকে জানা যায় ভাষা আন্দোলনের উৎপত্তি আরও অনেক আগে। ১৯৪৮ থেকে ভাষা আন্দোলনের শুরু। আর তখন থেকে বেশ কয়েকটি নাম উল্লেখযোগ্য। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, আবুল কাসেম ও অলি আহাদ। তবে এদের মধ্যে বঙ্গবন্ধু আন্দোলনকে সুসংগঠিত করেছেন। ভাষার দাবিতে তিনিই প্রথম আটক হয়েছিলেন ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ।

মূল প্রবন্ধ পাঠকালে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান ভাষা আন্দোলন যে কেবল বাংলা কে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ছিল না, বরং এর সঙ্গে জড়িত ছিল সব শ্রেণির বাঙালির আর্থ-সামাজিক এবং রাজনৈতিক মুক্তির আকাঙ্ক্ষা পূরণের সংগ্রাম, সে বিষয়ে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরে এর নেপথ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর অবদানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

আলোচনা সভায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক। এসময় পঠিত প্রবন্ধের উপর আলোচনা করেন শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সেলিম।

এসময় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে সভাপতি আইনুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ভাষা শহীদ রফিকের নামে একটি ভাস্কর্য তৈরির আহ্বান জানান। পাশাপাশি নতুন ক্যাম্পাসে একটি হলের নামকরণ করারও দাবি জানান।

রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. নাফিস আহমদের সঞ্চালনায় সভায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. লুৎফর রহমান।

এসময় শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেনসহ প্রক্টর, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় চেয়ারম্যান ও অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।