ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেশের বড় সমস্যা: পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী

মুদ্রাস্ফীতি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেশের বড় সমস্যা: পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী

কর্মশালায় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম

বাকৃবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৩ | ১৩:১২ | আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৩ | ১৩:১২

মুদ্রাস্ফীতির হার বৃদ্ধি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেশের জন্য বড় সমস্যা বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেমের (বাউরেস) বার্ষিক গবেষণা অগ্রগতি কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। শনিবার ‘ভূমি, খাদ্য ও ভবিষ্যতের জন্য টেকসই এবং স্মার্ট কৃষি’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী ওই কর্মশালার উদ্বোধন বাকৃবির সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। বাউরেসের পরিচালক অধ্যাপক ড. জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান এবং ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অরগানাইজেশন (এফএও) বাংলাদেশের সিনিয়র টেকনিক্যাল উপদেষ্টা ড. কাতারজিনা জাপলিনা।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের মুদ্রাস্ফীতির হার ১০ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি চলছে। তবে এই সমস্যার জন্য বর্তমান সরকারের কোনো ত্রুটি নেই। আমদানিকৃত সকল পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জন্য এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। বিদেশি পণ্যের সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি দেশে উৎপাদিত বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদন বাড়ানোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং উৎপাদন বাড়ছে। দেশে শিল্প বৃদ্ধির হার বাড়ছে এবং প্রতিছর তা শতকরা ১১ শতাংশ। গত অর্থবছরে প্রায় এক মিলিয়ন মানুষকে কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশে পাঠানো হয়েছে। অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বর্তমান সরকার দেশের অর্থনীতিকে খুব ভালোভাবেই নির্বাহ করছে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, উদ্ভূত সংকট সমাধানে পথ দেখাচ্ছে এ দেশের কৃষি। কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধি, বাজারজাতকরণ ও ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছে দিতে যেসব বাধা-বিপত্তি রয়েছে তা উন্নত গবেষণার মাধ্যমে দূর করতে হবে। কৃষি গবেষণা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে অগ্রদূত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। আগামীর স্মার্ট কৃষিতে পরিবর্তনের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ও শিক্ষার্থীদের বিস্তর গবেষণা করতে হবে।

প্রধান পৃষ্ঠপোষকের বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, কৃষকের অবস্থা উন্নতির মাধ্যমে দেশের উন্নয়নের জন্য বাকৃবির শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীরা নিরলস গবেষণা করে যাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমকে বেগবান করতে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে। সম্প্রতি আমরা বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে ডাবল মাস্টার্স ডিগ্রি চালু করেছি। 

কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ‘এইচ-ইনডেক্স’ এর মানের উপর ভিত্তি করে ১৭ জনকে গ্লোবাল রিসার্চ ইমপ্যাক্ট রিকোগনাইজেশন অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কৃষি উদ্যোক্তা ও সফল সংগঠক হিসেবে স্মার্ট কৃষি ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রিতা ব্রোমো, মাৎস্য উৎপাদনে বিশেষ অবদানের জন্য ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার এ কে এম আবু নোমান রুবেল, হর্টিকালচার শস্য উৎপাদনে বিশেষ অবদানের জন্য ঠাকুরগাঁও এর হরিপুর উপজেলার মো. শাকিল আহম্মেদ রাজিব, বাণিজ্যিক ফল উৎপাদনে বিশেষ অবদানের জন্য রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মো. আমিনুল ইসলাম, দানাদার শস্য উৎপাদনে বিশেষ অবদানের জন্য ময়মনসিংহের মো. নজরুল ইসলাম এবং আনারস উৎপাদনে বিশেষ অবদানের জন্য টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার মো. মনিরুজ্জামানকে প্রফেসর ড. আশরাফ আলী খান স্মৃতি কৃষি পুরস্কার প্রদান করা হয়।

কর্মশালায় মোট ১৮টি টেকনিক্যাল সেশন ও দুইটি পোস্টার সেশন অনুষ্ঠিত হবে। সেশনগুলোতে মোট ৫৩৯ টি গবেষণা প্রকল্পের ফলাফল উপস্থাপন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে ৩৮৫ টি মৌখিক ও ১৫৪ টি পোস্টার উপস্থাপনা।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) গবেষণা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার উদ্দেশ্যে ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রিসার্চ সিস্টেম (বাউরেস)। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত বাউরেসের অধীনে সর্বমোট ৩ হাজার ৮৭৪টি গবেষণা প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬৩২ টি গবেষণা প্রকল্পের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। 


আরও পড়ুন

×