রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বিধ্বস্ত বাংলাদেশি জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধির জন্য ২ কোটি ২৪ লাখ ডলার ক্ষতিপূরণ পেয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন (বিএসসি)। বিদেশি বীমা কোম্পানির কাছ থেকে মিলেছে এই ক্ষতিপূরণ। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ২৩৭ কোটি টাকা। এই টাকা সরকারি বীমা কোম্পানি সাধারণ বীমা করপোরেশন হয়ে বিএসসির হিসাবে জমা হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

মুম্বাই থেকে তুরস্ক হয়ে গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে যায় বিএসসির জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধি। এর মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে ২৯ জন নাবিক নিয়ে জাহাজটি আটকা পড়ে। ২ মার্চ অলভিয়া বন্দরের অদূরে রকেট হামলায় জাহাজটিতে আগুন ধরে যায়। মৃত্যু হয় থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের। পরদিন জাহাজটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করে ২৮ জন নাবিক ও প্রকৌশলীকে সরিয়ে নেওয়া হয়। ওই বছরের ৯ মার্চ ঢাকায় ফেরেন তাঁরা। ওই হামলার পর জাহাজটি ইউক্রেনের বন্দরেই পড়েছিল।

হামলার পর জাহাজটির মালিক বিএসসি ক্ষতিপূরণ পেতে বিদেশি বীমা কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২ কোটি ২৪ লাখ ডলার দাবি করা হয়। ক্ষতিপূরণের সেই অর্থ ইতোমধ্যে দেশে এসেছে।

বিএসসির পরিচালক কমডোর জিয়াউল হক সমকালকে বলেন, ‘বীমা কোম্পানি থেকে ক্ষতিপূরণের ২ কোটি ২৪ লাখ ডলার দেশে এসেছে। কিন্তু এখনও সেটি বিএসসির হিসাবে জমা হয়নি। সাধারণ বীমা করপোরেশনের মাধ্যমে এই টাকা বিএসসির হিসাবে জমা হবে। 

এমভি বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজটি ২০৪ কোটি টাকায় কেনা হয়। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিএসসিকে বুঝিয়ে দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট অ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন (সিএমসি)। জাহাজটি ভাড়া নেয় ডেনিশভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ডেলটা করপোরেশনের সিঙ্গাপুর অফিস। সর্বশেষ গত বছরের ২১ ফেব্রুয়ারি তুরস্কের ইরাগলি বন্দর থেকে রওনা হয়। সিরামিকের কাঁচামাল বোঝাইয়ের জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরের আউটার অ্যাঙ্করেজে পৌঁছায়। ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরু হলে লোডিং বাতিল করে বন্দর ত্যাগের জন্য নির্দেশনা দেয় বিএসসি। নিয়ম অনুযায়ী কোনো বন্দরে প্রবেশ করলে বন্দর ত্যাগের অনুমতিরও প্রয়োজন হয়। ওই সময়ে বন্দরটির অপারেশন কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ায় তাঁরা আর বন্দর ত্যাগ করতে পারেননি। পরে রাশিয়ার রকেট হামলার শিকার হয় জাহাজটি। আটকে পড়া নাবিকদের বিভিন্ন দূতাবাসের সহায়তায় ১৩ দিন পর বাংলাদেশে আনা হয়।