- মতামত
- নির্বাচন কমিশন একটা ঘোরের মধ্যে আছে
সাক্ষাৎকার: অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ
নির্বাচন কমিশন একটা ঘোরের মধ্যে আছে

অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ স্থানীয় শাসন বিশেষজ্ঞ। তিনি কুমিল্লার ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর আগে ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং যুক্তরাজ্যের ওয়েলস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি সম্পন্নকারী তোফায়েল আহমেদের জন্ম ১৯৫৪ সালে, চট্টগ্রামে।
সমকাল: দেশে পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী সংসদ নির্বাচনের আগে এই পর্বকে নির্বাচন কমিশনের জন্য পরীক্ষা হিসেবে দেখা যেতে পারে?
তোফায়েল আহমেদ: আমি একে কোনো পরীক্ষা হিসেবে দেখতে চাচ্ছি না। এটি একটি রুটিন নির্বাচন। এখন যাঁরা আছেন, তাঁদের কেউ বাদ পড়বেন আবার নতুন কেউ আসবেন– এমন একটি ব্যবস্থাকে আইনের আওতায় রেখে আইনি শুদ্ধতা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। এর নাম তো নির্বাচন না। এখানে একটি দল থেকেই পাঁচজন, ১০ জন প্রার্থী হচ্ছেন। দেশে দুটি বড় রাজনৈতিক দল আছে। আছে আরও ছোট দল। এখন এই সিটি নির্বাচনে যাঁরা প্রার্থী হচ্ছেন, অধিকাংশই একটি দলের। একটি বড় দলের অনেকেই প্রার্থী হচ্ছেন। বাকি বড় দলটি বয়কট করছে। এ ছাড়া অন্যরা অসহায় হয়ে আছে। রাজনীতির মাঝে যদি কোনো সুষ্ঠু ধারা অব্যাহত না থাকে, তাহলে তো কোনো ফল আসবে না। এই পাঁচটি সিটি নির্বাচন থেকে রাজনীতিতে কোনো বড় ধরনের গুণগত পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই।
সমকাল: সিটি করপোরেশন নির্বাচন তো দলীয় প্রতীক ও মনোনয়নে হচ্ছে। এতেও কি গুণগত পরিবর্তন আসেনি?
তোফায়েল আহমেদ: নির্বাচনী ব্যবস্থার পরিবর্তন না করে শুধু চেয়ারম্যান বা মেয়র প্রার্থীকে দলীয় প্রতীক দিয়ে নির্বাচনের গুণগত পরিবর্তন আনা যায় না। আনা যে যায় না– তার প্রমাণ ইতোমধ্যে আমরা দেখে চলেছি।
সমকাল: বিএনপি অংশ না নিলেও ইসলামী আন্দোলনসহ কয়েকটি ছোট দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। তাতে কি নির্বাচনগুলো অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না?
তোফায়েল আহমেদ: ছোট ছোট দলের কেউ নির্বাচনে আসবে, এমন খবর দেখা যাচ্ছে। কিন্তু বিএনপি ছাড়াও কয়েকটি ছোট দল নির্বাচনটি বর্জন করার ঘোষণা দিয়েছে। ফলে এখানে সব দলের অংশগ্রহণমূলক বলতে যা বোঝায়, তা তো বলা যাবে না। তবে বলা যায়, বহু প্রার্থীর অংশগ্রহণ ঘটতে পারে।
সমকাল: সিটি করপোরেশনের নির্বাচনী প্রচারণায় স্থানীয় সংসদ সদস্য থেকে মন্ত্রীদের অংশগ্রহণ নিয়ে কথা উঠেছে। একজন মন্ত্রীকে সতর্কও করে চিঠি দিয়েছে কমিশন। তার মানে– নির্বাচন কমিশন সিরিয়াস?
তোফায়েল আহমেদ: আমার কাছে এটি খুব বড় কোনো ইস্যু মনে হয় না। কারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান বা আয়োজনের দায়িত্ব কার? কমিশনের নিশ্চয়ই। তাহলে কথা হচ্ছে– কমিশন কাজটি অর্থাৎ তার দায়িত্বটি যথাযথ পালন করতে পারছে কিনা; নির্বাচন কমিশনের যেভাবে দায়িত্ব পালনের কথা, সেটি সেভাবে করছে কিনা। না পারলে কেন পারছে না? প্রথম কথা হচ্ছে, ধরা যাক একটি জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করতে ১০ থেকে ১২ লাখ লোক দরকার। এখন এর সব লোকই কি কমিশনের?
সমকাল: না, সেখানে সরকারের লোকও আছে।
তোফায়েল আহমেদ: তাহলে যেহেতু সবাই কমিশনের লোক নয়; এখন সেসব লোক কীভাবে কাজ করবেন? তাঁর যদি কোনো আইনি কাঠামো না থাকে, তাহলে কী করে হবে? অর্থাৎ একটি আইনের শাসন থাকতে হবে। সেই আইনে বলা হবে– একজন সংসদ সদস্য কীভাবে দায়িত্ব পালন করবেন; একজন মন্ত্রী নির্বাচনের সময় কেমন ভূমিকা রাখবেন। আইনের শাসন থাকলে নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী ভূমিকা রাখতে পারবে। আইনের শাসন না থাকলে পারবে না। আমরা দুটি উদাহরণ দিতে পারি। গাইবান্ধার উপনির্বাচন কমিশন বন্ধ করেছিল। কিন্তু সেখানকার দোষীদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পেরেছিল? পারেনি। আবার কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে একজন সংসদ সদস্যের ভূমিকা নিয়ে কথা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পেরেছে? পারেনি। কমিশন তার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পেরেছি কি? তার মানে– আইনের শাসন নেই।
সমকাল: নির্বাচন কমিশন পারছে না কেন?
তোফায়েল আহমেদ: সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে– নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা সকল নির্বাহী কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হইবে। এখন এ ধারাবলে নির্বাচন কমিশন সব নির্বাহী ক্ষমতার অধিকারীকে আদেশ দিতে পারে। কিন্তু এটার তো কোনো বিধি নেই। কোনো আইন নেই। এখন নির্বাচন পরিচালনা করতে যা প্রয়োজন হয়, ধরুন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে প্রশাসন– এরা যদি কেউ নিয়ম না মানে তাহলে কী হবে, তার জন্য কোনো বিধান তো নেই।
সমকাল: নির্বাচনের সময় জনপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকার কথা। বাস্তবে কতটা তার প্রতিফলন হচ্ছে বলে আপনি মনে করেন?
তোফায়েল আহমেদ: প্রতিফলন যে হচ্ছে না– তা তো দেখা যায়। যেটা সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে। কিন্তু সেখানে এটা তো বলা নেই– নিয়ম না মানলে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একজন পুলিশ সুপার যদি দায়িত্ব পালন না করেন, তাহলে কমিশন কী করতে পারবে? কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারবে? পারবে না। তাহলে এমন আইন থেকে লাভ কী? মুখে মুখে বলা হয়– কমিশনের এই ক্ষমতা, সেই ক্ষমতা আছে। বাস্তবে মাঠে কতটুকু আছে, ভেবে দেখতে হবে। আমাদের কমিশনও মনে হয়, একটা ঘোরের মধ্যে আছে। তারা লোকবল চায়, অর্থ বরাদ্দ চায়। তারা লোকবল দিয়ে কী করবে? এত জনবলের তো দরকার নেই। ভারত আমাদের চেয়ে বড় দেশ। তাদের নির্বাচন কমিশনের চেয়ে আমাদের কমিশনের আকার বড়। এত বড় কমিশন তো দরকার নেই। নির্বাচন কমিশনের যেটা দরকার সেটা হলো, কাজ করার ক্ষমতা। ভারত এবং বাংলাদেশ দুই দেশেরই আইনের পূর্বসূরি হচ্ছে ব্রিটিশ আইন। সেই আইন নিয়ে ভারত পারলেও আমরা পারছি না। কারণ এখানে প্রশাসনে দলীয়করণ হয়েছে। প্রশাসনের মধ্যেও কে কার লোক– এটা বিবেচনায় আনা হয়।
সমকাল: বর্তমান নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে না, নাকি স্বাধীন হয়ে কাজ করতে চায় না?
তোফায়েল আহমেদ: কমিশনের যতটুকু ক্ষমতা আছে, তা কি যথাযথ প্রয়োগ করছে? করছে না। কমিশনের আচরণ ভালো করে খেয়াল করলে তার চরিত্র ও সামর্থ্য বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যাবে।
সমকাল: একটা সময়ে খুব আলোচনা হয়েছিল– সিটি করপোরেশনগুলোকে ‘নগর সরকার’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হবে। সেটি কেন বাস্তবায়ন করা গেল না?
তোফায়েল আহমেদ: প্রথমত, এটা বলার জন্য বলা। এক সময় এটা বলা হতো। এর আসলে কোনো ভিত্তি নেই। কারণ সিটি করপোরেশন তো স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। একটি নগরে ৫২ থেকে ৫৪টির মতো জরুরি পরিষেবা রয়েছে। তার মধ্যে সিটি করপোরেশন কয়টি সম্পন্ন করতে পারে এককভাবে? তার তো নির্ভরতা আছে। তবে সিটি করপোরেশনের আর্থিক এবং লোকবল সক্ষমতা আছে।
সমকাল: গোটা স্থানীয় সরকার কাঠামো নিয়েই তো প্রশ্ন রয়েছে।
তোফায়েল আহমেদ: বর্তমানে যে স্থানীয় সরকার রয়েছে, সেটাকে ঠিক কাঠামো বলা যায় না। অন্তত টেক্সট বুক ডেফিনিশন অনুসারে কাঠামো বলা যাবে না। আমাদের এখানে স্থানীয় সরকারের জন্য কয়েকটি আইন রয়েছে– ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, জেলা, পৌরসভা, সিটি করপোরেশন। প্রতিটির জন্য আলাদা আইন। এসবের জন্য কোনো একক আইন নেই। এটা হচ্ছে প্রথম দুর্বলতা। একটি সমন্বিত কাঠামোগত আইন দরকার। আমরা পাকিস্তান আমলের ‘বেসিক ডেমোক্রেসি’কে খারাপ বলতে পারি, তবে এর একটি কাঠামো ছিল। এখন সেটি নেই। রাষ্ট্রপতি শাসিত ব্যবস্থায় স্থানীয় পর্যায়েও একটি কাঠামো ছিল। সেটির সাংবিধানিক বৈধতা দিয়ে একটি পদ্ধতি দাঁড় করানো হয়েছিল। কিন্তু এখন তেমন কোনো কাঠামো নেই। আমাদের জাতীয় সরকারের কাঠামো হচ্ছে পার্লামেন্টারি বা সংসদীয়। আর স্থানীয় সরকারের কাঠামোটি আছে প্রেসিডেন্সিয়াল পদ্ধতির। এখানে চেয়ারম্যান বা মেয়র আছেন। এর বাইরে যারা আছেন, তাঁরা তেমন কেউ নন! আমরা এখনও আইয়ুব খানের সেই বেসিক ডেমোক্রেসি পদ্ধতিতেই চলছি। স্বাধীনতার ৫২ বছরেও পরিবর্তন আনিনি।
সমকাল: কেন পরিবর্তন আনা গেল না?
তোফায়েল আহমেদ: যখন রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় এসেছে তখন সংসদীয় রাজনীতিকে সামনে নিয়ে এসেছে; স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে পিছিয়ে রেখেছে। আবার যখন সামরিক শাসন এসেছে; তখন স্থানীয় সরকারকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। স্বাধীনতার পর আওয়ামী লীগ যখন রাষ্ট্রক্ষমতায়, সেই সময়ে তারা জাতীয় সমস্যাগুলোর দিকে নজর দিয়েছিল। একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে সেটাই স্বাভাবিক ছিল। স্থানীয় সরকার সংস্কারে মনোযোগ দেওয়ার পরিস্থিতি ছিল না। আবার জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতায় এলেন, তিনি স্থানীয় সরকারকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে চাইলেন।
সমকাল: কোনো উদাহরণ দিতে পারেন?
তোফায়েল আহমেদ: যেমন ১৯৭৩ সালে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে একটা অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছিল। নির্বাচিত অধিকাংশই ছিলেন মুসলিম লীগার। অনেকেই ছিলেন বেসিক ডেমোক্রেসির সঙ্গে যুক্ত। এর ফলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাঁদের একটি মানসিক দূরত্ব ছিল। সেই সময়ে একটি বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছিল রিলিফ বণ্টন নিয়ে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতৃত্ব স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিদের এড়িয়ে আলাদা রিলিফ কমিটি তৈরি করে। এতে স্থানীয় সরকারের সঙ্গে জাতীয় সরকারে থাকা রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের আরও দূরত্ব দেখা দেয়। এ সুযোগটাই পেয়েছিল জিয়াউর রহমানের সরকার। তিনি এসে দেখলেন, তৃণমূলের এসব লোক জনপ্রিয়। তিনি তাঁদের নিজের রাজনৈতিক কাজে লাগালেন। তিনি স্থানীয় সরকারের বাজেট বাড়িয়ে দিলেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সন্তুষ্ট থাকায় তিনি গণভোট দিতে পারলেন, নতুন দল গঠন করতে পারলেন। একই ধারাবাহিকতা এইচএম এরশাদও ক্ষমতায় এসে বজায় রাখলেন। কিন্তু খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি ক্ষমতায় এসে যখন গ্রাম সরকার করতে চাইল, তখন স্থানীয় সরকারের মধ্যে সন্দেহ ও অবিশ্বাস তৈরি হলো। বর্তমান সরকারের আমলেও স্থানীয় সরকারকে অবহেলা করা হচ্ছে। ধীরে ধীরে সবকিছু মাঠ প্রশাসনের হাতে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাই সামগ্রিকভাবে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী হতে পারেনি।
সমকাল: এই দুর্বলতা কাটাতে করণীয় কী?
তোফায়েল আহমেদ: এই দুর্বলতা কাটাতে হলে আইনি কাঠামোগুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করতে হবে। সাংগঠনিক কাঠামোগুলো পর্যালোচনা করতে হবে। সর্বশেষ রাজনৈতিকভাবে এটাকে আমরা কীভাবে দেখতে চাই, তার একটি সুরাহা করতে হবে। এই তিনটি বিষয় বিশ্লেষণ করার জন্য আমাদের একটি কমিশন করতে হবে। আমাদের প্রতিবেশী ভারত এ ধরনের কাজ করতে গেলে প্রথমে একটি কমিশন তৈরি করে। তারপর কমিশনের প্রস্তাব বা সুপারিশের ভিত্তিতে সব করা হয়। আমাদের এখানে সবকিছু করা হয় আমলাদের মাধ্যমে। স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে রাষ্ট্রকে শক্তিশালী ও গতিশীল করতে হলে প্রথমে একটি কমিশন গঠন করতে হবে। কমিশনের পরামর্শ মেনে সমন্বিত পরিকল্পনা নিতে হবে। একটি সমন্বিত স্থানীয় সরকার আইন করতে হবে। সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদের জন্য ভিন্ন ভিন্ন আইন দিয়ে স্থানীয় সরকারকে সমন্বয় করা যাবে না। এ ছাড়া কাঠামোগত সামঞ্জস্য আনতে হবে। সে জন্য একটি কাঠামোগত সমন্বিত আইনও দরকার। সেখানে কর্মচারী কাঠামো ও আর্থিক কাঠামো থাকবে। বাজেটের কতটা স্থানীয়ভাবে আর কতটা কেন্দ্র থেকে আসবে, তার একটি আর্থিক কাঠামো নির্ধারণ করতে হবে। স্থানীয় সরকারের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের জবাবদিহির সম্পর্কটা কী হবে– তাও নির্ধারণ করতে হবে।
সমকাল: নির্বাচনী ব্যবস্থায় কোনো পরিবর্তন আনতে হবে?
তোফায়েল আহমেদ: আনতে হবে। যেমন এখনকার মতো চেয়ারম্যান বা মেয়র এবং মেম্বার বা কাউন্সিলর নির্বাচনে আলাদা প্রার্থী হবে না। সবাই মেম্বার বা কাউন্সিলর নির্বাচন করবেন। সেখান থেকে পরে চেয়ারম্যান বা মেয়র নির্বাচিত হবেন, যেটা পার্লামেন্টারি পদ্ধতিতে হয়ে আসছে। ফলে যিনি চেয়ারম্যান বা মেয়র হতে চাইবেন, তিনি প্রথমে মেম্বার বা কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করবেন। তাহলে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী ও অংশগ্রহণমূলক হবে।
সমকাল: আজকের মতো শেষ করি। পাঁচ সিটি নির্বাচনের পরে অল্প সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সেই সময়ের মধ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা যাবে?
তোফায়েল আহমেদ: আমি আপাতত সিটি নির্বাচনকে জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে এক করে দেখতে চাই না। জাতীয় নির্বাচন বড় প্রেক্ষিত। স্থানীয় নির্বাচন কীভাবে হলো, কতটা সুষ্ঠু হলো, তা দিয়ে জাতীয় নির্বাচনকে নির্ণয় করা যাবে না। আমি অন্তত করতে চাই না। জুন মাসের মধ্যে সিটি নির্বাচনের হাঙ্গামা শেষ হবে। জুলাই মাসের পর বলা যাবে, জাতীয় নির্বাচনটি কেমন হবে। সেই সময়ের পর বলা যাবে, আগামী নির্বাচনটি কী ২০১৪-এর মতো হবে, নাকি ২০১৮-এর মতো; নাকি একেবারেই ভিন্নভাবে হবে।
সমকাল: সেই নির্বাচন নিয়ে আপনার আশাবাদ ও শঙ্কার কথা জানতে চাই।
তোফায়েল আহমেদ: আমার কোনো আশাবাদ নেই; শঙ্কাও নেই। আমি অপেক্ষা করছি।
সমকাল: আপনাকে ধন্যবাদ।
তোফায়েল আহমেদ: সমকালকেও ধন্যবাদ।
বিষয় : সাক্ষাৎকার অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ
মন্তব্য করুন