- মতামত
- বৃক্ষরোপণে জোর দিন
বৃক্ষরোপণে জোর দিন

সমতল, টিলা, পাহাড়, ডোবা-নালা আর নদনদীতে ভরপুর এক অপরূপ সৌন্দর্যের দেশ বাংলাদেশ। দিন যতই এগিয়ে যাচ্ছে, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ তত বদলাচ্ছে। পরিবেশের রক্ষাকবচ গাছ হারিয়ে যাচ্ছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি জমিজমা সংকুচিত হচ্ছে। আমরা জানি, একটা দেশের জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষায় ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা প্রয়োজন। কিন্তু সে তুলনায় বর্তমানে বনভূমির পরিমাণ হলো ১৩ শতাংশ; যদিও সরকারের দাবি ১৭ শতাংশ। বিশ্বব্যাপী শিল্পায়ন ও নগরায়ণের কারণে নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন করা হচ্ছে। ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে মানুষের স্বাস্থ্য ও জলবায়ু হুমকির মুখে পড়ছে।
পরিবেশ রক্ষায় গাছপালার ভূমিকা যে সর্বাধিক, তা বলাই বাহুল্য। জীবন ও জগতে খাদ্য বা শক্তির জোগানদাতা উদ্ভিদ নিজেই তার খাদ্য তৈরি করতে পারে, যা অন্য কোনো প্রাণীর পক্ষে অসম্ভব। প্রতিটি প্রাণীই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে উদ্ভিদের ওপর নির্ভরশীল। এক কথায় বৃক্ষ ছাড়া পৃথিবীতে জীবজগৎ অকল্পনীয় বা অবাস্তব হয়ে দাঁড়াবে। বৃক্ষ বাতাস থেকে কার্বন-ডাইঅক্সাইড শোষণ করে পরিবেশ রক্ষায় সহায়তা করে। অপরদিকে বাতাসে অক্সিজেন যোগ করে বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন গ্যাসের অনুপাত বজায় রাখে। উদ্ভিদ দূষণ রোধ করে বায়ুকে বিশুদ্ধ রাখে; বৃষ্টিপাত ঘটাতে সাহায্য করে। উদ্ভিদের অভাবে উর্বর, উৎপাদনশীল মাটি ধীরে ধীরে মরুভূমিতে পরিণত হয়। মাটির উর্বরতা বজায় রাখার জন্য দরকার বৃষ্টিপাত। বৃষ্টিপাত ঘটাতে গাছপালার আবশ্যকতা অনস্বীকার্য।
পরিবেশ রক্ষায় শুধু গ্রাম নয়, শহরের মানুষকেও নিতে হবে বিশেষ ভূমিকা। যাঁদের বাড়ির ছাদে পর্যাপ্ত জায়গা রয়েছে তাঁরা সেখানে বিভিন্ন জাতের ফলের গাছ লাগাতে পারেন। আসছে বর্ষা মৌসুম, যা বৃক্ষরোপণের উপযুক্ত সময়। তাই আসুন, সবাই মিলে নিজ বাড়ির আঙিনা, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসাসহ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বেশি বেশি গাছ লাগাই এবং তা পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণ করি। এ দেশকে ভরে তুলি সবুজায়নে। গ্রহণ করি নির্মল বাতাস।
ঢাকা
মন্তব্য করুন