বাংলাদেশ প্রবৃদ্ধি, সামাজিক গতিশীলতা ও শক্তিশালী আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্বকীয়তা বজায় রেখে বিশ্বের সামনে উদাহরণ সৃষ্টি করে চলেছে। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও জীবনমানের আমূল পরিবর্তন এটাই প্রমাণ করে। বাংলাদেশে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেভরন সবচেয়ে বৃহৎ আমেরিকান প্রতিষ্ঠান। সরকার ও পেট্রোবাংলার সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটি দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। দেশের বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাস ও কনডেনসেট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানও শেভরন বাংলাদেশ। ২০১৬ সাল থেকে বাংলাদেশে নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানি সরবরাহ করে আসছে এবং প্রতিষ্ঠানটির প্রতিদিনের সরবরাহ ক্ষমতা প্রায় ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ঘনফুট।

শেভরন বাংলাদেশ তিনটি গ্যাস ফিল্ড পরিচালনা করে– বিবিয়ানা, জালালাবাদ ও মৌলভীবাজার। যেখান থেকে দেশের গ্যাসের চাহিদার ৫০ শতাংশ এবং ৮০ শতাংশের বেশি কনডেনসেট উৎপাদন হয়।

বাংলাদেশের গর্বিত অংশীদার হিসেবে শেভরন গত ১২ বছরে সরাসরি ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার এবং স্থানীয় সরবরাহকারী ও ঠিকাদারের সঙ্গে চুক্তিতে ৫৫০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে। 

বর্তমানে শেভরন বাংলাদেশ কাজ করছে একটি ‘নিম্ন কার্বন নিঃসরণের’ টেকসই ভবিষ্যতের পথে। যেখানে সব মানুষের জন্য ভবিষ্যৎ উদ্ভাবন এবং বাস্তবসম্মত সমাধান নিশ্চিত হবে; যা দেশের জ্বালানি শক্তি এবং বৈশ্বিক সরবরাহ চেইন আরও টেকসই করে তুলবে। কার্বন নিঃসরণ হ্রাসের বৈশ্বিক লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে শেভরনের উৎপাদিত জ্বালানি ব্যবহারকারী প্রতিষ্ঠান ও খাতগুলোকে সহায়তা করবে। বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়িক কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে কার্বনের নিঃসরণ কমানো ও নতুন নিম্ন কার্বন জ্বালানি শক্তির ব্যবসা গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে শেভরন ২০২১ থেকে ২০২৮ সালের মধ্যে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। গত বছর দেশে শেভরন তাদের কার্যক্রমে কার্বন নিঃসরণ অফসেট করার জন্য সফলভাবে একটি গবেষণা সম্পন্ন করেছে এবং কম কার্বন নিঃসরণের ক্ষেত্র ও সুযোগগুলো চিহ্নিত করেছে।

শেভরনের সংস্কৃতি এবং সুনাম কয়েকটি মূলনীতির ওপর প্রতিষ্ঠিত। সেগুলো হলো– বিশ্বাস, নিরাপত্তা ও সততা। আমাদের আদর্শ দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল নিশ্চিত করা। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় শক্তি জোগাতে প্রয়োজনীয় জ্বালানি সরবরাহ করা এবং পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষা করেই সে ব্যবস্থা করা আমাদের অন্যতম কাজ। প্রয়োজনীয় জ্বালানি শক্তি সংগ্রহ ও সরবরাহ করা পরিবেশের কোনো ধরনের ক্ষতি না করে। এ লক্ষ্য অর্জনে আমরা প্রযুক্তিগত খুঁটিনাটিবিষয়ক জ্ঞানের সমন্বয় এবং সাশ্রয়ী ও কার্যকরী পদ্ধতির প্রয়োগে সচেষ্ট। এ প্রচেষ্টার মধ্য দিয়েই শেভরন বাংলাদেশে অসাধারণ নিরাপত্তা রেকর্ড এবং বিশ্বমানের উৎপাদন দক্ষতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।

পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়সহ বিভিন্ন স্তরে সামাজিক বিনিয়োগ শেভরনের বিশ্বব্যাপী ব্যবসায়িক কার্যক্রমের অন্যতম অনুষঙ্গ। বাংলাদেশে শেভরন ২০০৬ সাল থেকে কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম পরিচালনা করছে। সামাজিক বিনিয়োগের মূল ক্ষেত্রগুলো হলো– স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন। শেভরন নেতৃস্থানীয় বেসরকারি সংস্থাগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমেই প্রধানত এ প্রকল্পগুলো পরিচালনা করে। বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে শেভরন বাংলাদেশ কর্তৃক পরিচালিত গ্যাস প্লান্টের আশপাশের হাজারো মানুষ বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন উদ্যোগের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, শেভরন বাংলাদেশ