ঢাকা সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩

আবারও হায় হায় কোম্পানি!

আবারও হায় হায় কোম্পানি!

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ১৮:০০

প্রায় এক যুগ পূর্বে গ্রাহককে উচ্চ মুনাফার লোভ দেখাইয়া সংগৃহীত সহস্র কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনা ফাঁস হইবার পর ধারণা করা হইয়াছিল, দেশে যুবক, ডেসটিনি, ইউনিপেটুইউর অনুরূপ প্রতিষ্ঠানের দৌরাত্ম্য দূরীভূত হইবে। বিদ্যমান একাধিক আইন অনুসারেও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ব্যতীত কোনো প্রতিষ্ঠান ব্যাংকের ন্যায় আমানত সংগ্রহ করিতে পারে না। কিন্তু দুঃখজনক, বাস্তবে সকলই গরল ভেল বলিয়া মনে হইতেছে। বিভিন্ন নামে ভুঁইফোঁড় কোম্পানি দেশের অনেক স্থানে রীতিমতো কার্যালয় স্থাপন করিয়া ব্যাংকিং তৎপরতা চালাইতেছে। লক্ষ টাকায় মাসিক এক সহস্র বা ততোধিক টাকা লভ্যাংশের প্রলোভন দেখাইয়া সাধারণ মানুষের নিকট হইতে কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করিতেছে। এক পর্যায়ে সমুদয় টাকা লইয়া এলাকা হইতে উধাও হইয়া যাইতেছে।

এমনই এক হায় হায় কোম্পানি হইল যশোরের ঝিকরগাছার গ্রিন ভিউ। মঙ্গলবার সমকাল জানাইয়াছে, স্থানীয় পাঁচ যুবক এই অবৈধ কোম্পানির নামে অনেকের ন্যায় কৃষক আমিরুল ইসলামের নিকট হইতে লক্ষ টাকায় মাসিক এক সহস্র টাকা লভ্যাংশ দিবার প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে পাঁচ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করে। চার-পাঁচ মাস প্রতিশ্রুত লভ্যাংশ দিবার পর যথারীতি একদিন সংগৃহীত তিন-চার কোটি টাকা লইয়া এই পঞ্চযুবা নিরুদ্দেশ হইয়া যায়। আমিরুলের ভোগান্তির এইখানেই শেষ নহে। স্থানীয় এক সালিশে ওই যুবকদের একজনের বাবা ক্ষতিপূরণ হিসাবে পাওনা টাকা ফেরত না পাওয়া অবধি আমিরুলকে তাঁহার জমি চাষাবাদ করিতে দিতে সম্মত হন। কিন্তু সম্প্রতি ওই ব্যক্তি আমিরুলের বিরুদ্ধে জমি জবরদখলের মামলা দিয়াছেন। ফলে আমিরুলের অবস্থা দাঁড়াইয়াছে– ‘ভিক্ষা চাহি না মাতা, কুত্তা সংবরণ করো।’

আশার বিষয়, প্রতিবেদনমতে ইতোমধ্যে পুলিশের তদন্তে গ্রিন ভিউ-এর প্রতারণা এবং আমিরুলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার অসারতা স্পষ্ট হইয়াছে। আমাদের প্রত্যাশা, আমিরুল এই ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার পাইবেন। তবে আর কোনো আমিরুল যেন এহেন প্রতারণার শিকার না হন, তজ্জন্য ২০১৩ সালের এমএলএম-বিষয়ক আইনসহ প্রাসঙ্গিক সকল আইনের কার্যকর প্রয়োগের মাধ্যমে হায় হায় কোম্পানির তৎপরতা চিরতরে বন্ধ করিতে হইবে।

আরও পড়ুন